Yamaha Aerox 155 নাকি Aprilia SXR 160, দুই দুর্দান্ত ম্যাক্সি স্কুটারের মধ্যে সেরা কে, দেখে নিন

বাইকের রমরমার মধ্যেও বিগত কয়েক বছরের মধ্যে ভারতীয় বাজারে যথেষ্ট স্বাবলম্বী হতে পেরেছে স্কুটার গুলি। বাস্তবিক ক্ষেত্রে স্কুটার চালানোর সহজলভ্যতা একে অনেক বেশি জনপ্রিয়তা এনে…

বাইকের রমরমার মধ্যেও বিগত কয়েক বছরের মধ্যে ভারতীয় বাজারে যথেষ্ট স্বাবলম্বী হতে পেরেছে স্কুটার গুলি। বাস্তবিক ক্ষেত্রে স্কুটার চালানোর সহজলভ্যতা একে অনেক বেশি জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে। তবে এমন অনেক মানুষ রয়েছেন যারা তথাকথিত স্কুটারের নকশা এবং পারফরম্যান্স নিয়ে যথেষ্ট সন্তুষ্ট নন। তাই তাদের কথা ভেবেই বাজারে পা রেখেছে নজরকাড়া ডিজাইনের বড় চেহারার স্কুটার, যাকে বলা হয় ম্যাক্সি স্কুটার। এই জাতীয় স্কুটারগুলিতে রয়েছে শক্তিশালী ইঞ্জিন এবং আরামদায়ক লং রাইডের এক্সপিরিয়েন্স দেওয়ার ক্ষমতা। সাথে আধুনিক ফিচার্স। আর এই সবকিছু দিয়েই আধুনিক প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের মন জয় করে নিয়েছে সেগুলি। এই মুহূর্তে ভারতে উপলব্ধ দুই দুর্দান্ত ম্যাক্সি স্কুটার হল Yamaha Aerox 155 এবং Aprilia SXR 160। আজকের প্রতিবেদনে এই দুটি মডেল নিয়ে তুলনামূলক আলোচনা রইল।

Yamaha Aerox 155 vs Aprilia SXR 160: ইঞ্জিন

ইয়ামাহা এরোক্স ১৫৫ সিসি ইঞ্জিন-সহ এলেও এপ্রিলিয়া এসএক্সআর এর ১৬০ সিসি ইঞ্জিনের তুলনায় আরও পাওয়ারফুল। এর অন্যতম কারণ হলো ইয়ামাহার এই স্কুটারটিতে চলার শক্তি যোগায় ১৫৫ সিসির লিকুইড কুল্ড ইঞ্জিন। ইঞ্জিনটি ৮,০০০ আরপিএম গতিতে সর্বোচ্চ ১৪.৭ বিএইচপি ও ৬,৫০০ আরপিএম গতিতে সর্বোচ্চ ১৩.৯ এনএম টর্ক উৎপাদন করতে সক্ষম।

উপরন্তু এতে রয়েছে ভেরিয়েবল ভাল্ভ অ্যাকচুয়েশন (VVA) প্রযুক্তি। এই একই ইঞ্জিন আবার ইয়ামাহার জনপ্রিয় স্পোর্টস বাইক আরওয়ানফাইভ মডেলে ব্যবহার করা হয়। তবে এরোক্সের ক্ষেত্রে সেটা আলাদা রকম ভাবে টিউন করা। অন্যদিকে এপ্রিলিয়া এসএক্সআর ১৬০ এসেছে ১৬০ সিসি ইঞ্জিনের সাথে, যা ৭১০০ আরপিএম গতিতে ১০.৭ বিএইচপি পাওয়ার ও ৬০০০ আরপিএম গতিতে ১১ এনএম টর্ক উৎপন্ন করে।

