গতমাসে নিষিদ্ধ হয়েছে ২০ লক্ষ অ্যাকাউন্ট, এই ৮ কারণে আপনারও WhatsApp অ্যাকাউন্ট ব্যান হতে পারে

Avatar

Published on:

WhatsApp-কে একটি প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে ভারতে ভুল তথ্য এবং ভুয়ো খবর ছড়িয়ে দেওয়া রুখতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক জনপ্রিয় Meta মালিকানাধীন মেসেজিং অ্যাপটি। নতুন তথ্য প্রযুক্তি বিধি ২০২১-এর ভিত্তিতে প্রকাশিত সংস্থার মাসিক কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট অনুযায়ী, সম্প্রতি ইন্টারনেটের অপব্যবহার এবং ক্ষতিকারক বা অবাঞ্ছিত মেসেজ প্রেরণের জন্য, অর্থাৎ সোজা কথায় প্ল্যাটফর্মে ক্ষতিকর আচরণের জন্য ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপটি অক্টোবর মাসে ভারতে ২০ লক্ষেরও বেশি অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করেছে।

উল্লেখ্য যে, প্ল্যাটফর্মে সমস্ত অবৈধ ক্রিয়াকলাপ রুখতে বিগত কয়েক মাস ধরেই হোয়াটসঅ্যাপ এই প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে। সংস্থার মতে, ইউজারদের স্প্যাম-ফ্রি এবং অত্যন্ত সাবলীল ও নিরাপদ ব্যাবহারিক এক্সপেরিয়েন্স প্রদান করাই হোয়াটসঅ্যাপের মূল উদ্দেশ্য। তাই তা বজায় রাখতে তারা এই ধরনের পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর। তাই ভবিষ্যতে এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ভুলভাল কোনো কাজ করলে ইউজারদের অ্যাকাউন্ট কিন্তু তৎক্ষণাৎ ব্যান করবে সংস্থাটি। তাহলে এখন নিশ্চয়ই আপনাদের মনে প্রশ্ন আসছে যে কী কী কাজ করলে সংস্থাটি এই ধরনের কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারে? এই প্রতিবেদনে আমরা আপনাদেরকে এমন ৮ টি কাজের কথা জানাতে চলেছি যা করলে হোয়াটসঅ্যাপের “পরিষেবার শর্তাবলী” (“Terms of Service”) অনুসারে আপনার অ্যাকাউন্ট তৎক্ষণাৎ ব্যান করা হতে পারে। নীচে সেগুলির কথা উল্লেখ করা হল।

১. আপনি যদি কারোর ছদ্মবেশ ধারণ করেন এবং অন্য ব্যক্তির একটি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট তৈরি করেন, তবে হোয়াটসঅ্যাপ আপনাকে নিষিদ্ধ করবে:

ছদ্মবেশ ধারণের বিরুদ্ধে হোয়াটসঅ্যাপের স্পষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে, যদি দেখা যায় যে আপনি অন্য কারোর জন্য অ্যাকাউন্ট তৈরি করেছেন এবং অন্য কারোর ছদ্মবেশ ধারণ করেছেন, তাহলে তৎক্ষণাৎ আপনার হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করা হবে।

২. যদি কেউ আপনার কন্ট্যাক্ট লিস্টে না থাকে এবং আপনি যদি সেই ব্যক্তিকে খুব বেশি মেসেজ পাঠান, তবে হোয়াটসঅ্যাপ আপনাকে নিষিদ্ধ করতে পারে:

আপনার কন্ট্যাক্ট লিস্টে না থাকা সত্ত্বেও আপনি যদি কোনো ব্যক্তিকে অনর্গল মেসেজ পাঠিয়ে যেতে থাকেন, তাহলে সেক্ষেত্রেও কিন্তু হোয়াটসঅ্যাপ আপনার অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করতে পারে। অর্থাৎ, আপনি যদি বাল্ক মেসেজিং, অটো-মেসেজিং, অটো-ডায়ালিং এবং এই জাতীয় অবৈধ বা অননুমোদিত ক্রিয়াকলাপের সাথে জড়িত থাকেন, তাহলে হোয়াটসঅ্যাপ আপনার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।

৩. আপনি যদি WhatsApp Delta, GBWhatsApp, WhatsApp Plus ইত্যাদি থার্ড-পার্টি অ্যাপ ব্যবহার করেন, তবে হোয়াটসঅ্যাপ আপনাকে নিষিদ্ধ করতে পারে:

ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মটির নির্দেশিকা অনুযায়ী, সর্বদা অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করা উচিত। WhatsApp Delta, GBWhatsApp, WhatsApp Plus ইত্যাদির মতো থার্ড-পার্টি অ্যাপগুলি ব্যবহার করলে আপনার হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট চিরকালের জন্য নিষিদ্ধ করা হতে পারে। গোপনীয়তা তথা নিরাপত্তা সুরক্ষা সংক্রান্ত উদ্বেগের কারণে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের এই জাতীয় অ্যাপগুলি ব্যবহার করার অনুমতি দেয় না।

৪. আপনাকে যদি বহুসংখ্যক ইউজার ব্লক করে দেয়, তাহলে হোয়াটসঅ্যাপ আপনার অ্যাকাউন্ট ব্যান করতে পারে:

সাধারণভাবে কোনো নম্বর থেকে অপ্রয়োজনীয় বা বিরক্তিকর একাধিক মেসেজ এলে আমরা তৎক্ষণাৎ সেই অ্যাকাউন্টটিকে ব্লক করে দিই। ঠিক একইভাবে আপনাকেও যদি বহুসংখ্যক ইউজার (তারা আপনার কন্ট্যাক্ট লিস্টে থাকুক বা না থাকুক) ব্লক করে থাকে, তাহলে কিন্তু হোয়াটসঅ্যাপ আপনার অ্যাকাউন্ট ব্যান করতে পারে। কারণ হোয়াটসঅ্যাপও আমাদের মতো একই কথা ভাববে যে, বহুসংখ্যক কন্ট্যাক্টসে স্প্যাম মেসেজ বা ভুয়ো খবর পাঠানোর জন্যই এত বিপুল সংখ্যক লোক আপনাকে ব্লক করেছে।

৫. যদি প্রচুর সংখ্যক ইউজার আপনার হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করে, তবে হোয়াটসঅ্যাপ আপনাকে নিষিদ্ধ করতে পারে:

যদি আপনার হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ জমা পড়ে থাকে এবং আপনার বিরুদ্ধে অনেক ইউজার রিপোর্ট করেন, তাহলে তৎক্ষণাৎ হোয়াটসঅ্যাপ আপনার অ্যাকাউন্ট ব্যান করতে পারে।

৬. আপনি ব্যবহারকারীদের ম্যালওয়্যার বা ফিশিং লিঙ্ক পাঠালে হোয়াটসঅ্যাপ আপনাকে নিষিদ্ধ করবে:

আপনি যদি Android ফোনে APK ফাইল আকারে ম্যালওয়্যার পাঠান বা ব্যবহারকারীদের বিপজ্জনক ফিশিং লিঙ্ক ফরোয়ার্ড করেন, তবে হোয়াটসঅ্যাপ আপনার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে আপনার অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করতে পারে।

৭. ভুলেও হোয়াটসঅ্যাপে পর্ন ক্লিপ, হুমকি জাতীয় বা মানহানিকর মেসেজ পাঠাবেন না:

হোয়াটসঅ্যাপ তার নির্দেশিকায় স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, ব্যবহারকারীরা অবৈধ, অশ্লীল, মানহানিকর, হুমকি জাতীয়, ভয় দেখানো, হয়রানিমূলক, ঘৃণ্য মেসেজ পাঠানোর জন্য নিষিদ্ধ হবেন। এছাড়াও, হোয়াটসঅ্যাপে পর্ন ক্লিপ পাঠানোর অনুমতি নেই। তাই এই জাতীয় কোনো কাজ করলে হোয়াটসঅ্যাপের হাত থেকে আপনি নিস্তার পাবেন না।

৮. সহিংসতাকে (violence) প্রোমোট করে এমন ভুয়ো মেসেজ বা ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে ভুলেও পাঠাবেন না:

হোয়াটসঅ্যাপ স্পষ্টভাবে ইউজারদের সতর্ক করে জানিয়েছে যে, অযথা মানুষকে বিব্রত বা হয়রান করার উদ্দেশ্যে মেসেজ বা ভিডিও পাঠানোর জন্য তারা যেন কোনোভাবেই এই প্ল্যাটফর্মটিকে ব্যবহার না করে। তাই শিশু তথা অন্য ব্যক্তিদের শোষণ বা সহিংসতাকে প্রোমোট করে, এমন ভিডিও বা মেসেজ পাঠালে জেনে রাখুন যে আপনার অ্যাকাউন্ট তৎক্ষণাৎ ব্যান করবে হোয়াটসঅ্যাপ।

সঙ্গে থাকুন ➥