বাইক চলতে চলতে আচমকা ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে? অপেক্ষা না করে প্রতিকার জেনে রাখুন

বাইক চালাতে চালাতে আচমকা ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনা বেশ অস্বস্তিকর। অনেক সময় নানারকম অসুবিধাজনক পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারে বাইক আরোহী। পাহাড়ের খাড়া রাস্তায় ওঠার…

বাইক চালাতে চালাতে আচমকা ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনা বেশ অস্বস্তিকর। অনেক সময় নানারকম অসুবিধাজনক পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারে বাইক আরোহী। পাহাড়ের খাড়া রাস্তায় ওঠার সময় কিংবা যানযটপূর্ণ রাস্তার আচমকা বাইকের গতি স্তব্ধ হয়ে গেলে দুর্ঘটনার মুখোমুখি হতে পারেন চালক। তাহলে সমাধান কী? চলুন জেনে নেওয়া যাক।

বাইক চালানোর সঠিক পদ্ধতি-

প্রথমে মনে রাখতে হবে মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনকে সঠিকভাবে চালাতে হলে বাঁ হাতের ক্লাচের সঙ্গে ডানহাতের এক্সিলারেটর এবং এই দুইয়ের সঙ্গে বাঁ পায়ে থাকা গিয়ার শিফ্টার প্যাডেল এবং ডান পায়ে থাকা ব্রেকের লিভার এই সব কিছুর মধ্যে সঠিকভাবে সমন্বয় সাধন করতে হবে। শুরুতেই ইঞ্জিন নিউট্রাল পজিশনে থাকা অবস্থায় চালু করার পরেই দুই হাত শক্ত অবস্থায় রেখে বাঁ হাতের ক্লাচ চেপে ধরতে হবে। এরপরেই বাঁ পায়ের সাহায্যে প্রথম গিয়ার চালু করুন। ডান পা কিন্তু থাকবে ব্রেক লিভারের উপরেই। এরপর ডান হাতের এক্সিলারেটর সামান্য ছেড়ে বাঁ হাতের ক্লাচ ধীরে ধীরে ছাড়ুন। এই সময় দেখবেন আপনার বাইক সামনের দিকে এগানোর চেষ্টা করছে। ধীরে ধীরে গতি বাড়িয়ে ক্লাচ পুরোপুরি ছেড়ে দিলেই বাইক সামনের দিকে এগোতে শুরু করবে।

পাহাড়ে বাইক চালানোর নিয়ম

সমতল রাস্তার পাশাপাশি পাহাড়ের উঁচু-নিচু রাস্তার বিভিন্ন বাঁকে বাইক চালানোর মজা যে ব্যক্তি পেয়েছেন তিনিই জানেন এর মহিমা। তবে খাড়াই পথে বাইক চালানোর সময় আচমকা ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেলে কিন্তু বেশ বেকায়দায় পড়তে হতে পারে আপনাকে। এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সঙ্গে সঙ্গে পায়ের এবং হাতের ব্রেক সহযোগে বাইকটিকে স্থির করুন। উপরের পদ্ধতি অনুসরণ করার সাথেই এক্ষেত্রে বাইকের ইঞ্জিনের পাওয়ার এবং কন্ট্রোলের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখার প্রয়োজন রয়েছে। যেহেতু রাস্তা উপরের দিকে উঠেছে তাই এক্সিলারেটরে একটু বেশি চাপ দিয়েই বাইক উপরের দিকে উঠাতে হবে।

সঠিক গতি নির্ধারণ

মোটরবাইক চালানো শেখা শুরুর পর বিভিন্ন সময় বাইক চালাতে চালাতে তা আচমকাই বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এটি আদতে ক্লাচের সঙ্গে এক্সিলারেটরের সঠিক কম্বিনেশন না হওয়ার ফলশ্রুতি। সেই কারণেই শুরুর দিকে এই ক্লাচ, গিয়ার, এক্সিলারেটর, ব্রেক এই সবগুলির মধ্যে সমন্বয় সাধন করার বিষয়টি অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। তার সাথেই এই সময় মাত্রাতিরিক্ত অল্প গতিতে বাইক চালানো থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়। এর ফলে ইঞ্জিনে অতিরিক্ত ঝাঁকুনি অনুভূত হবে। গতিবেগ নিয়ন্ত্রণে রেখেই প্রতিটি গিয়ারের সঙ্গে সঠিক গতি বজায় রাখতে পারলেই কেল্লাফতে।

ক্লাচের কন্ট্রোল

বাইক চালানো অবস্থায় ব্রেক করে কোথাও থামতে হলে কিভাবে ক্লাচ ধরে রাখলে ইঞ্জিন চালু অবস্থায় থাকবে সেটি জানাও একান্ত প্রয়োজন। যখনই বাইক থামাতে হবে তখন বাঁ হাতের ক্লাচ সম্পূর্ণ চেপে পিছনের চাকার সঙ্গে ইঞ্জিনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখতে হবে। এতে দেখবেন ইঞ্জিন সঠিকভাবেই চালু অবস্থায় রয়েছে। এর পাশাপাশি বাইক চালু অবস্থায় গিয়ার পরিবর্তন করার সময় প্রতিবার সঠিকভাবে ক্লাচ চাপতে হবে। কিছুদিন অভ্যাস করলেই এই বিষয়গুলি অতি সহজেই রপ্ত হবে আপনার কাছে।

অ্যান্টি স্টল ডিভাইস

আজকালকার দিনে নানা দামি এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বাইকে অ্যান্টি স্টল ডিভাইস লাগানো অবস্থায় থাকে। যা আদতে ইঞ্জিনের সর্বনিম্ন আরপিএম স্থির রেখে ইঞ্জিনকে চালু অবস্থায় রাখতে সাহায্য করে। অনভিজ্ঞ রাইডারদের জন্য এটি বেশ কাজের। বলা যেতে পারে ইঞ্জিনকে চালু রাখতে এটি একটি অতিরিক্ত সুরক্ষা কবচ। উদাহরণস্বরুপ টিভিএস অ্যাপাচি সহ বেশ কিছু বাইকে এই প্রযুক্তি উপলব্ধ রয়েছে, যার পোশাকি নাম- গ্লাইড থ্রু টেকনোলজি। তাই এমন প্রযুক্তি যদি আপনার একান্তই প্রয়োজন হয় তবে যে যে মডেলে এটি রয়েছে সেগুলি কেনাই বুদ্ধিমানের কাজ।