চীনকে টেক্কা, ভারতে ব্যবহৃত ৯৭ শতাংশ ফোন মেড ইন ইন্ডিয়া, জানাল কেন্দ্র

Avatar

Published on:

97% Phones Used in Country Made in India

স্মার্টফোন উৎপাদনে এখন ‘আত্মনির্ভর’ ভারত; এদেশে ব্যবহৃত ৯৭ শতাংশেরও বেশি ফোন ভারতেই তৈরি – গত বুধবার অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ORF) কর্তৃক আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় এই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর (Rajeev Chandrasekhar)। তাঁর কথায়, ২০১৪ সালে দেশে যত ফোন ব্যবহার করা হতো, তার ৯২ শতাংশেরও বেশি ছিল আমদানিকৃত। কিন্তু চলতি সময়ে ছবিটা পুরোপুরিভাবে পাল্টে গিয়েছে; বর্তমানে ভারতে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের ৯৭ শতাংশেরও বেশি এদেশেই তৈরি হচ্ছে (মেড ইন ইন্ডিয়া)। শুধু তাই নয়, এখন ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের (৯৮,৮০০ কোটি টাকা) ইলেকট্রনিক ডিভাইস রপ্তানি করা হয়। ফলে আমাদের দেশমাতৃকা যে প্রকৃতপক্ষেই ধীরে ধীরে আত্মনির্ভর হয়ে উঠছে, সেকথা বলাই বাহুল্য।

ফেব্রুয়ারিতে বাজেট অধিবেশনে পেশ করা হতে পারে নতুন তথ্য সুরক্ষা বিল

এর পাশাপাশি উক্ত অনুষ্ঠানে আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর আলোকপাত করেছেন রাজীব চন্দ্রশেখর। তিনি জানিয়েছেন যে, গোপনীয়তার অধিকার এবং তথ্য সুরক্ষা ভারতে মৌলিক অধিকার হিসেবে বিবেচ্য। তাই তথ্য সুরক্ষা বিলটি এই অধিকারগুলিকে স্বীকৃতি দিতে এবং সংরক্ষিত করার ক্ষেত্রে খুব প্রগতিশীল হবে। তাঁর কথায়, নতুন তথ্য সুরক্ষা আইন খুবই সহজ ও আধুনিক হতে চলেছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে বাজেট অধিবেশন চলাকালীন এটি সংসদে পেশ করা হতে পারে। তিনি আরও বলেছেন যে, ভারত ওয়েব ৩.০-তে নেতৃত্ব নিতে আগ্রহী। তবে, এর জন্য অনলাইন গেমিং এবং ক্রিপ্টো সম্পর্কিত সমস্যাগুলির সমাধান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

খুব শীঘ্রই ভারত হয়ে উঠবে বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং হাব

এসবের পাশাপাশি ভারতে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনের ভবিষ্যৎ নিয়ে বড়ো বার্তা দিয়েছেন চন্দ্রশেখর। তাঁর কথায়, খুব শীঘ্রই আমাদের দেশ সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হতে চলেছে। উল্লেখ্য, ২০১৪ সাল থেকেই ভারত সেমিকন্ডাক্টরের ক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রগতি অর্জন করেছে। তবে ২০২৬ সালের মধ্যে এদেশের সেমিকন্ডাক্টর উপকরণের বাজার ৩০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের (২৩,৬৭,২৮৪ কোটি টাকা) গন্ডি ছাড়াবে বলে জানা গিয়েছে, আর এর জন্য মূলত ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্প তথা ‘প্রোডাকশন লিঙ্কড ইনসেন্টিভ’ (PLI) স্কিমের সাফল্যকেই দায়ী করা হচ্ছে। ফলে দেশে উপযুক্ত সেমিকন্ডাক্টর ইকোসিস্টেম গড়ে উঠলে ভারতকে আর কোনোভাবেই আমদানি করা সেমিকন্ডাক্টর দ্রব্যের উপর নির্ভর করতে হবে না, এবং এর সুবাদে খুব শীঘ্রই ভারত হয়ে উঠবে বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং হাব।

চাহিদা বাড়ায় দেখা দিয়েছে ঘাটতি, সমস্যা মিটলেই আবারও উপলব্ধ হবে iPhone 14 Pro

সম্প্রতি ভারতের বাজারে আইফোন ১৪ প্রো (iPhone 14 Pro) মডেলটি পা রাখলেও, ভারতবাসীর হাতের মুঠোয় আসছে না। আসলে সম্প্রতি এক রিপোর্টে জানা গিয়েছে যে, হালফিলে দিল্লি এনসিআরে আইফোন ১৪ প্রো ফোনটি ‘আউট অফ স্টক’ হওয়ায় এখন আর সেখানকার বাসিন্দারা হ্যান্ডসেটটি কিনতে পারছেন না। ইতিমধ্যেই টুইটার (Twitter)-এ বহু ব্যবহারকারী অভিযোগ করেছেন যে, এই সুযোগের ফায়দা তুলে অনেক প্রাইভেট সেলার দিল্লিতে এই ফোনটি ব্ল্যাকে বিক্রি করছে। তবে ঠিক কী কারণে ঘটছে এরকম ঘটনা? অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ORF) কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানটিতে এ বিষয়ে খোলসা করে নিজের মতামত জানালেন রাজীব চন্দ্রশেখর। তাঁর বিবৃতি অনুযায়ী, মূলত চাহিদা বাড়ায় সাপ্লাইয়ে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তিনি ইতিমধ্যেই বিষয়টি সম্পর্কে অ্যাপল (Apple)-এর সাথে কথা বলেছেন, এবং সংস্থার তরফে প্রাপ্ত জবাবের পরিপ্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন চন্দ্রশেখর।

আগামী দিনে দেশে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতে পারে স্যাটেলাইট নির্ভর ইন্টারনেট পরিষেবা

২জি (2G), ৩জি (3G), ৪জি (4G), আর এখন ৫জি (5G) – প্রযুক্তিগতভাবে দেশ যতই এগিয়ে যাক না কেন, এখনও কিন্তু আপামর জনগণ ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রায়শই সমস্যার মুখোমুখি হন। তাই আগামী দিনে গ্রাহকরা যাতে দেশের প্রত্যেকটি প্রান্তে সমানভাবে ইন্টারনেট পরিষেবা খুব সহজেই পেতে পারেন, তার জন্য স্যাটেলাইট নির্ভর ইন্টারনেট সার্ভিসের ওপর ভারতকে বিশেষ মনোনিবেশ করতে হবে বলে জানিয়েছেন রাজীব চন্দ্রশেখর। ভারতে যথাযথভাবে এই পরিষেবার আগমন ঘটলে দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষ বিশেষভাবে উপকৃত হবেন। উল্লেখ্য, ইন্ডিয়া স্পেস কংগ্রেস ২০২২-এ চন্দ্রশেখর বলেছিলেন যে, ২০২৫-২৬ সালের মধ্যে ১২০ কোটি ভারতীয়কে যথোপযুক্ত ইন্টারনেট সার্ভিস প্রদান করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্র, আর এই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে ইতিমধ্যেই রিলায়েন্স জিও (Reliance Jio), ওয়ানওয়েব (OneWeb)-এর মতো সংস্থাগুলি জোরকদমে কাজ করা শুরু করেছে।

সঙ্গে থাকুন ➥