সামাজিক মাধ্যমে সরকারের সমালোচনা আজ নৈমিত্তিক ব্যাপার। দেশ ও সমাজ পরিচালনায় সরকারের ত্রুটির বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে নাগরিকেরা বর্তমানে ফেসবুক (Facebook), টুইটারের (Twitter) মতো মঞ্চগুলিকে বেছে নিচ্ছেন। সেখানে একের পর এক উঠে আসছে বিরোধিতার ঢেউ। সরকারি প্রতিনিধিদের ‘কুকীর্তি’ এবং ‘অপদার্থতা’কে কেন্দ্র করে অজস্র মিম তৈরী হচ্ছে। আর এসব কিছুর ফলে চাপে পড়ছে সরকার। অনেকক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে মানুষের স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার খর্ব করার অভিযোগ উঠছে। যদিও এভাবে মানুষের অধিকার হরণের কোন পরিকল্পনা তাদের নেই বলে ভারতের বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার স্পষ্ট করে দিয়েছে। প্রকাশ্য সমালোচনা রুখতে গিয়ে তারা এই মুহূর্তে কোন সামাজিক মাধ্যমের উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে ইচ্ছুক নন বলেও সরকারের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যানের ভাবনা নেই কেন্দ্রের
সংসদে এক প্রশ্নের উত্তরে দেশের বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর নেটিজেনদের আশ্বস্ত করেছেন। ২০০০ সালের ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৯এ (69A) ধারা অনুযায়ী দেশের অখন্ডতা, সার্বভৌমত্ব এবং নিরাপত্তাকে বিপন্ন করতে পারে, এমন কোনো ধরনের ক্ষতিকারক অনলাইন কনটেন্টকে রুখে দেওয়ার ক্ষমতা করায়ত্ত হলেও, সাধারণ মানুষের মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে সেই ক্ষমতা প্রয়োগের কোন ইচ্ছে তাদের নেই বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন। বর্তমানে সরকার কোনো সামাজিক মাধ্যমের উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবছে না বলেই মন্ত্রীর দাবী।
একইসাথে রাজীব চন্দ্রশেখর খুব ইঙ্গিতপূর্ণভাবে তার বক্তব্যের সাথে আরো কিছু কথা জুড়ে দিয়েছেন। তার মন্তব্য, “ভারতীয় গণতন্ত্র সংবিধান এবং সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকারের দৃঢ় ভিত্তির উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। কোন সামাজিক মাধ্যমের পক্ষে এই গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা সম্ভব নয়।”
আসলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘৃণা ছড়ানোর বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে সরকারের প্রতিনিধিরা বারবার দেশের ঐক্যের কথা জনতাকে স্মরণ করিয়ে দেন। অভিযোগ থাকলে তা প্রকাশ করার নির্দিষ্ট পন্থা রয়েছে। সেক্ষেত্রে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য প্রচার ও প্রসার ঠিক নয়। এরকম সমস্ত অপচেষ্টা রুখতে সরকার সদা জাগরূক বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেছেন।
আসলে দেশের স্বার্থে আমাদের বিরুদ্ধতার প্রকাশ যে অনেক সংযত হওয়া উচিত, সরকারি প্রতিনিধিদের মুখে সেকথা বারবার শোনা গিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমগুলোতে নানানভাবে উপদেশ ও পরামর্শ দিয়ে সরকার সেগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখে। আবার এই ঘটনা অনেকের কাছে মতপ্রকাশের অধিকার কেড়ে নেওয়ার সামিল!