Starlink কে টেক্কা দিতে ভারতে স্যাটেলাইট ভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবা আনছে Airtel

Avatar

Published on:

ইদানীংকালে ভারত সহ গোটা বিশ্বে স্যাটেলাইট ভিত্তিক ইন্টারনেটের চাহিদা দ্রুত গতিতে বাড়ছে। আর এমত পরিস্থিতিতে বিগত কয়েক মাস ধরেই চর্চা চলছিল যে ভারতীয় ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (ISP)-দের টেক্কা দিতে এলন মাস্কের কোম্পানি Starlink (স্টারলিঙ্ক), এদেশে শীঘ্রই ‘স্টারলিঙ্ক ইন্টারনেট সার্ভিস’ নামের নেটওয়ার্ক পরিষেবা লঞ্চ করবে। এর জন্য বিদেশি সংস্থাটি প্রি-অর্ডার নেওয়াও শুরু করেছিল। কিন্তু অতি সম্প্রতি ডিপার্টমেন্ট অফ টেলিকমিউনিকেশন (DoT), Starlink কে পরিষেবার প্রি-অর্ডার বাবদ গৃহীত সমস্ত টাকা ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছে। এমনকি তাদের নতুন করে প্রি-অর্ডার নেওয়া থেকেও বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

আসলে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে যে, স্টারলিঙ্কের স্যাটেলাইট-ভিত্তিক ইন্টারনেট সার্ভিস ভারতে পরিষেবা অফার করার জন্য লাইসেন্সপ্রাপ্ত নয়। এছাড়া জনসাধারণকে এলন মাস্কের সংস্থার বিজ্ঞাপন দেওয়া পরিষেবাগুলিতে সাবস্ক্রাইব করতেও সরকারের তরফে নিষেধ করা হয়েছে। অর্থাৎ খুব স্বাভাবিকভাবেই বোঝা যাচ্ছে যে, স্টারলিঙ্কের ভারতে ব্যবসা শুরু করার সম্ভাবনা এখন বিশ বাঁও জলে! আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই এবার এলন মাস্কের কোম্পানিকে টক্কর দিতে মাঠে নামতে চলেছে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় টেলিকম কোম্পানি Bharti Airtel (ভারতী এয়ারটেল)।

স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড সার্ভিস চালু করবে Airtel 

গত বুধবার ভারতী এয়ারটেল ভারতে স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড পরিষেবা প্রদানের জন্য হিউজ কমিউনিকেশন ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের (HCIPL) সাথে হাত মিলিয়ে একটি যৌথ উদ্যোগ গঠন করেছে। উভয় সংস্থাই VSAT অপারেশনের মাধ্যমে বিজনেস এবং সরকারী গ্রাহকদের স্যাটেলাইট এবং হাইব্রিড নেটওয়ার্ক সরবরাহ করবে। এই যৌথ উদ্যোগ বা জয়েন্ট ভেঞ্চারটির কথা ২০১৯ সালের মে মাসে ঘোষণা করা হয়েছিল। এটি ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইব্যুনাল (NCLT) এবং ডিপার্টমেন্ট অফ টেলিকম (DoT) থেকে সমস্ত ছাড়পত্র ইতিমধ্যেই পেয়ে গিয়েছে।

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি যে, HCIPL ভারতের বৃহত্তম স্যাটেলাইট সার্ভিস অপারেটর। এর অধীনে ২ লক্ষেরও বেশি VSAT রয়েছে। HCIPL-এর তরফ থেকে নেটওয়ার্কিং টেকনোলজি, সলিউশন এবং সার্ভিসগুলিকে ব্রডব্যান্ড পরিষেবা সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে সরকারী অফিস, ব্যাংকিং, এরোনটিকস এবং মেরিটাইম মোবিলিটির পাশাপাশি মাঝারি আকারের ব্যবসা, এডুকেশন এবং টেলিকম ব্যাকআপ।

এবার যারা জানেন না, তাদের একটু স্যাটেলাইট ইন্টারনেট ঠিক কী, সে বিষয়ে জানিয়ে রাখি। স্যাটেলাইট ইন্টারনেট প্রত্যন্ত অঞ্চলে ওয়্যারলেসভাবে হাই স্পিড ইন্টারনেট কানেকশন সরবরাহ করে। স্যাটেলাইট ইন্টারনেট তার বা ওয়্যারের মাধ্যমে নয়, বরং লেজার বিম ব্যবহার করে ইন্টারনেটে ডেটা ট্রান্সফার করে। এর জন্য লোয়ার অরবিট স্যাটেলাইট ব্যবহৃত হয়, যা ল্যাটেন্সি রেটকে কম করে। উল্লেখ্য যে, ল্যাটেন্সি রেট বলতে একটি পয়েন্ট থেকে অন্য পয়েন্টে ডেটা পরিবহন করার জন্য প্রয়োজনীয় সময়কে বোঝানো হয়। লো ল্যাটেন্সি অনলাইন বাফারিং, গেমিং এবং ভিডিও কলিংয়ের মান উন্নত করে।

এবার স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের সুবিধাগুলির কথা একটু বলে রাখি। স্যাটেলাইট ইন্টারনেট যে কোনো জায়গা থেকে অ্যাক্সেস করা যেতে পারে। স্বাভাবিকভাবে এটি যে স্পিড প্রদান করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, কখনো কখনো তার চেয়েও বেশি স্পিড অফার করে থাকে। বিশেষত প্রত্যন্ত অঞ্চল এবং দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে এই সার্ভিস অত্যন্ত উপযোগী। শুধু তাই নয়, দুর্যোগের ফলে পরিষেবায় কিছু গোলযোগ দেখা দিলে তা অতি দ্রুত এবং খুব সহজেই মেরামত করে নেওয়া যায়।

সঙ্গে থাকুন ➛