ISRO: পৃথিবীর বুকে জ্বলজ্বল করছে ভারত, ইসরোর মহাকাশ থেকে তোলা ছবি দেখে বিস্মিত সবাই

Avatar

Published on:

ISRO's EOS-06 Satellite Captures Images

মঙ্গল-অভিযান মিশনের সফলতার পর ‘ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন’ বা ইসরোর (ISRO) নাম বিশ্বজুড়ে নাম ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি তাদের এই কীর্তিকে সাধুবাদ জানাতে একটি ফিল্ম অবধি তৈরী করে ফেলা হয়। কিছুমাস আগে আবার মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি একসঙ্গে ৩৬টি উপগ্রহকে মহাকাশে প্রেরণ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয়। এরপর গতপরশু মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারে তারা একটি অত্যাশ্চর্য মোজাইক ইমেজ প্রকাশ করে। যেখানে রাতে মহাকাশ থেকে পৃথিবীকে কেমন দেখতে লাগে তা দেখানো হয়েছে। জানিয়ে রাখি, ‘ওশান কালার মনিটর’ (OCM) ব্যবহার করে ‘আর্থ অবজারভেশন স্যাটেলাইট’ (EOS-06) বা নামফেরে ওশানস্যাট-৩ (OceanSat-3) উপগ্রহটি আমাদের ভূখণ্ডের এই নতুন ছবি তুলে পাঠিয়েছে। আর উপগ্রহগুলি দ্বারা প্রেরিত এই ডেটা থেকে মোজাইক তৈরী করেছে ‘ন্যাশনাল রিমোট সেন্সিং সেন্টার’ (NRSC)।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৬শে নভেম্বর ইসরো (ISRO), PSLV-C54 মিশনের অংশ হিসাবে ওশানস্যাট-থ্রি নামের একটি ন্যানো স্যাটেলাইট বা উপগ্রহকে মহাকাশে পাঠিয়েছিল। এটিকে মূলত সমুদ্রবিদ্যা এবং বায়ুমণ্ডলীয় গবেষণা পরিচালনার উদ্দেশ্যেই উৎক্ষেপণ করা হয়। আর সেই মতোই, সম্প্রতি এই উপগ্রহের মাধ্যমেই ভারত (India) ও তার পার্শ্ববর্তী দেশগুলির কিছু ছবি সংগ্রহ করা হয়েছে। এই সকল প্রাপ্ত ডেটা থেকে মোজাইক উৎপন্ন করার দায়িত্বে ছিল NRSC। প্রতিটি মোজাইক ৩০০ জিবি ডেটা প্রক্রিয়াকরণের পরে ২,৯৩৯টি ছবিকে একত্রিত করেছে। যার মধ্যে কিছু ছবিতে রাতের অন্ধকারে মহাকাশ থেকে ভারতকে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান এবং জ্বলজ্বল করতে দেখা গেছে।

ইসরো দ্বারা টুইটারে শেয়ার করা মোজাইক বা ছবিগুলিতে ভারতের মন্ত্রমুগ্ধকর দৃশ্য দেখে রীতিমতো হতবাক নেটিজেনরা। ভাইরাল হওয়া ছবিগুলির বিষয়ে কেউ লিখেছেন, “এই বিষয়গুলিই ভারতীয় হিসাবে আমাদের গর্বিত করে।” আরেকজন মন্তব্য করেছেন, ”ছবিগুলো মন ছুঁয়ে গেছে।” আবার অন্য এক টুইটার ব্যবহারকারী – “মহাকাশ থেকে জ্বলজ্বল করছে আমাদের ভারত” লিখে ইসরোর তারিফ করেছে। কেউ কেউ স্যাটেলাইট ছবিগুলিতে রাতের ভারতকে দেখে পৃথিবীর ‘নাইট লাইট’ হিসাবে আখ্যায়িত করেছে।

প্রসঙ্গত ইসরোর বিজ্ঞানীদের দাবি অনুসারে, গত ২৫ বছরের মধ্যে এবার পৃথিবী তথা ভারতের সবচেয়ে পরিষ্কার ছবি পাওয়া গিয়েছে। আর সংগৃহীত এই সকল ছবি ও ডেটা “গবেষণা চালানোর ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়ক হবে” বলেও মন্তব্য করা হয়েছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটির তরফ থেকে।

এক্ষেত্রে জানিয়ে রাখি, ‘ওশান কালার মনিটর’ (OCM) আমাদের গ্রহটিকে ১৩টি স্বতন্ত্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যে (wavelengths) ভাগ করে। এইসকল তরঙ্গদৈর্ঘ্য প্রতিফলিত হয়ে যে ডেটাগুলি আসে তার পরিপ্রেক্ষিতে – ল্যান্ড বা ভূমি, গাছপালা, সমুদ্র বা মহাসাগর ইত্যাদিকে আলাদা করে চিহ্নিত করা যায়। ফলে তথ্য সংগ্রহের কাজ আরো সহজসাধ্য এবং নির্ভুল হয়। তদুপরি একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে ইসরো প্রদত্ত ছবিগুলিতে বিভিন্ন মহাদেশকে পৃথক রঙের সাথে দেখা গেছে। মূলত তরঙ্গদৈর্ঘ্যের তারতম্যের কারণেই এমনটা হয়েছে।

তরঙ্গদৈর্ঘ্যের কথা যখন উঠলো তখন জানিয়ে রাখি, ওশানস্যাট-৩ (OceanSat-3) স্যাটেলাইটকে মোট চারটি প্রধান যন্ত্রের সাথে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। এগুলি হল – ওশান কালার মনিটর (OCM-3), সী সারফেস টেম্পারেচার মনিটর (SSTM), কু-ব্যান্ড স্ক্যাটারোমিটার (SCAT-3), এবং ARGOS। এগুলি উপগ্রহটিকে স্বতন্ত্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যের মাধ্যমে পৃথিবীকে পর্যবেক্ষণ করার অনুমতি দেয়।

সঙ্গে থাকুন ➥