Ola Electric Scooter: ওলা ইলেকট্রিক স্কুটারের এই প্রযুক্তিগুলির বিষয়ে শুনলে হাঁ হয়ে যাবেন

১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট এবং ২০২১ সালের ১৫ অগাস্টকে যেন মিলিয়ে দিল একটি ঘটনা। সে বার ইংরেজদের হাত থেকে মিলেছিল মুক্তি, স্বাধীনতা এসেছিল বিপ্লবীদের হাত…

১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট এবং ২০২১ সালের ১৫ অগাস্টকে যেন মিলিয়ে দিল একটি ঘটনা। সে বার ইংরেজদের হাত থেকে মিলেছিল মুক্তি, স্বাধীনতা এসেছিল বিপ্লবীদের হাত ধরে। আর এ বার পেট্রোলের খরচ ও দূষণ থেকে মিলবে মুক্তি৷ কারণ গতকাল ভারতে বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে বিপ্লবের সূচনা হল অ্যাপ ক্যাব সংস্থা ওলা (Ola)-র হাত ধরে। না এটা আমাদের কথা নয়হ এমনই দাবি করেছে বিশেষজ্ঞরা। ১৫ অগাস্ট আত্মপ্রকাশ করেছে বহুল আকাঙ্খিত ওলা ইলেকট্রিক স্কুটার। একটি নয়, দু’টি অবতারে এসেছে সেটি – বেস ভ্যারিয়েন্ট S1 এবং আরও পাওয়ারফুল S1 Pro। ওলার কর্ণধার ভাবিশ আগরওয়াল (Bhavish Agarwal) জানিয়েছেন, সেরা ডিজাইন, সেরা পারফরম্যান্স, ও সেরা প্রযুক্তির সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে Ola S1 ও Ola S1 Pro। এমনকি তাঁর কথায়, সর্বকালের সেরা স্কুটার বানিয়েছি আমরা। এমনকি লঞ্চ ইভেন্টে ওলা-র ই-স্কুটার দু’টির যে সব ফিচারের প্রদর্শন করা হয়েছে, তা দেখে আমরা নিজেরাও অবাক।

নিঃসন্দেহে বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে বিপ্লবের সূচনা করে ফেলল ওলা। তবে দেশের সড়কে ওলার দু’চাকা গাড়ি কেমন চলবে এখন সেটাই দেখার। আজকের প্রতিবেদনে আমরা ওলা স্কুটারের বিশেষ কয়েকটি ফিচার সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করবো। আমরা উপলব্ধি করেছি যে এই ফিচারগুলি সম্পর্কে পাঠকদের পরিচিত হওয়া প্রয়োজন। তাহলে এবার একনজরে দেখে নেওয়া যাক সেগুলি।

১ – আপনার উপস্থিতি বুঝে নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে Ola ইলেকট্রিক স্কুটারে

চাবি ছাড়াই বাজারে আসবে ওলা স্কুটার। কি করে তাহলে গাড়ি চালু করবেন, সেই বিষয়ে ভাবছেন? ওলার ডেডিকেটেড মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন বা টাচস্ক্রিন ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে লক-আনলক করার সুবিধা পাওয়া যাবে। যদি সেটা করতেও ল্যাদ লাগে তার জন্য সমাধান রেখেছে ওলা। আপনি স্কুটারের কাছে আসলে সে নিজে থেকেই আপনার উপস্থিতি অনুভব করে আনলক হবে। এমনকি ‘হাই’ বলে আপনার নাম উচ্চারণ করে ওয়েলকাম করবে ওলা স্কুটার। আবার স্কুটার ছেড়ে কিছুদূর এগোলেই বাই বলে সে নিজে থেকেই লক হয়ে যাবে। কি মজার ব্যাপার তাই না!

