নতুন প্রাইভেসি পলিসি জাতীয় সুরক্ষার পরিপন্থী, WhatsApp এর বিরুদ্ধে পিটিশন জমা পড়লো দিল্লি হাইকোর্টে

Avatar

Published on:

সারা বিশ্ব, হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp)-এর নতুন প্রাইভেসি পলিসি নিয়ে চিন্তিত হলেও, ভারতবর্ষের ইউজারদের চোখে একটু বেশিই সন্দিহান হয়ে পড়েছে জনপ্রিয় মেসেজিং মাধ্যমটি। ফেসবুকের মালিকানাধীন প্ল্যাটফর্মটির পরিবর্তিত নীতিমালা নিয়ে ইতিমধ্যেই বহু জল্পনা বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। আশঙ্কিত হয়ে বহু ভারতীয় ইউজার, হোয়াটসঅ্যাপকে বিদায় জানিয়ে অন্য বিকল্প অ্যাপে সুই্যচ করেছেন। উঠেছে ‘বয়কট হোয়াটসঅ্যাপ’ স্লোগানও। এমনকি ভারতের ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন CAIT, অ্যাপটিকে এদেশে ব্যান করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে। কিন্তু এবার, ভারতে সরাসরি আইনি গেরোয় জড়িয়ে পড়ল হোয়াটসঅ্যাপ। রিপোর্ট অনুযায়ী, হোয়াটসঅ্যাপের নতুন প্রাইভেসি পলিসিতে ইউজারের গোপনীয়তা বিঘ্নিত হবে এই মর্মে ভারতীয় আদালতে সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অর্থাৎ এতদিন রোজকার ব্যস্ত জীবনে যে WhatsApp অপরিহার্য ছিল, এখন সেই প্রিয় সঙ্গীই হয়ে উঠেছে গলার কাঁটা। এই মুহূর্তে ভারতে হোয়াটসঅ্যাপের প্রায় ৪০০ মিলিয়ন সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে। তাই এদেশের বাজারে এই ধরণের সমস্যার মুখে পড়লে তা হোয়াটসঅ্যাপের জন্য মোটেও স্বস্তির বিষয় হবে না!

ভারতীয় আইনজীবী চৈতন্য রোহিলা, হোয়াটসঅ্যাপের নতুন নীতিমালা এবং এর বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে জমা পড়া পিটিশন সম্পর্কে বলেছেন যে – হোয়াটসঅ্যাপ, ইউজারের অ্যাকাউন্টটিকে কার্যত ৩৬০ ডিগ্রি প্রোফাইল বানিয়ে ফেলতে চাইছে, যাতে এটি ইউজারের সমস্ত অনলাইন অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাক করতে পারে। সেক্ষেত্রে হোয়াটসঅ্যাপ, তার নীতিমালার সাহায্যে এদেশের সমস্ত তথ্য সংরক্ষণ বা শেয়ার করে জাতীয় সুরক্ষা নষ্ট করতে পারে, এই আশঙ্কাতেই বিদেশী সংস্থাটির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

উল্লিখিত পিটিশনের একটি কপি ইতিমধ্যে সংবাদ মাধ্যম রয়টার্সের প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, ওই পিটিশনে বলা হয়েছে যে WhatsApp আমাদের গোপনীয়তা সংক্রান্ত মৌলিক অধিকারকে উপহাস করেছে। এই ধরণের স্বেচ্ছাচারী আচরণ ও কর্তৃত্ব কোনো গণতন্ত্রেই মেনে নেওয়া যায় না এবং এটি ভারতের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। আজ, অর্থাৎ শুক্রবার, দিল্লি হাইকোর্ট এই মামলার শুনানি করবে বলে জানা গেছে। তবে শুধু ভারতে নয়, তুরস্কেও হোয়াটসঅ্যাপ একই ধরণের সমস্যায় জড়িয়ে পড়েছে – এমনটাই বলছে রিপোর্ট।

এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো রকম মন্তব্য করেনি হোয়াটসঅ্যাপ। তবে এর আগে, বিশ্বজুড়ে সংস্থার প্রাইভেসি পলিসির সমালোচনা শুরু হওয়ায়, হোয়াটসঅ্যাপ জানিয়েছিল এই পলিসি ইউজারদের ব্যক্তিগত চ্যাটিংয়ের ওপর প্রভাব ফেলবে না এবং তারা ইউজারের ডেটা তৃতীয় পক্ষের সাথে শেয়ার করেনা। কিন্তু এতেও বিতর্ক থামেনি, বরঞ্চ পরিস্থিতি একইরকম থেকে গেছে। এখন আগামী দিনে হোয়াটসঅ্যাপের ওপর থেকে এই অস্বস্তির ছায়া সরে যাবে নাকি ক্রমশ অ্যাপটি ইউজারদের পছন্দের তালিকা থেকে বাদ পড়বে সেটাই দেখার!

সঙ্গে থাকুন ➥