Yamaha Aerox 155 vs Aprilia SXR 160: ডিজাইন

ইয়ামাহা এরোক্স ১৫৫ অনেক বেশি স্পোর্টি লুকস নিয়ে অবতীর্ণ হয়েছে। ফেয়ারিং আছে এবং বডি প্যানেলের সংখ্যা প্রচুর। দেখতে এতটাই আকর্ষণীয় যে রাস্তায় বেরোলে কেউ না কেউ তাকাবেই। ইয়ামাহার অন্যান্য বাইকগুলোর মতো মোটোজিপি এডিশনে উপলব্ধ এটি। যার রঙের কাজ নজরকাড়া। তবে স্কুটারটির নিচের চ্যাসিসের অংশ এমন ভাবে তৈরি যে চিরাচরিত স্কুটারের মত চওড়া ফুটবোর্ড এতে নেই। অন্য দিকে, এপ্রিলিয়া এসএক্সআর ১৬০ অনেক বেশি ছিমছাম ও আভিজাত্যপূর্ণ ডিজাইন নিয়ে অবতীর্ণ হয়েছে। স্কুটারটির সামনের অংশ ম্যাক্সি স্কুটারের মতোই ডিজাইন করা হয়েছে।

Yamaha Aerox 155 vs Aprilia SXR 160: হার্ডওয়্যার

এপ্রিলিয়া এসএক্সআর ১৬০ এর উভয়দিকেই ১২০/৭০ সেকশনের টায়ার যুক্ত ১২ ইঞ্চির চাকা লাগানো রয়েছে। ব্রেকিং সিস্টেমের জন্য সামনের ডিস্ক ও পিছনে ড্রাম ব্রেকের ব্যবহার করা হয়েছে। সাসপেনশনের জন্য সামনের দিকে টেলিস্কোপিক ফর্ক থাকলেও পিছনে অ্যাডজাস্টেবল মনোশক বর্তমান।

তুলনামূলকভাবে বড় চাকা এরোক্স মডেলটিতে দেখা যায়। উভয়দিকেই ১৪ ইঞ্চির চাকা ব্যবহার করা হলেও সামনে ১১০/৮০ সেকশনের ও পিছনে ১৪০/৭০ সেকশনের টায়ার দেওয়া রয়েছে। ব্রেকিং সিস্টেম হিসেবে সামনে ২৩০ মিমি ডিস্ক ও পিছনে ড্রাম ব্রেকের ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া সাসপেনশনের জন্য এরোক্স এর সামনে টেলিস্কোপিক ফর্ক ও পিছনে টুইন শক অ্যাবজর্ভার আছে।

Yamaha Aerox 155 vs Aprilia SXR 160: ফিচার্স

উভয় ম্যাক্সি স্কুটারেই এবিএস, এলইডি লাইটিং, ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার ও ব্লুটুথ সংযোজন দেখতে পাওয়া যায়। এরোক্সের ফুয়েল ট্যাংকটি সামনের দিকে অবস্থিত হলেও এপ্রিলিয়ার থেকে আয়তনে ছোট। তবে এর ফুয়েল ট্যাংকটি সিটের নিচে থাকায় তেল ভরার সময় রাইডারকে স্কুটার থেকে নামার প্রয়োজন হবে। এছাড়াও, এসএক্সআর ১৬০ তে চালকের পা রাখার জন্য অনেকটা বেশি জায়গা পাওয়া যায়। আবার এরোক্সে সাইড স্ট্যান্ড ইঞ্জিন কাট অফ ও অটোমেটিক ইঞ্জিন স্টার্ট স্টপ সিস্টেম উপলব্ধ।

Yamaha Aerox 155 vs Aprilia SXR 160: দাম

Aprilia SXR 160 এর এক্স-শোরুম মূল্য ১.৪৩ লাখ। আর Yamaha Aerox এর দাম ১.৩৯ লাখ টাকা (এক্স শোরুম)। এরোক্সের দাম খানিকটা কম হলেও বাস্তবিক ব্যবহারিক ক্ষেত্রে এর গ্রহণযোগ্যতা খানিকটা হলেও কম। তবে বর্তমানে চিরাচরিত স্কুটারের বাইরে অন্যতম জনপ্রিয় মডেল এটি।