২ – Ola ইলেকট্রিক স্কুটারে রয়েছে ক্রুজ কন্ট্রোল সিস্টেম

চারচাকা গাড়িতে ক্রুজ কন্ট্রোল ফিচার দেখতে অভ্যস্ত আমরা। এখন অবশ্য দামি বাইকেও দেখা যায় ফিচার। সেই ফিচারটি এবার আনা হয়েছে ওলা স্কুটারে। ক্রুজ কন্ট্রোল এমনই এক সিস্টেম যা আপনার গাড়িকে গতিকে স্বয়ংক্রিয় ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন থ্রটলে চাপ না দিয়েই যদি একটানা ৫০ কিমি প্রতি ঘন্টা গতিবেগে ওলা স্কুটার চালাতে চান। তাহলে ক্রুজ কন্ট্রোলের বাটনে চাপ দিতে হবে। ব্যস, ঠিক সেই গতিবেগ বজায় রেখে চলবে আপনার স্কুটার। নীচু থেকে উঁচু রাস্তায় ওঠার সময় বা উঁচু থেকে নীচু রাস্তায় নামার সময় আপনার নির্ধারিত স্পিডেই চলবে ওলা স্কুটার। নেপথ্যে এই ক্রুজ কন্ট্রোল সিস্টেম।

৩ – আপনার পছন্দ করা শব্দে ছুটবে Ola ইলেকট্রিক স্কুটার

কয়েক দশক ধরে স্কুটারে পেট্রোলচালিত ইঞ্জিনের সেই এক শব্দে অভ্যস্ত মানুষজন। সেই ধারণা বদলে দেবে ওলা-র ইলেকট্রিক স্কুটার। পেট্রলচালিত মোটরবাইকের মতো গর্জে উঠবে ওলা স্কুটার। কোনও সাধারণ শব্দ নয়৷ ওলা নিয়ে এসেছে মুডস (Moods), যা রাইডিংয়ের অভিজ্ঞতাকে সম্পূর্ণ অন্য মাত্রায় নিয়ে যাবে। টাচস্ক্রিন থেকে বোল্ট, কেয়ার, ওয়ান্ডার, এবং ভিনটেজ সাউন্ড মোড চয়ন করা যাবে। যা অন হওয়া মাত্রই ইনস্ট্রুমেন্ট ক্লাস্টারের গ্রাফিক্সেও লাগবে পরিবর্তনের ছোঁয়া। সাউন্ডের জন্য প্রত্যেকটি মোডসের সাথে রয়েছে আলাদা গ্রাফিক্স।

যারা স্পিডে গাড়ি চালান বা অ্যাড্রিনালিন রাশ পছন্দ করেন তাদের জন্য উপযুক্ত বোল্ট মুড। আবার যারা ফিউচারিস্টিক ব্যাপার পছন্দ করেন তাদের জন্য এক্কেভারে পারফেক্ট ওয়ান্ডার মোড। সায়েন্স ফিকশন ছবিতে যেমন শব্দের ব্যবহার হয়, ওয়ান্ডার মোডে ঠিক তেমন আওয়াজ বেড়োবে ওলা স্কুটার থেকে।

এক কথায়, আপনার পছন্দ করা শব্দেই ছুটবে ওলা স্কুটার।

৩ – Ola ইলেকট্রিক স্কুটারের অপারেটিং সিস্টেম ও অত্যাধুনিক টাচস্ক্রিন ড্যাশবোর্ড

ডিজাইন ও বৈপ্লবিক পারফরম্যান্সের জুড়িদার হিসেবে ওলা স্কুটারের জন্য সম্পুর্ণ নতুন অপারেটিং সিস্টেম বানিয়েছে ওলা। এর নাম রাখা হয়েছে মুভ ওএস (Move OS)। এই মুভ ওএস জীবন্ত হয়ে উঠেছে ওলা স্কুটারের ৭ ইঞ্চি শাটার-প্রুভ টাচস্ক্রিন ডিসপ্লেতে। ডিসপ্লের সঙ্গে যুক্ত ওলা স্কুটারের ব্রেন, যা আসলে একটি পাওয়ারফুল ভেহিকেল কম্পিউটার। এটির ডিজাইন থেকে নির্মাণ, পুরোটাই হয়েছে ভারতবর্ষে, ওলার হাতে। ৩ জিবি র‌্যাম ও অক্টা-কোর প্রসেসর দ্বারা এটি চালিত। এছাড়া হাই-স্পিড কানেক্টেভিটি যেমন – ৪জি (ই-সিম), ওয়াই-ফাই, এবং ব্লুটুথ রয়েছে এতে।

