সাম্প্রতিক সময়ে কৃষক আন্দোলনের জেরে উত্তাল গোটা ভারত, সরগরম বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলিও। কিন্তু এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ভারত সরকার এবং টুইটার (Twitter) কর্তৃপক্ষের মধ্যে যে বিবাদ শুরু হয়েছে তার জল গড়িয়ে কোথায় গিয়ে থামবে সে হদিস কারো কাছেই নেই! আসলে কৃষক আন্দোলন বিষয়ক কিছু টুইট ও টুইটার অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলার জন্য টুইটারের কাছে সুপারিশ করেছিল সরকার; কিন্তু সাময়িকভাবে কিছু অ্যাকাউন্ট বন্ধ রাখলেও ইউজারের মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা সংস্থার পলিসিতে নেই – একথা জানিয়ে ফের সেইসব অ্যাকাউন্ট চালু করে দেয় টুইটার। আর তাতেই ক্ষুব্ধ হয় মোদী সরকার। ইতিমধ্যে টুইটারকে আইটি (IT) আইনের ৬৯এ ধারা মনে করিয়ে দিয়ে কড়া নোটিশও পাঠানো হয়েছে সরকারের তরফে। কিন্তু ঘটনা এখানেই শেষ নয়! কারণ এই সংঘাতের আবহে টুইটারকে আরও চাপে ফেলতে, কেন্দ্র ‘কো’ (Koo) নামে একটি দেশীয় অ্যাপকে সামনে নিয়ে আসতে চাইছে।
কি এই Koo?
Koo – টুইটারের মতই একটি ভারতে তৈরি সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল যা আদতে আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্পের অংশ। সেক্ষেত্রে এক বছর আগে তৈরি হওয়া এই অ্যাপটিকে, ভারতের ইনফরমেশন অ্যান্ড টেকনোলজি মন্ত্রক এখন প্রচারের আলোয় নিয়ে আসার জন্য ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে। ইতিমধ্যে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রক এই অ্যাপটিতে অ্যাকাউন্ট খুলতেও শুরু করেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের তো প্রায় ৪.২৯ লক্ষ ফলোয়ারও আছে এই সাইটে। তাছাড়া সাধগুরু, অনিল কুম্বলে, জাভাগল শ্রীনাথের মত অনেক জনপ্রিয় মুখই এই সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হয়েছেন।
কার্যকারিতার কথা বললে বিভিন্ন ক্ষেত্রেই এই Koo এবং Twitter-এর মধ্যে মিল রয়েছে৷ ইউজাররা, এখানেও টুইটারের মতই বিভিন্ন বিষয়ে মতামত বা স্ট্যাটাস আপডেট দিতে পারেন। কিন্তু এই অ্যাপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হল যে এটি ভারতের বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় ব্যবহার করা যায়।
কিভাবে Koo অ্যাপটি ব্যবহার করবেন?
• আগ্রহীদের বলে রাখি, এই দেশীয় টুইটারটি ব্যবহার করতে হলে, প্রথমেই প্লে-স্টোর বা কোনো অ্যাপ স্টোর থেকে কো অ্যাপটি ইন্সটল করতে হবে।
• এরপর সেখানে নিজের ফোন নম্বর টাইপ করে এন্টার করলেই আসবে একটি ওটিপি কোড।
• ওই ওটিপি রেজিস্টার করলেই কো অ্যাকাউন্ট খুলে যাবে।
তাহলে কি TikTok, PUBG Mobile-এর মত এবার ভারতে বন্ধ হয়ে যাবে Twitter-ও?
গত বছর থেকেই ভারত সরকার, বিভিন্ন বিনোদন বা সোশ্যাল সাইটের পালটা হিসেবে নানা দেশীয় অ্যাপের প্রবর্তনকে উৎসাহিত করে আসছে। যার ফলে কখনো সামনে এসেছে Moj, Ropso, Chingari-র মত শর্ট ভিডিও মেকিং অ্যাপ্লিকেশন তো কখনো আবার দেশীয় ব্যাটেল গেম FAU-G। তাছাড়া হালফিল সময়ে WhatsApp-এর বদলে দেশীয় ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপ হিসেবে Sandes নামক অ্যাপ্লিকেশন চালু করার কথাও ভাবা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে যেহেতু টুইটারের সাথে এই মুহূর্তে ভারত সরকারের সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে, তাই টুইটারের ওপর সাময়িকভাবে নিষেধাজ্ঞার খাঁড়া যে নেমে আসতেই পারে, এ সম্ভাবনা এখনই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।