শিশুর হাতে ফোন তুলে দেওয়ার আগে সাবধান হোন, শূন্য হয়ে যেতে পারে ব্যাংক ব্যালান্স

Published on:

টেকনোলজির যুগে স্মার্টফোন এখন হাতে হাতে। উঠতি বয়সের কিশোর-কিশোরীরা এখন সহজেই স্মার্টফোন বা অন্যান্য ডিভাইস হাতের নাগালে পায়। এবং ব্যবহার করাও শিখে নেয়। পড়াশোনার কাজে তো বটেই, এছাড়া গেম খেলা, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং এসবেও তাদের বিপুল উৎসাহ। তাদের এই উৎসাহের সুযোগ নিয়েছিল কিছু স্ক্যাম অ্যাপ নির্মাতা। মূলত অ্যাডওয়ার এই স্ক্যাম অ্যাপগুলি নানারকম এন্টারটেইনমেন্ট, ওয়ালপেপার, মিউজিক অ্যাপ হিসাবে Google Playstore ও Apple App Store-এ এতদিন ছিল। সম্প্রতি গুগল এই অ্যাপগুলিকে সরিয়ে দিয়েছে। SensorTower-এর হিসাব অনুযায়ী, এগুলো প্রায় ২.৪ মিলিয়ন ডাউনলোডও হয়ে গিয়েছিল এবং এই স্ক্যামগুলোর নির্মাতারা ইতিমধ্যেই প্রায় ৪ কোটি টাকাও কামিয়ে ফেলেছিল।

আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই অ্যাপগুলো সোশ্যাল মিডিয়া অর্থাৎ TikTok, Instagram-এর হাজারো প্রোফাইল থেকে প্রোমোট করা হতো। সম্প্রতি চেক প্রজাতন্ত্রের প্রাগ শহরের ছোট্ট একটি মেয়ে এরকম একটি টিকটক প্রোফাইল রিপোর্ট করায় গুগলের সিকিউরিটি রিসার্চাররা এগুলোর সন্ধান পায় এবং এরকম ৭ টি স্ক্যাম অ্যাপ প্লে স্টোর থেকে সরিয়ে ফেলে।

চেক প্রজাতন্ত্রে শিশুদের সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার প্রণালী শেখানোর একটি প্রশিক্ষণ প্রকল্প আছে, তার নাম Avast’s Be Safe Online প্রোজেক্ট। ওই মেয়েটি সেখানেই ওই স্ক্যাম অ্যাপ প্রোমোট করা TikTok প্রোফাইলটার কথা জানায়। Avast প্রশিক্ষণ প্রকল্প থেকে জানানো হয়েছে, “ডাউনলোড করার পরে এই অ্যাপগুলো ফোনের ভিতরে নিজে থেকে লুকিয়ে পড়ে। প্রচুর অ্যাড দেখায় এবং মাঝেমাঝেই ২ থেকে ১০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত চার্জও কাটে। সম্পূর্ণ বিনা কারণে তারা এটা করে। এই অ্যাপগুলো কোনোটা সাধারণ গেম, যেখানে ফোনটা শুধুই ভাইব্রেট হয় মাত্র। কোনোটা ওয়ালপেপার রাখার অ্যাপ, কোনোটা হিডেন অ্যাডস ট্রোজান। এগুলো উপযোগী মনে হলেও আসলে তা নয়। আর ইন্সটল করা মাত্র এই স্ক্যাম অ্যাপগুলো লুকিয়ে যায় বলে ইউজাররা সহজে খুঁজে বের করে আনইন্সটলও করতে পারে না।”

ওই ছোট্ট মেয়েটির কাছে এসবের হদিস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গুগল এই ৭ টি অ্যাপ তাদের প্লে স্টোর থেকে সরিয়ে ফেলে। যদিও Apple App Store এবিষয়ে এখনও পর্যন্ত কিছু জানায়নি।

আরও জানা গেছে, ৫০০০ থেকে শুরু করে লক্ষ লক্ষ ফলোয়ার আছে এমন শিশুমহলে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল (Tiktok, Instagram ইত্যাদি) থেকে এগুলো প্রোমোট করা হতো। এই বিষয়টি নিয়ে Avast-এর বিশ্লেষক Jakub Vabra উদ্বিগ্ন। তিনি বলেছেন, ‘এরা মূলত শিশুদের টার্গেট করে, কারণ শিশুরা ওই অ্যাপের চারপাশে থাকা সতর্কতাসূচক রেড ফ্ল্যাগ দেখেও বিপদ বুঝতে পারে না। তাই তারা সহজে এদের ফাঁদে পা দেয়।” সেই কারণে শিশুদের হাতে ফোন তুলে দেওয়ার আগে সাবধান হোন, অন্যথায় হাজার হাজার টাকা হারাতে পারেন।

সঙ্গে থাকুন ➥