আবার উপরে সোয়াইপ করলেই ড্যাশবোর্ডে ভেসে আসবে হরেক রকমের উইজেট। আবহাওয়ার সব তথ্য, গাড়ির পারফরম্যান্স, রিয়েল টাইম ট্রাফিক ইনফরমেশন, টার্ন-বাই-টার্ন নেভিগেশন, মিউজিক প্লে-লিস্ট, অবশিষ্ট চার্জ, প্রভৃতি ফুটে উঠবে বিভিন্ন উইজেটে। আবার প্রতিটি মোডে প্রত্যেকটি উইজেটে আলাদা ডিজাইন দেখা যাবে।

সেরা নেভিগেশনের অভিজ্ঞতা দেবে ওলা ইলেকট্রিক স্কুটার। এমনটাই বলেছেন ওলা-র সিইও ভাবিশ আগরওয়াল। কোথায় আছি, কীভাবে যাবো, এসবের জন্য আর ফোন ঘাটতে হবে না৷ ওলা-র ড্যাশবোর্ড যথেষ্ট।

স্কুটার যতই নিজের হোক না কেন পরিবারের সদস্যরা বা প্রিয় বন্ধু-বান্ধবরা চালাবে না, এমনটা তো নিশ্চয় হবে না। তাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে প্রত্যেকের জন্য আলাদা আলাদা প্রোফাইল তৈরি করার সুবিধা থাকছে। ধরুন আপনার বোন ওলা স্কুটার নিয়ে বেরোতে চাইলো। আপনি ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে স্পিড লিমিট, এরিয়া লিমিট, টাইম ফেন্স, মোড রেস্ট্রিকশন – এগুলি সেট করে রাখতে পারবেন। স্পিড লিমিট যদি ৪০ কিমি প্রতি ঘন্টা রাখেন। তার বেশি স্পিডে স্কুটার চলবেই না। এরিয়া লিমিট ফিচারটিও একইভাবে কাজ করবে। সেইসঙ্গে স্মার্টফোনে ওলা-র ডেডিকেটেড অ্যাপ্লিকেশনে লাইভ লোকেশন ট্রাকিং, ব্যাটারি ও স্কুটারের হেল্থ এলার্ট চেক করা যাবে। এই ফাংশনগুলির জন্য শুধুমাত্র ব্লুটুথের মাধ্যমে আপনার স্মার্টফোনের সঙ্গে স্কুটারটি কানেক্ট করতে হবে।

৪ – Ola ইলেকট্রিক স্কুটার আপনার ভয়েসের মাধ্যমে কন্ট্রোল হবে

মাল্টি মাইক্রোফোন সেটআপ ও AI স্পিচ রিকগনিশন অ্যালগরিদম বা গাণিতিক পরিভাষা সহ এসেছে ওলা স্কুটার। ফলে কন্ঠস্বরের মাধ্যমেই স্কুটারের নিয়ন্ত্ৰণ করা যাবে। যেমন – হে ওলা, প্লে সাম মিউজিক বলেলেই প্লেলিস্ট থেকে মিউজিক বাজবে। স্কুটারের ভিতরে শক্তিশালী স্পিকার গান শোনার দারুণ অভিজ্ঞতা দেবে। ভলিউম কমানো-বাড়ানো যাবে ভয়েসের মাধ্যমেই।

ক্লাস্টারেই দেখা ‌যাবে কে ফোন করছে আপনাকে, কন্ট্রোল প্যাডে টাচ করে বা ভয়েস কমান্ড দিয়ে ফোন রিসিভ করা যাবে। কল ক্লারিটিও দারুণ!

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন