বিপণনের দুনিয়ায় ক্রেতা এবং বিক্রেতার মধ্যে ব্যবধান যত কমতে থাকে, ব্যবসার শ্রীবৃদ্ধি হয় ঠিক ততটাই। এই সহজ অঙ্কের উপরে ভর করেই জনপ্রিয় ই-কমার্স সংস্থা ফ্লিপকার্ট (Flipkart) তার ক্রেতাদের জন্য নতুন ভয়েস সার্চ (Voice Search) ফিচার নিয়ে এসেছে। এই ফিচার ব্যবহার করে ফ্লিপকার্ট থেকে কেনাকাটা হবে আগের থেকেও সহজ। শুধু তাই নয়, তামাম ভারতীয় গ্রাহকের কথা মাথায় রেখে Flipkart আপাতত ইংরেজির পাশাপাশি হিন্দি ভাষাতেও ভয়েস সার্চের সুবিধা এনে দিয়েছে। এর ফলে অপেক্ষাকৃত ছোট শহরগুলির লক্ষ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন বলে সংস্থাটির অভিমত। তবে জনকল্যাণের সাথেই এই নতুন ফিচার যে ফ্লিপকার্টের ব্যবসার গতিকেও অনেকাংশে বাড়িয়ে দেবে, সেই বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।
আসলে ভারতবর্ষে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে প্রায় ৭৫% মানুষ অ-ইংরেজিভাষী। এদের মধ্যে বেশীরভাগই আবার ছোট শহর, মফঃস্বল এবং গ্রামগুলিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন। পরিসংখ্যান বলছে অনলাইন কেনাবেচার সিংহভাগ ক্ষেত্রে দেশের দ্বিতীয় সারির শহরগুলির অবদান রয়েছে। এমনকি ই-রিটেইল প্ল্যাটফর্মগুলিতে প্রতি পাঁচটির মধ্যে তিনটি অর্ডারের জন্য অপেক্ষাকৃত ছোট শহর ও মফঃস্বলের বাসিন্দারা দায়ী, এমন তথ্যও উঠে এসেছে। মূলত এদের কথা ভেবেই Flipkart হিন্দি এবং ইংরেজি ভাষায় ভয়েস সার্চিংয়ের সুবিধা রোল-আউট করা শুরু করেছে। পরবর্তীকালে অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষাতেও ভয়েস সার্চের বিকল্প চালু হতে পারে বলে আমাদের ধারণা।
টেক্সট-সার্চের সাথে ভয়েস সার্চের ফিচার যুক্ত হওয়ায় ফ্লিপকার্ট ক্রেতারা আগের থেকে অনেক দ্রুত নিজেদের কাঙ্ক্ষিত পণ্যটি খুঁজে নিতে পারবেন। তাছাড়া ইন্টারনেট ব্যবহারে যারা অপটু বা এক্ষেত্রে নেহাতই নবাগত তারাও স্রেফ মৌখিক নির্দেশের মাধ্যমেই ফ্লিপকার্টে পছন্দের প্রোডাক্ট খুঁজে পাবেন। পুরো প্রক্রিয়াটিকে সহজ থেকে সহজতর করার জন্য ফ্লিপকার্ট যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে।
উল্লেখ্য, ফ্লিপকার্টের নিজস্ব ইঞ্জিনিয়ারিং দল ও ডেটা সায়েন্স বিভাগের তত্ত্বাবধানে ভয়েস সার্চ ফিচারটি ডেভেলপ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে অটোমেটিক স্পিচ রিকগনিশন, ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ আন্ডারস্ট্যান্ডিং এবং টেক্সট-টু-স্পিচ প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হয়েছে। ইউজার ফ্লিপকার্টে মৌখিক নির্দেশ প্রদান করলে অটোমেটিক স্পিচ রিকগনিশন তার স্বরটিকে শনাক্ত করবে। ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ আন্ডারস্ট্যান্ডিং প্রযুক্তি নির্দেশটিকে যথাযথভাবে অনুধাবনের চেষ্টা করবে। এরপর তা টেক্সটে রূপান্তরিত হবে। এভাবে ফ্লিপকার্টের উন্নত সার্চ ইঞ্জিন এখন আগের থেকেও দ্রুত গতিতে ক্রেতার সামনে উপযুক্ত সার্চ-রেজাল্ট তুলে ধরবে!
ভয়েস সার্চ ফিচারের আগমনে অন্যান্য ই-কমার্স সংস্থাগুলি ফ্লিপকার্টের কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। এর ফলে ফ্লিপকার্টের কেনাবেচা অনেকটাই বাড়তে পারে, যার ফলে সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যবসাবাণিজ্য উপকৃত হবে।