বর্ষায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে মোটরসাইকেলের চেইন পরিষ্কার ও লুব্রিকেট করুন এই পদ্ধতিতে

Published on:

Motorcycle chain cleaning and maintenance tips in monsoon

বর্ষার দিন আসতেই বৃষ্টিতে হামেশাই জলমগ্ন হয়ে পড়ে আমাদের এই শহর। এমন জলে ডোবা রাস্তায় মোটরসাইকেল নিয়ে বেরোতে হলে প্রয়োজন বাড়তি যত্নের। এমনি দিনে সমস্ত বাইকে ওপেন চেইন সেট আপ থাকে সেগুলিতে প্রতি ৫০০-৬০০ কিমি পর চেইন পরিষ্কার ও লুব্রিকেট করার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু বৃষ্টির সময় এই চেনের জন্য বাড়তি নজরদারির প্রয়োজন। রাস্তার জলে মিশে থাকা ধুলো-ময়লা সমস্ত কিছুই চেইনের সঙ্গে লেগে তা ভেতরের চেইন স্প্রকেটে চলে যায়। এমনকি দীর্ঘ সময় জলে ডোবা অবস্থায় থাকলে চেইনের প্রতিটি দাঁতের সংযোগস্থলে থাকা অঞ্চলগুলি নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে কমে আসে চেইনের আয়ু। তাই এই প্রতিবেদনে বর্ষাকালে মোটরসাইকেলের চেইন পরিষ্কার ও লুব্রিকেট করার সহজ পদ্ধতির সন্ধান রইল।

বর্ষায় মোটরসাইকেলের চেইনের যত্ন

বাইকের ধোয়া-মোছা শেষ হওয়ার পর সেন্ট্রাল স্ট্যান্ড কিংবা প্যাডলক স্ট্যান্ডের মাধ্যমে পিছনের চাকাটি খানিকটা তোলা অবস্থায় দাঁড় করাতে হবে। এই অবস্থায় মোটরসাইকেল যেন মাটির উপর সঠিকভাবে রাখা হয়। কাজ শুরুর আগে চেইন পরিষ্কার করার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম হাতের কাছে রাখা প্রয়োজন। এর মধ্যে রয়েছে চেইন ক্লিনার, চেইন ক্লিনিং ব্রাশ, পরিষ্কার সুতির কাপড় এবং চেইন লুব্রিকেটিং ওয়েল।

এরপর এক হাতের সাহায্যে বাইকের পেছনের চাকা ধীরে ধীরে ঘোরাতে হবে। এই সময় অন্য হাত দিয়ে চেইনের উপরিভাগে এই চেইন ক্লিনার অল্প করে স্প্রে করে যেতে হবে। মনে রাখতে হবে সম্পূর্ণ চেনে যেন এই ক্লিনার লাগানো হয়। বাজার চলতি বিভিন্ন সংস্থার তৈরি চেইন ক্লিনার এখন কিনতে পাওয়া যায়। এর পরিবর্তে কেরোসিন তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। চেইন ক্লিনার স্প্রে করার পর খানিকক্ষণ এই অবস্থায় বাইকটিকে রেখে দিতে হবে। এর ফলে এই ক্লিনারের মধ্যে থাকা তৈলাক্ত অংশগুলি চেইনের ভিতরের অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারবে অতি সহজেই।

এরপর চেইন ক্লিনিং ব্রাশ দিয়ে পুরো চেইন পরিষ্কার করতে হবে। সম্পূর্ণ কাজটি তাড়াহুড়ো করে সম্পন্ন করতে গেলে অসুবিধা হতে পারে। এমনকি এই কাজ করার সময় এক হাত দিয়ে পিছনের চাকা ধীরে ধীরে ঘোরাতে পারলে ভালো। কোনো পরিস্থিতিতে মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন চালু অবস্থায় এই কাজ করতে গেলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ক্লিনিং ব্রাশের সাহায্যে পুরো চেইন ভালো করে ঘষে ঘষে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর পরিষ্কার কাপড়ের সাহায্যে পুরো চেইন মুছে নিতে পারলেই চেইন পরিষ্কার করার কাজ সম্পূর্ণ। এই সময় প্রয়োজনে উপরের প্রক্রিয়াটি পুনরায় করতে হতে পারে।

চেইন পরিষ্কার করা হয়ে গেলেই এবার পালা লুব্রিকেশনের। বাজারে বিভিন্ন সংস্থার তৈরি নানাবিধ চেইন লুব্রিকেশন কিনতে পাওয়া যায়। নিজের পছন্দমত ব্র্যান্ড বেছে নিয়ে তা দিয়ে প্রথমে চেনের বাইরের অংশে স্প্রে করতে হবে। এরপর খানিকক্ষণ অপেক্ষা করে চেইনের ভিতরের দিকে স্প্রে করুন। এক্ষেত্রে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে চেইন লুব্রিকেশন সম্পূর্ণ হলেই তৎক্ষণাৎ মোটরসাইকেল না চালানোই শ্রেয়। বরং খানিকক্ষণ এই অবস্থায় বাইকটিকে রেখে দিতে হবে। চেইনের কোথাও অতিরিক্ত লুব্রিকেশন হয়ে গেলে কাপড়ের সাহায্যে তা মুছে ফেলুন।

চেইনের লুব্রিকেশন করার জন্য অনেক সময় ৯০ গ্রেড অয়েল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এগুলি বহুকাল থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে। সাধারণত পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন দোকানে কিনতে পাওয়া যায়। বাজার চলতি চেইন লুব্রিকেশন তেলের তুলনায় এই ৯০ গ্রেডের তেল অনেকটাই পকেট সাশ্রয়ী। আরেকটি বিষয় এক্ষেত্রে মাথায় রাখা উচিত চেইন পরিষ্কার করার জন্য অনেকে পেট্রোল ব্যবহার করতে পছন্দ করেন। এটি কিন্তু চেইনের জন্য আদতে ক্ষতিকারক। চেইনের সংযোগস্থলে লাগানো “O” আকৃতির রিং যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয় পেট্রোলের সংস্পর্শে এসে।

সঙ্গে থাকুন ➥