WhatsApp চালাতে গিয়ে ভুল করছেন না তো? জানুয়ারিতে ব্যান করা হয়েছে 29 লক্ষ অ্যাকাউন্ট

Avatar

Published on:

WhatsApp Banned 2.9 Million Accounts

বিশ্বের সর্বাধিক জনপ্রিয় ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম যে WhatsApp, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই বললেই চলে। ভারত সহ সারা বিশ্বের কোটি কোটি ইউজার প্রতিনিয়ত Meta মালিকানাধীন এই অ্যাপটি ব্যবহার করেন। কেবল ভারতেই WhatsApp ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৫০০ মিলিয়ন (৫০ কোটি)। সেক্ষেত্রে ইউজারদের সুরক্ষার পাশাপাশি যাবতীয় অসৎ কার্যকলাপ থেকে প্ল্যাটফর্মটিকে সুরক্ষিত রাখতে নিয়মিত একাধিক কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে মার্কিনি কোম্পানিটি। অ্যাপটির অপব্যবহার রুখতে প্রতি মাসেই প্রচুর সংখ্যক ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করে WhatsApp। সেক্ষেত্রে চলতি বছরেও তারা এই ধারা অব্যাহত রাখলো। রিপোর্ট অনুযায়ী, Meta মালিকানাধীন মেসেজিং প্ল্যাটফর্মটি ২০২৩ সালের প্রথম মাসে (জানুয়ারি) ভারতে ২৯ লাখেরও বেশি অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করেছে। উল্লেখ্য যে, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রায় ৩৬ লাখ ভারতবাসীর অ্যাকাউন্ট ব্লক করা হয়েছিল, যার তুলনায় এই সংখ্যাটি খানিকটা কম।

২০২৩ সালের প্রথম মাসে ভারতে ২৯ লাখ অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করলো WhatsApp

সম্প্রতি মেটা মালিকানাধীন কোম্পানিটির তরফে প্রকাশিত সেফটি রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে যে, তারা ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ২৯ লাখ ১৮ হাজার হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করেছে। এক্ষেত্রে বলে রাখি, তথ্য প্রযুক্তি (মধ্যস্থতাকারী নির্দেশিকা ও ডিজিটাল মিডিয়া এথিক্স কোড) বিধিমালা, ২০২১-এর বিধি ৪(১)(ঘ) অনুযায়ী প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে যে, এই ২৯ লক্ষেরও বেশি অ্যাকাউন্টের মধ্যে ১,০৩৮,০০০ টি অ্যাকাউন্টকে ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে কোনো রিপোর্ট পাওয়ার আগেই সক্রিয়ভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কোম্পানির মাসিক কমপ্লায়েন্স রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, গত জানুয়ারিতে ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপটি ভারতীয় ব্যবহারকারীদের থেকে মোট ১,৪৬১ টি অভিযোগ পেয়েছে। এর মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপ মাত্র ১৯৫ টির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, ২০২১ সালে কার্যকর হওয়া নতুন তথ্য প্রযুক্তি আইন অনুসারে, প্রতি মাসে কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট প্রকাশ করা, প্রাপ্ত অভিযোগের বিবরণ এবং গৃহীত পদক্ষেপের বিবরণ উল্লেখ করা বড়ো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলির (পাঁচ মিলিয়নেরও বেশি ব্যবহারকারী) জন্য একান্ত আবশ্যক। সেক্ষেত্রে প্রথম দিকে এই কাজ করতে মেটা মালিকানাধীন সংস্থাটি প্রচুর টালবাহানা করেছিল। তবে অবশেষে সরকারের নির্দেশ মেনে তারা এই ধরনের মাসিক রিপোর্ট প্রকাশ করতে শুরু করেছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। তাই প্ল্যাটফর্মটির মারফত কোনো অসৎ কার্যকলাপ করলে ভবিষ্যতেও যে নিশ্চিতভাবে লক্ষ লক্ষ ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট ব্যান করা হবে, সেকথা খুব স্পষ্টভাবেই বোঝা যাচ্ছে।

প্ল্যাটফর্ম কর্তৃক প্রদত্ত শর্তাবলী লঙ্ঘনকারী ইউজারদেরকে কোনোমতেই রেহাই দেবে না WhatsApp

অ্যাকাউন্ট ব্যানের প্রসঙ্গে WhatsApp-এর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন যে, এই এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপ্টেড মেসেজিং পরিষেবা প্রদানকারী প্ল্যাটফর্মে ব্যবহারকারীদের সুরক্ষা এবং গোপনীয়তাকে যথেষ্ট অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। তাই কোম্পানিটি বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি সহ অন্যান্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, ডেটা সায়েন্টিস্ট তথা বিশেষজ্ঞ, এবং এই সংক্রান্ত প্রক্রিয়ায় ধারাবাহিকভাবে বিনিয়োগ করে চলেছে। তদুপরি, কোনো অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে বারংবার রিপোর্ট বা ব্লকিং জাতীয় প্রতিক্রিয়া এলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপও নিয়ে থাকে সংস্থার সিকিউরিটি রিসার্চার টিম। অর্থাৎ এককথায় বললে, এই বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মটিতে কোনোরকমের দুরাচরণ বা দুর্ব্যবহার যে কোম্পানির তরফ থেকে একেবারেই বরদাস্ত করা হবে না, সেকথা জলের মতো স্পষ্ট। ফলে প্ল্যাটফর্মটি কর্তৃক প্রদত্ত শর্তাবলী লঙ্ঘনের চেষ্টা করলে ভবিষ্যতেও লক্ষ লক্ষ WhatsApp অ্যাকাউন্ট নিশ্চিতভাবে নিষিদ্ধ হবে বলেই ধরে নেওয়া যেতে পারে।

সঙ্গে থাকুন ➥