Smartphones: নতুন ফোনের তুলনায় চাহিদা বাড়ছে রিফারবিশড স্মার্টফোনের, সস্তাই কারণ?

Published on:

২০২১ সালে নতুন ফোনের বিক্রি যেখানে মাত্র ৪.৫% বেড়েছে, সেখানে গত বছর রিফারবিশড স্মার্টফোনের বাজার শক্তিশালী ভিত তৈরি করেছিল বলে সম্প্রতি কাউন্টারপয়েন্ট (Counterpoint) দাবি করেছে। এই গ্লোবাল টেক রিসার্চ ফার্মটির রিপোর্ট অনুসারে, ভোক্তাদের মধ্যে ৫তম প্রজন্মের ব্রডব্যান্ড সেলুলার নেটওয়ার্ক বা সংক্ষেপে 5G সমর্থিত স্মার্টফোনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা, গত বছর রিফারবিশড হ্যান্ডসেটের বিক্রয়কার্যকে অনেকটাই ত্বরান্বিত করেছিল। কেননা, বহু গ্রাহক তাদের বিদ্যমান ফোনকে আপগ্রেড করে এই ‘নেক্সট জেনারেশন’ মোবাইল নেটওয়ার্কিং বিকল্পের সাথে আসা মডেল কেনার প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে। ফলে এই ইচ্ছাকে বাস্তবায়িত করার জন্য যে আর্থিক সামর্থ থাকা দরকার, তা নিশ্চিত করতে অনেকে ট্রেড-ইন ডিলের প্রতি আস্থা রেখেছিল। আর এই প্রকারের ডিলের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাওয়ার দরুন, সংস্থাগুলিও তাদের ফোনের ইনভেন্টরি বাড়িয়েছে, যেগুলিকে রিফারবিশড হিসাবে পুনর্ব্যবহার করা যেতে পারে।

রিফারবিশড বা সংস্কারকৃত স্মার্টফোন কি?

আপনাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো ‘রিফারবিশড ফোন’ শব্দের সাথে পরিচিত নন। তাদের জানিয়ে রাখি, রিফারবিশড বা সংস্কারকৃত স্মার্টফোন দু’প্রকারের হয়। যার মধ্যে একটি সেকেন্ড হ্যান্ড বা ব্যবহৃত ফোন। আর অপর প্রকারটি, নতুন হলেও তাতে ম্যানুফ্যাকচার জনিত ত্রুটি থাকে। দু’ক্ষেত্রেই এই সকল স্মার্টফোনকে প্রস্তুতকারকের কাছে ফেরত পাঠানো হয়। যারপর, প্রস্তুতকারক অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিকভাবে ফোনগুলির অবস্থা পরীক্ষা করে৷ আর সমস্যাগুলি নিরুপন করার মাধ্যমে তা মেরামত করে, যাতে ডিভাইসগুলি নতুনের মতো মনে হয়। তবে, ডিভাইসগুলি ‘সেকেন্ড-হ্যান্ড’ হওয়ায় বিক্রয় মূল্য তুলনায় কম রাখা হয়। এক্ষেত্রে পুরোনো হওয়া বা ত্রুটি থাকা নিয়ে যদি আপনাদের মনে দ্বিধা তৈরি হয় তবে বলে দিই, রিফারবিশড বা সংস্কারকৃত এই ফোনগুলি সংস্থা দ্বারা সার্টিফাইড হয় এবং বিক্রির সময়ে এগুলির সাথে ওয়ারেন্টিও দেওয়া হয়। ফলে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ফোনে কোনো সমস্যা দেখা দিলে আপনাকে অতিরিক্ত গ্যাঁটের কড়ি খরচ করতে হবে না। প্রসঙ্গত, স্যামসাং (Samsung) কয়েকদিন আগে তাদের অনলাইন স্টোরে উপলব্ধ রিফারবিশড হ্যান্ডসেটের রি-নিউড লাইনে তিনটি নতুন ফোন যুক্ত করেছিল। এগুলি হল – Samsung Galaxy S21 5G, Galaxy S21+ 5G এবং Galaxy S21 Ultra 5G।

যাইহোক, কাউন্টারপয়েন্টের রিপোর্ট অনুসারে, ২০২১ সালে, স্যামসাংয়ের (Samsung) পর অ্যাপল (Apple) ছিল রিফারবিশড ফোনের বাজারে ‘সেকেন্ড মোস্ট’ জনপ্রিয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ড। কথিত দুটি স্মার্টফোন নির্মাতা গত বছর তাদের রিফারবিশড বা সংস্কারকৃত ফ্ল্যাগশিপ হ্যান্ডসেটগুলির জন্য ইয়ার-অন-ইয়ার (YoY) গ্রোথে ব্যাপক বৃদ্ধি লক্ষ্য করেছিল। যার ফলাফল স্বরূপ, উভয় ব্র্যান্ডই বর্তমানে ট্রেড-ইন কালেকশনের প্রতি বিশেষভাবে মনোনিবেশ করেছে। রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, সেকেন্ডারি মার্কেটে সংস্কার করা হ্যান্ডসেটের কিছু জনপ্রিয় মডেলের দাম ‘লঞ্চ প্রাইজ’ এর তুলনায় প্রায় ৬০% পর্যন্ত কম থাকায় গ্রাহকেরা লাভজনক ডিল অ্যাক্সেস করতে পারছেন, যা সংস্থাগুলির বার্ষিক আয়ে যথেষ্ট বৃদ্ধি ঘটেছে।

তদুপরি, গত দু’বছরে বিবিধ পরিস্থিতির কারণে বিশ্বব্যাপী চিপ এবং কম্পোনেন্টের অভাবজনিত সমস্যা দেখা দিয়েছে। যা পূরণ করতে এখন বহু নামিদামি গ্লোবাল রিটেলার সংস্থা, যারা নতুন ডিভাইস বিক্রির জন্য পরিচিত ছিল, তারাও এখন সংস্কারকৃত ফোন অফার করছে বলে জানা গেছে। সাম্প্রতিক রিপোর্টের উল্লেখ করা হয়েছে যে, ২০২১ সালে ২৯% অধিক রিফারবিশড ফোনের বিক্রি হওয়ার সাথে সর্বাধিক YoY-গ্রোথ দেখেছিল ল্যাটিন আমেরিকা। তারপর, দ্বিতীয় বৃহত্তম স্মার্টফোন বাজার ভারতে সংস্কারকৃত ফোনের বিক্রয়কার্য ২৫% বৃদ্ধি পেয়েছিল। অন্যদিকে, বার্ষিক রেভেনিউ বা আয়ের ক্ষেত্রে ১৫% প্রবৃদ্ধি হওয়ার দরুন তৃতীয় স্থানে অবস্থান করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর, সর্বশেষে, সংস্কারকৃত ফোনের বৃহত্তম বাজার চীন, রিফারবিশড ফোনের সেলের ক্ষেত্রে ১০% বৃদ্ধি দেখেছিল।

সঙ্গে থাকুন ➥