Jack Dorsey: ইলন মাস্ক অধিগ্রহণ করার আগেই বোর্ড থেকে ইস্তফা দিলেন টুইটারের সহ প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডরসি

ইলন মাস্ক (Elon Musk), Twitter (টুইটার)-এর মালিক হওয়ার আগে পরে বিষয়টি নিয়ে যে কী বিস্তর চর্চা চলছিল – তা মোটামুটি সকলেরই জানা। তবে প্ল্যাটফর্মটির মালিকানা বদলের একমাস পর আবারও এটিকে কেন্দ্র করে এক জোরদার খবর সামনে এল। আসলে সম্প্রতি Twitter বোর্ড থেকে পদত্যাগ করেছেন সংস্থার প্রাক্তন সিইও জ্যাক ডরসি (Jack Dorsey)। এর আগে মাইক্রোব্লগিং সাইটটির সিইও হিসেবে পুনরায় তাঁর যোগদানের গুজব শোনা গিয়েছিল, তবে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ডরসি এবার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন যে তিনি আর কখনও কোম্পানির সিইও পদে ফিরে আসবেন না। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, গত মাসেই ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৩,৬৭২ কোটি টাকা) বিনিময়ে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটি কিনে নেন Tesla (টেসলা)-র কর্ণধার ইলন মাস্ক, যে খবরে গোটা বিশ্বে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। তবে সম্প্রতি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট বিতর্কে মাস্কের টুইটার অধিগ্রহণ এখনও ঝুলে রয়েছে। এরই মাঝে টুইটারের পরিচালনা পর্ষদ (Twitter’s Board Of Directors) থেকে জ্যাক ডরসির পদত্যাগের খবরে পুনরায় সরগরম টেক দুনিয়া।

যদিও টুইটার বোর্ড থেকে ডরসির পদত্যাগ করাটা অবাক হওয়ার মতো কোনো খবর নয়, কারণ গত বছর সিইও পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরই তাঁর বোর্ড থেকে সরে আসাটাও নিশ্চিত ছিল। কারণ সেই সময়ই কোম্পানির তরফে জানানো হয়েছিল যে, ২০২২-এ স্টকহোল্ডারদের মিটিংয়ে তার মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি টুইটার বোর্ডের সদস্য থাকবেন। অবশেষে সেই সময় এসে যাওয়ায়, ১৬ বছর ধরে কাজ করার পর নিজেকে টুইটার থেকে একেবারেই সরিয়ে নিলেন জ্যাক ডরসি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ডরসি ২০২১ সালের নভেম্বরে টুইটারের সিইও পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। যদিও তিনি কোম্পানি ছেড়ে যাওয়ার পিছনে সঠিক কারণটি কোনোদিনই প্রকাশ করেননি। তবে ইলন মাস্ক টুইটার কেনার পর বহুবার তার সিইও পদে আবারও যোগদানের গুজব শোনা যাচ্ছিল, কিন্তু ডরসি সবার সব আশায় জল ঢেলে দিয়েছেন। এবং সেইসাথে তিনি একথাও উল্লেখ করেছেন যে, কারোরই টুইটারের সিইও হওয়া উচিত নয়। বলে রাখি, ডরসি বর্তমানে একটি ফিন্যান্সিয়াল পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম ব্লককে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যা পূর্বে স্কোয়ার (Square) নামে পরিচিত ছিল।

এদিকে টুইটারের সিইও পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর ডরসির স্থলাভিষিক্ত হন ভারতীয় বংশোদ্ভূত পরাগ আগরওয়াল (Parag Agrawal), যিনি আগে কোম্পানির সিটিও ছিলেন। আইআইটি বম্বের প্রাক্তন ছাত্র আগরওয়াল এটিঅ্যান্ডটি (AT&T), ইয়াহু (Yahoo), এবং মাইক্রোসফট (Microsoft)-এ অল্প সময়ের জন্য কাজ করার পরে ১১ বছর আগে টুইটারে যোগ দিয়েছিলেন এবং ২০১৭ সালে তিনি কোম্পানির সিটিও হন। সেক্ষেত্রে ডরসি তার ইমেইলে নিজের পদত্যাগের খবরের পাশাপাশি আগরওয়ালের ভূয়সী প্রশংসাও করেছেন। ফলে তিনি সরে গেলেও সংস্থার দায়িত্বভার যে সঠিক লোকের কাঁধে গিয়েই পড়েছে, তা ডরসির বক্তব্যে স্পষ্টভাবে বোঝা যায়।

তবে নানান ঝামেলায় টুইটারের ভবিষ্যৎ যে এখন কিঞ্চিৎ অনিশ্চিত, সেকথা বলাই বাহুল্য। কারণ একাধিক জল্পনা-কল্পনা এবং প্রচুর জলঘোলার পর গত মাসে ইলন মাস্ক টুইটার কিনে নিলেও সেটি সম্পূর্ণভাবে অধিগ্রহণের পথে রয়েছে বড়সড় বাধা। গত ১৭ মে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ঘোষণা করেছেন যে, জনপ্রিয় এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটিতে কত সংখ্যক ভুয়ো/স্প্যাম অ্যাকাউন্ট আছে, তা যাচাই করে যথাযথ নথি না পাওয়া পর্যন্ত তিনি টুইটার কেনার চুক্তিটি স্থগিত রাখছেন। সাথে তিনি একথাও বলেছেন যে, যতক্ষণ না টুইটারে ৫ শতাংশেরও কম ভুয়ো অ্যাকাউন্ট থাকার যথাযথ প্রমাণ মিলবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি এই প্ল্যাটফর্মটি অধিগ্রহণ করতে রাজি নন। তাই আগামী দিনে টুইটারের কপালে যে ঠিক কী লেখা রয়েছে, তা একমাত্র সময়ই বলতে পারবে…