পেট্রলের জামানা শেষ, দেশে বিক্রি হওয়া গাড়ির 75% হবে ইলেকট্রিক, কত সালের মধ্যে

২০৭০ সালের মধ্যে দেশে শূন্য কার্বন নির্গমনের লক্ষ্য স্থির করেছে ভারত সরকার। যে পথে প্রধান অন্তরায় জীবাশ্ম জ্বালানি চালিত যানবাহন। ফলে লক্ষ্য পূরণ করতে হলে…

২০৭০ সালের মধ্যে দেশে শূন্য কার্বন নির্গমনের লক্ষ্য স্থির করেছে ভারত সরকার। যে পথে প্রধান অন্তরায় জীবাশ্ম জ্বালানি চালিত যানবাহন। ফলে লক্ষ্য পূরণ করতে হলে বিকল্প জ্বালানির যানবাহনের পরিমাণ যে বাড়াতে হবে সে বিষয়ে কোনো দ্বিমত নেই। বিকল্প জ্বালানির মধ্যে আবার সর্বাধিক জনপ্রিয় ব্যাটারি চালিত ইলেকট্রিক গাড়ি। এই জাতীয় যানবাহনের ব্যবহার বাড়ানোই বর্তমানে সরকারের প্রধান লক্ষ্য। এদিকে কাউন্সিল অন এনার্জি, এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ওয়াটার বা সিইইডব্লিউ (CEEW)-র প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে আশার আলো দেখিয়েছে। তাদের দাবি, ২০৫০ সালের মধ্যে দেশে বিক্রিত নতুন যাত্রীবাহী গাড়ির ৭৫ শতাংশই হবে বৈদ্যুতিক। যা প্রকৃতপক্ষে তাজ্জব করার মতোই তথ্য।

সিইইডব্লিউ তাদের রিপোর্টে এ-ও দাবি করেছে, ২০৩০-এর ভেতর ভারতে বিক্রিত নতুন টু-হুইলারের অর্ধেক এবং নতুন চার চাকার গাড়ির এক চতুর্থাংশ ব্যাটারি চালিত মডেল হবে। বলাই বাহুল্য, সংস্থার এই দাবি সত্যি হলে দেশের জনগণের কাছে পেট্রোল-ডিজেল চালিত যানবাহন কেনার বিকল্প কমে আসবে। আবার পরিসংখ্যানে উল্লেখ রয়েছে, বর্তমান সময়ের তুলনায় ২০৫০-এর মধ্যে চার চাকার গাড়ির বিক্রি ৯ গুণ বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে দেশের মানুষের উপার্জন বৃদ্ধি পাওয়ায়, টু-হুইলারের মালিকের সংখ্যাও বাড়বে।

আগামী কয়েক বছরে দেশে চার চাকা গাড়ির ব্যবহার বৃদ্ধি, পরিবহণ ও পরিবেশের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রভাব ফেলবে। বর্তমানে পরিবহণ ক্ষেত্র মোট শক্তির ২১% ব্যবহার করে এবং উন্নত দেশগুলির তুলনায় কম দূষণ নির্গত করে বলে উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টে। বর্তমানে ভারতে বৈদ্যুতিক চার্জিং নেটওয়ার্ক তৈরির শ্লথ গতি, এবং জোগান-শৃঙ্খলের বিশৃঙ্খলা, আদতে দেশে বৈদ্যুতিক যানবাহনের ব্যবহার বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করছে। সেখানে এও বলা হয়, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির উচিত বৈদ্যুতিক চার্জিং পরিকাঠামো উন্নয়নে আরও বেশি বিনিয়োগ করা এবং স্থানীয় জোগান-শৃঙ্খলকে সমর্থন করে বৈদ্যুতিক যানবাহনের বিক্রি বৃদ্ধিতে প্রসার ঘটানো।

এই প্রসঙ্গে সিইইডব্লিউ-এর এক কর্মকর্তা বৈভব চতুর্বেদী জানান, ভারতে পরিবহণ ক্ষেত্র থেকে তৈরি শক্তির চাহিদা আগামী ৩০ বছরেও বৃদ্ধি পাবে। কারণ দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বাড়বে। তাঁর কথায়, “তাই কার্বনের নির্গমন কমাতে পরিবহণ ক্ষেত্রের দীর্ঘমেয়াদী জলবায়ুর লক্ষ্য স্থির করা প্রয়োজন। আমাদের আইন প্রণয়নকারীদের উচিত স্থানীয় জোগান-শৃঙ্খল এবং ইলেকট্রিক গাড়ির জন্য চার্জিং স্টেশন তৈরিতে বিনিয়োগ করা। এতে করেই একমাত্র মানুষকে বৈদ্যুতিক গাড়িমুখী গড়ে তোলা সম্ভব।”