Smartphone Repair: মোবাইল সারাইয়ের খরচ বাড়ছে, ১৫% কর চাপাচ্ছে সরকার

চলতি সময়ে জ্বালানির দামবৃদ্ধির পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধির জেরে রীতিমতো জেরবার হচ্ছে আমজনতা। তদুপরি, গোদের ওপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে একাধিক জরুরী তথা নিত্যব্যবহৃত পণ্যের ওপর সরকারের চাপানো কর, যার জেরে গতানুগতিক জীবন কাটানোও এখন আপামর জনসাধারণের কাছে রীতিমতো কষ্টকর হয়ে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে সম্প্রতি এক রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, এবার জনগণের কাঁধে চেপে থাকা করের বোঝা আর-একটু বাড়তে চলেছে, কারণ মোবাইল পার্টসের (Mobile Parts) ওপর ১৫ শতাংশ বেসিক কাস্টমস ডিউটি বা বিসিডি (BCD) আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর ফলে মোবাইল মেরামত করা আগের তুলনায় খানিকটা ব্যয়বহুল হতে চলেছে। তাই মোবাইল ডিসপ্লে থেকে শুরু করে সিম কার্ড ট্রে কিংবা পাওয়ার বাটন, যে-কোনো জিনিস সারাই করতে চাইলেই গ্রাহকদের আগের তুলনায় বেশ খানিকটা অতিরিক্ত গাঁটের কড়ি খসাতে হবে। সম্প্রতি সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (CBIC) এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে।

সিবিআইসি বলেছে যে, বর্তমানে মোবাইল ফোনের ডিসপ্লে অ্যাসেম্বলির উপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয় এবং ডিসপ্লে অ্যাসেম্বলি তৈরির জন্য পৃথকভাবে ইনপুট বা যন্ত্রাংশ আমদানির উপর আরোপিত শুল্কের পরিমাণ শূন্য। উল্লেখ্য যে, ডিসপ্লে অ্যাসেম্বলির মধ্যে টাচ প্যানেল থেকে শুরু করে গ্লাস, এলইডি ব্যাকলাইট এবং FPC (ফ্লেক্সিবল প্রিন্টার সার্কিট)-ও শামিল রয়েছে। সেক্ষেত্রে সিবিআইসি কর্তৃক ঘোষিত নয়া নিয়ম অনুযায়ী, মোবাইল ফোনের ডিসপ্লে অ্যাসেম্বলি যদি শুধুমাত্র মেটাল বা প্লাস্টিকের ব্যাক সাপোর্ট ফ্রেম দিয়ে আমদানি করা হয়, তাহলে তা ১০ শতাংশ বিসিডি-র আওতায় আসবে। কিন্তু তার সঙ্গে যদি আলাদা করে মেটাল কিংবা প্লাস্টিকের ব্যাক সাপোর্ট ফ্রেম আমদানি করা হয়, তাহলে সেক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ বিসিডি লাগবে। সোজা কথায় বললে, ডিসপ্লে অ্যাসেম্বলির জন্য ব্যবহৃত পার্টসগুলির ওপর এখন পৃথকভাবে কর ধার্য করা হবে, যা আগে হতো না।

আরও ভালোভাবে বললে, যদি সিম ট্রে, অ্যান্টেনা পিন, স্পিকার নেট, পাওয়ার কী, স্লাইডার সুইচ, ব্যাটারি কম্পার্টমেন্ট, ভলিউম, পাওয়ার, সেন্সর, স্পিকার, ফিঙ্গার প্রিন্ট ইত্যাদির জন্য ফ্লেক্সিবল প্রিন্টার সার্কিট (এফপিসি)-এর মতো অন্য কোনো আইটেম ডিসপ্লে অ্যাসেম্বলির সাথে মেটাল/প্লাস্টিক ব্যাক সাপোর্ট ফ্রেম দিয়ে আমদানি করা হয়, তবে পুরো অ্যাসেম্বলিটির জন্য ১৫% বিসিডি প্রযোজ্য হবে। ফলে, মোবাইল ফোন সারাই যে আগের তুলনায় বেশ কিছুটা ব্যয়বহুল হতে চলেছে, সেকথা বলাই বাহুল্য।

সরকারের মতে, পূর্বে সেলুলার মোবাইল ফোনের ডিসপ্লে অ্যাসেম্বলি আমদানি সংক্রান্ত প্রক্রিয়া এবং এর নিয়মাবলী নিয়ে বেশ কিছু বিভ্রান্তি ছিল। তবে এই নয়া ঘোষণায় সেই সমস্ত বিভ্রান্তি নিশ্চিতভাবে দূর হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ২০১৬ সালে সরকার দেশে মোবাইল ফোনের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য ফেসড ম্যানুফ্যাকচারিং প্রোগ্রাম বা পিএমপি (PMP)-র কথা ঘোষণা করেছিল। ভারতে যাতে একটি শক্তিশালী দেশীয় মোবাইল মানুফ্যাকচারিং ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা যায়, সেদিকে বিশেষ নজর রাখাই ছিল পিএমপি-র মূল লক্ষ্য। সেক্ষেত্রে এবার সরকারের আলোচ্য সাম্প্রতিক ঘোষণায় এই ভবিষ্যৎ কর্মসূচির ওপর বিশেষ কোনো প্রভাব পড়বে কি না, এখন সেটাই দেখার।