Meet Man Old Bullet Restores

ভাঙাচোরা বাইক ঝকঝকে নতুন হয়ে যায়, দেশী ডাক্তারের হাতের জাদুতে মজেছে আমেরিকাও

ভারতবর্ষ তথা সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে রয়েছে রয়্যাল এনফিল্ড (Royal Enfield) এর বিপুল সংখ্যক ভক্ত। এই বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন বাইক নির্মাতা হিসেবে আজও সমান দক্ষতায় মোটরসাইকেল বানিয়ে চলেছে এই সংস্থা। মূলত রেট্রো স্টাইলের দুই চাকা গাডি তৈরি করেই এই বিপুল সুনাম অর্জন করেছে তারা। বুলেট এবং ক্লাসিক সিরিজের পাশাপাশি বর্তমানে বেশ কিছু আধুনিক ডিজাইনের মডেল বর্তমানে রয়েছে তাদের পোর্টফোলিওতে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বদলেছে ইঞ্জিন এবং ডিজাইন। পুরনো দিনের বুলেটের জায়গায় আজ এসেছে Hunter কিংবা Meteor এর মতো মডেশ। তবে এদেশের বহু মানুষ আজও সংস্থার তৈরি পুরনো বুলেটকেই সযত্নে রেখে দিয়েছেন নিজের কাছে। সম্প্রতি পাঞ্জাবের একটি ওয়ার্কশপে পুরানো বুলেটের রিস্টোরেশন এর কাজের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

এদেশের উত্তর-পশ্চিমের রাজ্য পাঞ্জাব বরাবরই পুরানো দিনের বুলেট এবং জিপ গাড়িকে এক আলাদা মর্যাদার আসনে বসিয়েছে। এক ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করা ভিডিওতে দেখা গিয়েছে সাজোয়াল এনফিল্ড ওয়ার্কস নামে পাঞ্জাবের জলন্ধরে অবস্থিত এক ওয়ার্কশপে বহু পুরনো বুলেট বাইকের নয়া রূপদানের কাজ। ভিডিওটিতে সংস্থার তৈরি দুটি ভিন্টেজ মোটরসাইকেল নেওয়া হয়েছে। এবং সেগুলিকেই আধুনিক চেহারা দেওয়ার কাজ দেখানো হয়েছে এতে।

এই দুটি বাইক একসময় ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ব্যবহার করা হয়েছে। ভিডিওর সঞ্চালক এই ওয়ার্কশপের মালিককে প্রশ্ন করায় তিনি আজকের দিনে দাঁড়িয়েও সাধারণ মানুষের মধ্যে পুরনো জেনারেশনের বুলেট নিয়ে উন্মাদনার কারণ সবিস্তারে ব্যাখ্যা করেন। তার কথায় বর্তমান সংস্করণের মডেলগুলি পুরাতনের মতো ভারী নয় এবং এগুলোর গঠনশৈলী পূর্বের মতো শক্ত পোক্ত বলে অনুভূত হয় না। উপরন্তু রয়্যাল এনফিল্ড এর আগের বাইকগুলিতে যে গুরুগম্ভীর এগজস্ট সাউন্ড উৎপন্ন হতো তা আজকের দিনে কল্পনাতীত।

ওয়ার্কশপের মালিক জানিয়েছেন তিনি একটি সময় চেন্নাইতে অবস্থিত রয়্যাল এনফিল্ডের কারখানায় প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। তার দাবি অনুযায়ী এই ওয়ার্কশপে প্রতিটি বাইককে সম্পূর্ণভাবে খুলে ফেলে সব কটি অংশকে আলাদা ভাবে নতুন চেহারা দেওয়ার কাজ করা হয়। এর ফলে সমগ্র কাজ সম্পূর্ণ হতে খানিকটা অতিরিক্ত সময় লাগে কিন্তু তা আদতে দিনের শেষে ভালো ফলাফল পেতে সাহায্য করে। প্রতিটি প্যানেলকে সযত্নে রং করে তাকে নতুন বাইকের চেহারা দেওয়া হয়।

তিনি যোগ করেন, ভারতীয় সেনাবাহিনীর ব্যবহৃত এই বাইকগুলির ধাতব অংশগুলিকে রিস্টোর করার কাজ খানিকটা সহজ হলেও পরবর্তীকালের তৈরি মডেলগুলির এই ধাতব অংশগুলি রিস্টোর করা কোন কোন ক্ষেত্রে অসম্ভব হয়ে পড়ায় তা পরিবর্তন করতে হয়। ভিডিওতে বেশ কিছু বাইকের রিস্টোরেশনের ছবি দেখা গিয়েছে এবং সেগুলির টেস্টিং এর কাজ চলছে।

রয়্যাল এনফিল্ড বুলেটের এই কাস্টমাইজেশন এর কাজের খরচ গ্রাহকদের পছন্দের উপর নির্ভরশীল। মোটামুটি ভাবে প্রারম্ভিক খরচ শুরু হচ্ছে ১.৫ লাখ টাকা থেকে। এক ঝলকে এই দাম শুনলে অনেকেই হয়তো সংস্থার নতুন মডেলের তুলনায় তা বেশি বলে মনে করবেন। কিন্তু যে সকল বুলেটপ্রেমী এই পুরাতন মডেলের মাহাত্ম্য জানেন, তাদের কাছে এই মুল্য কিছুই নয়।

প্রায় ২৫টির মতো বুলেটকে নতুনভাবে সাজিয়ে বিদেশে পাঠানো হয়েছে বলে জানানো হয়েছে এই ভিডিওতে। তাছাড়াও বর্তমানে যে কয়টি মডেল রিস্টোর করা হচ্ছে বলে দেখানো হয়েছে সেগুলি আগামীতে পাড়ি দেবে কানাডা, আমেরিকা এবং ইতালিতে। তবে একথা সত্যিই যে প্রতিটি বাইকের শেষ মুহূর্তের চেহারা সম্পূর্ণ রয়্যাল এনফিল্ডের শোরুম থেকে বের করা নতুন বাইকের মতই।