Flex Fuel Vehicle: পেট্রল ও ইথানলের সমন্বয়ে বা পুরোদস্তুর জৈব জ্বালানিতে চলবে ইঞ্জিন, শীঘ্রই এমন গাড়ি আসছে বাজারে

Avatar

Published on:

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলা সামরিক সংঘাতের জেরে আর্ন্তজাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ফলে ভারতের মতো জ্বালানি আমদানি নির্ভর দেশগুলির কোষাগারের উপরে ক্রমশ চাপ বাড়ছে। তেল আমদানি খাতে খরচ বৃদ্ধির পাশাপাশি সরবরাহ নিয়েও সংশয় কাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে ফের একবার শিল্পমহলকে পুরোপুরি পেট্রল-ডিজেলের মতো প্রথাগত জ্বালানির পাশাপাশি বায়ো-ফুয়েল বা জৈব জ্বালানিতে চলার মতো ফ্লেক্স-ফুয়েল (Flex-Fuel) বা ফ্লেক্সিবেল ফুয়েল (পেট্রল + ইথানল/মিথানল) ইঞ্জিনযুক্ত গাড়ি নিয়ে আসার বার্তা দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতীন গডকড়ী (Nitin Gadkari)।

এদিন এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে তিনি জানান, সরকার দেশের গণপরিবহন ব্যবস্থাকে ১০০ শতাংশ পরিবেশবান্ধব শক্তিতে চালানোর পরিকল্পনা করছে। গডকড়ী আরও বলেন, সম্প্রতি ভারতের সমস্ত গাড়ি প্রস্তুতকারীদের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং এবং সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়াম (SIAM)-এর প্রতিনিধিরা তাঁকে আশ্বাস দিয়েছে যে, ছ’মাসের মধ্যে তারা এক বা একাধিক বিকল্প জ্বালানি চালিত গাড়ির উৎপাদন শুরু করবে।

প্রসঙ্গত, জ্বালানি আমদানি কমাতে সরকার যে বদ্ধপরিকর, সেই নিয়ে গত বছরের ডিসেম্বরে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছিল কেন্দ্র। একটি অ্যাডভাইজরি বা পরামর্শ বার্তা প্রকাশ করে তখন বলা হয়, ছ’মাসের মধ্যে সংস্থাগুলিকে ভারতে ফ্লেক্স ফুয়েল ইঞ্জিনযুক্ত গাড়ি নিয়ে আসতে হবে। কিন্তু, ২০২০ সালে নতুন ভারত স্টেজ-৬ বিধি অনুযায়ী গাড়ি উৎপাদন বাধ্যতামূলক হওয়ার পর ফের নতুন করে জৈব জ্বালানির জন্য তড়িঘড়ি ফ্লেক্স-ইঞ্জিন তৈরির লগ্নি করতে কেন চাপ দিচ্ছে সরকার, সেই নিয়ে শিল্পমহলও সংশয়ে।

যদিও গডকড়ীর দাবি, ইতিমধ্যেই বাজাজ এবং টিভিএস তাদের দু’চাকা ও তিন চাকা গাড়ির জন্য এমন ইঞ্জিনের উৎপাদন শুরু করেছে। তিনি যোগ করেন, চাল, ভুট্টা, এবং আখের রস থেকে কৃষকেরা বায়োইথানল তৈরি করছেন৷ শীঘ্রই ভারতের সিংহভাগ গাড়ি পুরোপুরি এই ধরনের জৈব জ্বালানিতে চলতে পারবে।

বিকল্প জ্বালানির ব্যবহারে গডকড়ীর আরও যুক্তি, বর্তমানে জ্বালানি তেল আমদানিতে কেন্দ্রের খরচ হয় ৮ লক্ষ কোটি টাকা এবং আগামী পাঁচ বছরে সেটা ২৫ লক্ষ কোটিতে পৌঁছতে পারে। সে ক্ষেত্রে ইথানল বা জৈব জ্বালানির ব্যবহার বাড়ালে দেশের উদ্বৃত্ত খাদ্যশষ্যকে কাজে লাগানো যাবে এবং তেল আমদানির খরচ কমতে থাকবে। এই ধরনের জ্বালানি পেট্রলের চেয়ে কম দূষণ সৃষ্টি করে। ফলে পরিবেশের পক্ষেও ভাল। আবার  জৈব জ্বালানিতে গাড়ি চালাতে পারলে সুরাহা হবে গাড়ি মালিকদের। কারণ, ইথানলের দাম পেট্রলের চেয়ে অনেক কম।

প্রসঙ্গত,  ব্রাজিল, কানাডা, আমেরিকা এবং সুইডেনে ফ্লেক্স ফুয়েল ইঞ্জিনযুক্ত গাড়ির চল অনেক দিন ধরেই। ব্রাজিলের ৫০ শতাংশের বেশি গাড়ি ফ্লেক্স ফুয়েলে চলে। এই দেশগুলিতে ব্যবহারকারীরা গাড়িতে ১০০ শতাংশ গ্যাসোলিন (পেট্রল) বা ১০০ শতাংশ বায়ো-ইথানল ভরতে পারেন। তবে বর্তমানে ভারতে পেট্রলে ৮.৫ শতাংশ ইথানল মেশানো যায়।  চলতি বছর অবশ্য সেটা ১০ শতাংশ করার পরিকল্পনা কেন্দ্রীয় সরকারের।

সঙ্গে থাকুন ➥