BSNL শীঘ্রই 5G চালু না করতে পারলেও আয় আটকাবে না, জেনে নিন কারণ
চলতি বছরেই সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তি-নির্ভর নিজস্ব 4G পরিষেবা চালু করতে চলেছে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম অপারেটর ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেড বা বিএসএনএল (BSNL)। সেজন্য ইতিমধ্যেই সংস্থাটি সহযোগী TCS বা টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস -এর হাতে ৫৫০ কোটি টাকার বরাত তুলে দিয়েছে, যাতে তারা দেশের নির্বাচিত বিভিন্ন অংশে ৬,০০০ নতুন 4G সাইট গড়ে তুলতে পারে। আবার ঠিক একই সময়ে BSNL তাদের NSA বা নন-স্ট্যান্ডঅ্যালোন 5G প্রযুক্তির উপরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছে, যা সফল হলে খুব শীঘ্রই টেলকোর তরফ থেকে 5G নেটওয়ার্ক লঞ্চ করা সম্ভব হবে।
এমতাবস্থায় যখন আনুষ্ঠানিকভাবে 5G লঞ্চে এখনো কিছুটা দেরি আছে, তখন নিজেদের বিদ্যমান পরিকাঠামোকে কাজে লাগিয়ে বিএসএনএলের সামনে কোটি কোটি টাকা ঘরে তোলার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে যেখানে প্রাইভেট টেলকোগুলির দুর্বলতা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার প্রধান পুঁজি হতে পারে।
Jio, Airtel, Vi -এর দুর্বলতাকে পুঁজি করে বিপুল মুনাফার মুখ দেখতে পারে BSNL
আসলে Jio, Airtel, Vi প্রমুখ বেসরকারি অপারেটরেরা আসন্ন কিছুদিনের মধ্যেই নিজস্ব 5G পরিষেবা চালু করতে চলেছে। যদিও সারাদেশে পরবর্তী প্রজন্মের উন্নত নেটওয়ার্ক প্রদানের জন্য যে পরিকাঠামো প্রয়োজন, বর্তমানে তা এই সংস্থাগুলির অনায়ত্ত। সেক্ষেত্রে তাদের দরকার আরো অনেক বেশি পরিমাণ টাওয়ার সাইট, যা আকস্মিকভাবে নির্মাণ করা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। বরং সেজন্য যথোপযুক্ত পরিমাণ সময় ও খরচখরচা জরুরি যা ব্যয় করতে বেসরকারি টেলকোগুলি রাজি নাও হতে পারে। এর পরিবর্তে তারা বিএসএনএলের বিদ্যমান পরিকাঠামো (টাওয়ার) ব্যবহার করতে পারে যা ছাড়া তাদের আর কোনো গত্যন্তর নেই।
ভবিষ্যতে নিজেদের প্রায় ৬৮,০০০ টাওয়ার ইজারা দিতে চলেছে BSNL
আজ্ঞে হ্যাঁ, বেসরকারি টেলকোদের নিজস্ব টাওয়ার ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত বিএসএনএল সেখান থেকে কোটি কোটি টাকা মুনাফা ঘরে তুলতে পারে। এমনকি এর মধ্যেই সরকারি সংস্থার তরফ থেকে এহেন উদ্যোগ গৃহীত হয়েছে বলে প্রকাশ্যে এসেছে। জনপ্রিয় সংবাদ সংস্থা Financial Express -এর রিপোর্ট অনুযায়ী, সম্প্রতি বিএসএনএল তাদের ৬৮,০০০ -এরও বেশি টাওয়ার ইজারা দেওয়ার কথা ভাবছে, যার প্রায় ৬৫ শতাংশ টাওয়ারের ফাইবারকরণ (Fiberisation) প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছে। সর্বোপরি রিপোর্টের মতে, ইতিপূর্বে BSNL নিজেদের প্রায় ১৩,৫০০ টেলিকম টাওয়ার ইজারা দিয়েছে, যেখান থেকে সংস্থাটির বার্ষিক আয়ের পরিমাণ প্রায় ১,০০০ কোটি টাকা।
সুতরাং একথা পরিষ্কার যে 5G নেটওয়ার্ক রোলআউটের জন্য প্রয়োজন অপেক্ষাকৃত স্থানী ও সবল পরিকাঠামো, যার নিরিখে বিএসএনএল প্রাইভেট টেলকোদের থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। তাছাড়া তাদের অধিকাংশ সাইটে ফাইবারকরণের প্রক্রিয়া সমাপ্ত হওয়ায় সেগুলি ইজারা দিয়ে সংস্থা উত্তরোত্তর আরো বেশি উপার্জনের স্বপ্ন দেখছে। সেক্ষেত্রে 5G রোলআউটে এখনো দেরি থাকলেও BSNL তা থেকে মুনাফা আদায়ে পিছিয়ে নেই।