অবিশ্বাস্য! সর্বকনিষ্ঠ জ্যোতির্বিজ্ঞানী হিসেবে সাত-সাতটি গ্রহাণু আবিষ্কার করে তাক লাগালো সাত বছরের খুদে

যে-কোনো ধরনের নতুন জিনিস আবিষ্কার করাই একটি বড়ো রকমের কৃতিত্বের ব্যাপার, এবং সেই আবিষ্কার যদি মহাকাশ জগৎ-কেন্দ্রিক কোনো বিষয় হয়, তাহলে উৎসাহ ও আকর্ষণের মাত্রা আরও বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। যখনই কোনো নতুন গ্রহাণু আবিষ্কৃত হয়, তখন খুব স্বাভাবিকভাবেই সেই খবর পৃথিবীর সর্বত্র আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে এবং যে ব্যক্তি সেগুলি আবিষ্কার করেন, তিনি রাতারাতি সেলিব্রিটি হয়ে ওঠেন। সাধারণত কোনো গ্রহাণু আবিষ্কারকের চেহারা কল্পনা করলে আমাদের চোখের সামনে আইনস্টাইনের মতো কোনো মহান বিজ্ঞানীর অবয়ব আসে, অর্থাৎ আমরা মনে করি যে তিনি একটু বয়স্ক হবেন, চোখে মোটা চশমা থাকবে, বড়ো কোনো সংস্থার বিজ্ঞানী হবেন, লম্বা সাদা কোট পড়বেন, ইত্যাদি আরও অনেক কিছু।

কিন্তু আপনাকে যদি বলা হয় যে একটি ৭ বছরের বাচ্চা মেয়ে গ্রহাণু আবিষ্কার করেছে, তাহলে নিঃসন্দেহে আপনি অবাক তো হবেনই; এবং তার সাথে যদি আরও বলা হয় যে একটা নয়, দুটো নয়, একেবারে সাত-সাতটা গ্রহাণু সে আবিষ্কার করেছে, তাহলে তো আপনার চোখ কপালে ওঠাই স্বাভাবিক! হ্যাঁ, অসম্ভব মনে হলেও সম্প্রতি এরকমই এক ঘটনা ঘটেছে। সর্বকনিষ্ঠ জ্যোতির্বিজ্ঞানী হিসেবে ব্রাজিলের ৭ বছরের নিকোল অলিভিয়েরা (Nicole Oliviera) ৭টি গ্রহাণু আবিষ্কার করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।

সাধারণত এই বয়সের বাচ্চারা যেখানে স্কুল, খেলাধুলা, এবং ঘরোয়া গৃহজীবন নিয়েই মেতে থাকে, সেখানে ব্রাজিলের এই ছোট্ট মেয়েটি International Astronomical Search Collaboration কর্তৃক আয়োজিত ‘Asteroid Hunt’ নামক একটি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করে ৭টি গ্রহাণু খুঁজে পেতে সক্ষম হয়েছে। এক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, মহাকাশকেন্দ্রিক আবিষ্কারের রথের রশি যে সংস্থার হাতে সেই Nasa-ও ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সার্চ কোলাবরেশনের এক মেম্বার। নাসার মতে, “গ্রহাণুগুলি প্রায় ৪.৬ বিলিয়ন বছর আগে সৌরজগৎ গঠনের সময়কালে উৎপন্ন অবশিষ্ট পাথরের টুকরোবিশেষ। বেশিরভাগ গ্রহাণু মঙ্গল ও বৃহস্পতির মধ্যবর্তী একটি বেল্টে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে।” এই প্রোগ্রামে নিকোল গ্রহাণু আবিষ্কার এবং তার প্রচেষ্টার জন্য একটি প্রশংসাসূচক শংসাপত্র পেয়েছে।

এতো কম বয়সে জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রতি তার তীব্র ভালোবাসাই নিকোলকে এই অসামান্য কৃতিত্বের অধিকারী করেছে। এবং এর সুবাদে নিকোলকে বিভিন্ন স্কুলে বক্তৃতাও দিতে হয়েছে। শুধু তাই নয়, ব্রাজিলের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন মন্ত্রণালয়ও তাকে জ্যোতির্বিজ্ঞান ও বৈমানিক বিষয়ক প্রথম আন্তর্জাতিক সেমিনারে (International Seminar on Astronomy and Aeronautics) বক্তব্য রাখার সুযোগ করে দিয়েছে। এছাড়া, নিকোলের একটি YouTube চ্যানেলও রয়েছে যেখানে সে জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে কথা বলে। সুতরাং, আপনি যদি এই খুদে বিজ্ঞানীর কথা শুনতে চান তাহলে চ্যানেলটিতে চোখ রাখতে পারেন। শুধু নিকোল নয়, ওই চ্যানেলে জ্যোতির্বিজ্ঞান প্রসঙ্গে অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের বক্তব্য নিয়েও ভিডিও রয়েছে।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন