শখের গাড়ি পুরনো হয়ে গিয়ে বেমানান লাগছে? নতুনের মতো রাখতে এই 5 টিপস মেনে চলুন

অনেক সময়ই দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ব্যবহার করা গাড়িটিও আমাদের অজান্তেই পরিবারের একজন সদস্য হয়ে ওঠে। তাই সময়ের সঙ্গে আধুনিক বৈশিষ্ট্যের কমতি এই গাড়িগুলির মধ্যে…

অনেক সময়ই দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ব্যবহার করা গাড়িটিও আমাদের অজান্তেই পরিবারের একজন সদস্য হয়ে ওঠে। তাই সময়ের সঙ্গে আধুনিক বৈশিষ্ট্যের কমতি এই গাড়িগুলির মধ্যে নজর এলেও তা বদলাতে অনেকেরই মন চায় না। কলকাতার হলুদ ট্যাক্সির মত পুরনো দিনের গাড়িগুলি আজও অসংখ্য ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে বিভিন্ন বাড়ির গ্যারেজে। তবে কি এই জাতীয় পুরনো গাড়ি চালানোর অযোগ্য? কখনোই নয়। বরং বেশ কিছু দিক খেয়াল রাখলেই আপনার এই বুড়ো ঘোড়া আজকালকার দিনের চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে হেসে খেলেই টক্কর দেবে।

ব্রেকিং সিস্টেম সঠিক রাখা

যেকোনো গাড়ি-ঘোড়ার ক্ষেত্রেই ব্রেকিং সিস্টেম সঠিকভাবে কার্যকর হওয়া প্রথম শর্ত। নতুন মডেল গুলির ক্ষেত্রে এই ব্রেকিং সিস্টেমকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর যাচাই করা প্রয়োজনীয় হলেও পুরনো মডেলগুলির ক্ষেত্রে এটি অনেক বেশি দরকার। ব্রেকিং প্যাডগুলি যদি দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে পাতলা হয়ে যায় তবে তা অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। এমনকি ব্রেক-ফ্লুইডের ঘাটতি হলেও তা বদল করা প্রয়োজন। মনে রাখবেন কোনো কারণে ব্রেক ফ্লুইডের লিক হওয়ার ঘটনা ঘটলে তৎক্ষণাৎ যথাযোগ্য ব্যবস্থা নিতে হবে।

নিয়মিত টায়ারের পরীক্ষা

গাড়ির পা হিসেবে ব্যবহৃত এই চাকা এবং টায়ার আমাদের সবচেয়ে বেশি উপেক্ষার শিকার। অনেক গাড়ির মালিক জানেন না যে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর পুরনো টায়ার বদলে ফেলা উচিত। এমনকি টায়ার প্রেসার সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেই অনেকেরই। অবশ্যই মনে রাখবেন গাড়ির ম্যানুয়াল বইতে উল্লিখিত টায়ার প্রেসার প্রতি মুহূর্তে চাকায় থাকা একান্ত প্রয়োজন নয়তো বিভিন্ন রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে আপনাকে। এছাড়াও দীর্ঘ বছর ব্যবহারের ফলে যখন টায়ারের বাইরের অংশের খাজকাটা অংশগুলি সমান হয়ে যায় তখন যত দ্রুত সম্ভব সেগুলি বদলে ফেলা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে অবশ্যই নামি কোম্পানির টায়ার ব্যবহার করবেন। সাধারণ দোকানে মেলা সস্তার টায়ারগুলি এড়িয়ে চলাই ভালো।

স্টিয়ারিং সিস্টেমের যত্ন নেওয়া

গাড়িকে এদিক-ওদিক সহজে ঘোরানোর জন্য স্টিয়ারিং হুইলের ব্যবহার কতটা প্রয়োজন তা নিশ্চয়ই প্রত্যেকেই জানেন। কিন্তু দীর্ঘদিনের ব্যবহারের ফলে স্টিয়ারিং হুইলের ভেতরে থাকা তৈলাক্ত পদার্থ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে এই স্টিয়ারিং হুইল ঘোরাতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। এমনকি এর ফলে গাড়ির চাকার উপরেও যথেষ্ট চাপ উৎপন্ন হয়, যা আদতে ক্ষতিকারক। সেই কারণে নির্দিষ্ট সময় অন্তর দক্ষ ব্যক্তির দ্বারা স্টিয়ারিং হুইলের অবস্থা এবং গাড়ির সাসপেনশন গুলির যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।

উইন্ডশিল্ড ওয়াইপার

সামনের দৃশ্যকে পরিষ্কারভাবে দেখতে হলে গাড়ির উইন্ডশিল্ডকে প্রতিমুহূর্তে পরিষ্কার রাখা আবশ্যক। বেশিরভাগ গাড়ি দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে এই দৃশ্যজনিত সমস্যাই প্রধান কারণ হিসাবে উঠে আসে। প্রবল বৃষ্টির সময় এই কাঁচগুলি অতি সহজেই ঝাপসা হয়ে ওঠে। সেই সময় একটি সঠিক উইন্ডশিল্ড ওয়াইপার লাগানো থাকলে তা অনেকটাই সমস্যার সমাধান করে ফেলতে পারে। অনেকদিন ধরে ব্যবহার করার ফলে এই ওয়াইপারের ব্লেড গুলি ক্ষয় পেয়ে যায়, যা অতি সহজেই বদল করা সম্ভব। বিষয়টি বড্ড ছোট হলেও এদিকে নজর রাখা প্রয়োজন।

ফুয়েল লাইন পরীক্ষা করা

বহুদিন ধরে ব্যবহার করা পুরনো গাড়িগুলির ফুয়েল ট্যাংকের সঙ্গে লাগানো পাইপটি নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে সেই পাইপ থেকে তেল চুয়ে পড়ে আগুন লাগার মতো ঘটনা সৃষ্টি করতে পারে। তাই যত দ্রুত সম্ভব ফুয়েল লাইনের এই পাইপগুলি সারিয়ে ফেলা উচিত। এমনকি নির্দিষ্ট সময় অন্তর জ্বালানির ফিল্টারটিকে পাল্টে ফেলা প্রয়োজন।