Starlink-এর সাথে বিরোধ Reliance-এর, আম্বানিকে চটিয়ে কি মাস্ককে কাজ করতে দেবেন মোদি?

Starlink নিয়ে অখুশি মুকেশ আম্বানি, সরকারি ছাড়পত্র পেয়ে ভারতে কি সত্যিই স্যাটেলাইট পরিষেবা চালু করতে পারবেন ইলন মাস্ক?

ধনকুবের ইলন মাস্ক ভারতে তাঁর Starlink স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করবেন – এমন কথা বিগত দু-বছরে একাধিকবার শোনা গিয়েছে, প্রকাশিত হয়েছে একের পর এক রিপোর্টও। কিন্তু এতদিনেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি, জল্পনা যে তিমিরে সেই তিমিরেই রয়ে গেছে। কিছুদিন আগে Starlink পরিষেবা প্রদানের কাজ শুরু করতে চাইলেও তা ধোপে টেকেনি, বদলে নিয়মের গেরোয় পড়ে তাদের পিছু হঠতে হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাম্প্রতিক আমেরিকা সফরের পর আবারও এই বিষয়টি নিয়ে বিস্তর জলঘোলা শুরু হয়েছে। আসলে এই সফরে শ্রী মোদি, Tesla তথা SpaceX কোম্পানির মালিক ইলন মাস্কের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। আর এই বৈঠকের দরুন প্রধানমন্ত্রী মোদি ভারতে মাস্ককে স্যাটেলাইট ভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করার অনুমতি দেবেন কিনা, তা নিয়ে নতুন করে চর্চা চলছে। অনেকেই এদেশে Starlink-এর উপলভ্যতা সম্পর্কে আশার আলো দেখছেন।

কিন্তু মুশকিল হচ্ছে যে, রিলায়েন্স (Reliance) কর্ণধার মুকেশ আম্বানি এবং তাঁর স্ত্রী নীতা আম্বানিও ওই সময় হোয়াইট হাউসের নৈশভোজে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সন্নিকটে উপস্থিত ছিলেন। এদিকে, ভারতে রিলায়েন্স কোম্পানির প্রভাব-প্রতিপত্তি কীরকম, তা কারোরই অজানা নয়। তাই এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী, মুকেশ আম্বানির চেয়ে ইলন মাস্ককে প্রাধান্য দেবেন কিনা সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে! প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড স্পেকট্রাম নিয়ে মাস্কের স্টারলিঙ্কের বিরোধীতা করেছে আম্বানির কোম্পানি।

স্পেকট্রাম নিয়ে কীসের বিতর্ক?

বিতর্কের উৎস আসলে কেন্দ্র সরকার কর্তৃক স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড স্পেকট্রাম বন্টন বা বরাদ্দের বিষয়টি। এক্ষেত্রে ইলন মাস্ক বলেছেন যে, ভারত সরকার স্পেকট্রাম নিলাম করার পরিবর্তে নির্দিষ্ট সংস্থার হাতে তাদের প্রয়োজনীয় স্পেকট্রাম তুলে দিক। নাহলে এতে করে তাদের মতো কোম্পানিগুলিকে ভৌগোলিক সীমাবদ্ধতার সম্মুখীন হতে হবে; এই কারণে বেশি হবে ইন্টারনেটের দামও। কিন্তু এর সম্পূর্ণ বিপরীতে গিয়ে মুকেশ আম্বানি স্পেকট্রাম নিলামের দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন যে, নিলামে অংশ নিয়ে সব কোম্পানি সমানভাবে প্রতিযোগিতা করুক এবং তারপর কাজ শুরু করুক।

ভারতের টেলিকম এবং ব্রডব্যান্ড সেক্টরে বিগত কয়েক বছর ধরে রাজত্ব চালাচ্ছে রিলায়েন্স জিও (Jio), আর এই জায়গা আগামীদিনেও ধরে রাখতে তারা বদ্ধপরিকর। তাই মুকেশ আম্বানির এই ধরণের মন্তব্যকে প্রতিযোগিতা কমানোর খানিকটা চেষ্টা বললে বোধহয় ভুল হবেনা। কারণ, জিওর দেশীয় বাজারে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী এয়ারটেলও বর্তমানে স্যাটেলাইট পরিষেবা চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রী মোদি যদি নিয়ম শিথিল করে ভারতে কাজ করার জন্য স্টারলিঙ্ককে অনুমতি দেন, তবে জিওর চাপ অবশ্যই বাড়বে। তবে যাইহোক, হাওয়ায় ভাসা খবরের ঠিক কোনটা সত্যি হবে, আর আদৌ মাস্ক ভারতের ইন্টারনেট পরিষেবার সাথে নিজের নাম জুড়বেন কিনা সেটা বলবে সময়ই…