কাঠফাটা রোদে সাইকেল চালালে হতে পারে শরীরের ক্ষতি, সুস্থ থাকতে মেনে চলুন এই 5 টিপস

যারা সাইকেল চালাতে ভালবাসেন তাদের সাইকেল চালানোর আদর্শ সময় হলো শুষ্ক আবহাওয়া। সেই কারণেই গরমের দিনগুলিতে নিজের সাইকেল নিয়ে পাড়ি দিতে চান অনেকেই। তবে এই…

যারা সাইকেল চালাতে ভালবাসেন তাদের সাইকেল চালানোর আদর্শ সময় হলো শুষ্ক আবহাওয়া। সেই কারণেই গরমের দিনগুলিতে নিজের সাইকেল নিয়ে পাড়ি দিতে চান অনেকেই। তবে এই প্রচন্ড তাপপ্রবাহের মধ্যে সাইকেল চালানোর কষ্ট করা সত্ত্বেও নিজেকে সুস্থ এবং তরতাজা রাখা বেশ কষ্টসাধ্য কাজ। এছাড়াও সূর্যের প্রখর তাপের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ ঘর্মাপ্ত অবস্থায় থাকলে শরীরের প্রয়োজনীয় জলের ঘাটতি হয়ে ডিহাইড্রেশন হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি করে। পাকা সাইক্লিস্টরা এই সমস্যাগুলি প্রতিহত করতে সিদ্ধহস্ত হলেও নতুনদের কাছে এগুলি বেশ গুরুতর। তাই আর সময় নষ্ট করে চলুন দেখে নেওয়া যাক গ্রীষ্মকালের গরমের মধ্যেও কিভাবে শরীর সুস্থ রেখে অনায়াসে সাইকেল নিয়ে ঘুরতে পারবেন আপনি তারই কিছু টিপস।

পর্যাপ্ত তরল পান করা

একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির শরীরে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবে জলের উপস্থিতি থাকে। যখন অত্যন্ত উত্তপ্ত আবহাওয়াতে আমাদের যেতে হয় তখন শরীরের বাইরের অংশে তৈরি হওয়া প্রবল তাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমাদের শরীর স্বয়ংক্রিয়ভাবে জল বিন্দু ত্বকের উপর ছাড়তে শুরু করে। এর ফলেই অতিরিক্ত গরমের দিনে আমরা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই বেশি পরিমাণে ঘর্মাক্ত অবস্থায় থাকি। ত্বকের উপরিভাগে জমা এই ঘাম বাষ্পীভূত হয়ে শরীরকে ঠান্ডা করলেও এর ফলে শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দেয়। দীর্ঘক্ষণ এমন অবস্থায় থাকলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই অবশ্যই পর্যাপ্ত জল পান করে নিজেদের হাইড্রেটেড রাখা একান্ত কর্তব্য। অধিক ঘাম হলে প্রয়োজনে ওআরএস মেশানো জল খাওয়া বাঞ্ছনীয়। তাই সাইকেল নিয়ে বেরোনোর সময় সঙ্গে জলের বোতল রাখতে ভুলবেন না।

সঠিক পোশাক বাছাই

অত্যাধিক গরমের মধ্যে সাইকেল চালাতে হলে অবশ্যই প্রয়োজন এমন পোশাকের যার মধ্য দিয়ে অতি সহজেই হাওয়া চলাচল করতে পারে। এই কারণেই মেশ যুক্ত জামা কাপড় পড়া উচিত। এর ফলে সাইকেল চালানোর সময় পরিবেশের ঠান্ডা হাওয়া শরীরের মধ্যে ঢুকে যথেষ্ট আরাম প্রদান করতে পারে। তাছাড়াও অতিরিক্ত ঘেমে গেলে এই জাতীয় জামাকাপড় থেকে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম। হালকা রঙের পোশাক বাছাই করার চেষ্টা করবেন। কালো কিংবা গাঢ় নীল এমন পোশাক এড়িয়ে চলাই শ্রেয়, এগুলি আদতে তাপ শোষকের ভূমিকায় দেখা যায়।

রাস্তার দিকে খেয়াল রাখা

বর্ষায় প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যে যেমন রাস্তার দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন তেমনটা গরমের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। সূর্যের প্রখর তাপে বিভিন্ন জায়গাতেই রাস্তার পিচ খারাপ হয়ে তা পিচ্ছিল অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে। এমন স্থানের উপর দিয়ে সাইকেলের চাকা গেলে দুর্ঘটনার পরিস্থিতি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এমনকি চাকার টায়ারটিও নষ্ট হতে পারে। তাই প্রতি মুহূর্তে রাস্তার দিকে খেয়াল রাখা আবশ্যক।

মাঝে মাঝে বিশ্রাম নেওয়া

একটানা খানিকক্ষণ চালানোর পর অবশ্যই পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিয়ে নিজের শরীরকে ঠান্ডা করবেন। এক্ষেত্রে একটি বিষয় মাথায় রাখা উচিত শরীর ঠান্ডা করার জন্য বরফের ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। বরফের অতিরিক্ত ঠান্ডায় শরীরের শিরা ও ধমনীগুলি খানিকটা সংকুচিত হয়ে পড়ে। এর ফলে শরীরের ভেতরের তাপমাত্রা অজান্তেই বাড়তে শুরু করে। তাই সেই সময় এই উত্তপ্ত রক্ত ক্রমশ সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে শরীরের স্বাভাবিক ছন্দপতন ঘটায়। সেই জন্যই বিশ্রাম নেওয়ার সময় মুখে, হাতে, পায়ে বিভিন্ন জায়গায় ভিজা কাপড় কিংবা চোখে মুখে ঠান্ডা জলের ঝাপটা দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।

ভোরবেলা সাইকেল চালানো

ভারতবর্ষের মতো গ্রীষ্ম প্রধান দেশে প্রবল গরমের মধ্যে সাইকেল চালানোর জন্য ভোরবেলার নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া আদর্শ। তাছাড়াও চাইলে সূর্য ডোবার পর গোধূলি লগ্নেও সাইকেল নিয়ে বেরোতে পারেন আপনি। এই সময়গুলিতে পরিবেশের তাপমাত্রা সারাদিনের তুলনায় যথেষ্ট কম থাকে বলে তা শরীরের জন্য উত্তম। তবে সন্ধ্যেবেলায় সাইকেল চালাতে হলে অবশ্যই সাথে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখবেন।