Bharat Sanchar Nigam Limited বা BSNL খুব শীঘ্রই এদেশে 4G সার্ভিস লঞ্চ করবে - এই খবরটি বিগত বেশ কয়েক মাস ধরেই টেক দুনিয়ার সর্বত্র ঘোরাফেরা করছে। তবে একের পর এক সম্ভাব্য টাইমলাইন প্রকাশ্যে আসলেও কোনো-না-কোনো কারণে বারংবার আশাহত হচ্ছে আপামর জনগণ। উল্লেখ্য, প্রথমে গত বছরের আগস্ট মাসে নিশ্চিতভাবে এদেশে সংস্থার 4G সার্ভিসের আগমন ঘটবে বলে আশায় বুক বেঁধেছিলেন মানুষ। তারপর আবার গত বছরের নভেম্বরে এই পরিষেবা রোলআউট হবে বলে অনুমান করা হচ্ছিল। এরপর BSNL জানায় যে, চলতি বছরের জানুয়ারির মধ্যেই ভারতে কোম্পানির 4G সার্ভিসের আবির্ভাব ঘটবে। আবার, কিছুদিন আগেই ইলেকট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব (Ashwini Vaishnaw) বেশ জোর গলায় বলেছিলেন যে, আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই এদেশে 4G পরিষেবা আনবে BSNL। তবে সমস্ত জল্পনাকে মিথ্যে করে দিয়ে সম্প্রতি আবারও একবার খবর মিলেছে যে, ২০২৩ সালের দ্বিতীয়ার্ধে এদেশে 4G সার্ভিস লঞ্চ করবে Bharat Sanchar Nigam Limited। কিন্তু বারংবার কেন এভাবে বিলম্ব ঘটছে? এর জবাবে কোনো সদুত্তর সংস্থার তরফে পাওয়া যায়নি। সেক্ষেত্রে এবার চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধেও আপামর দেশবাসী আদৌ এই পরিষেবার মুখ দেখতে পাবে কি না, সেটা একমাত্র সময়ই বলতে পারবে।
চলতি বছরেই এদেশে উপলব্ধ হবে BSNL-এর 4G পরিষেবা
রিপোর্ট অনুযায়ী, সরকারি টেলিকম অপারেটরটি প্রথমে মেট্রো শহরগুলিতে ৪জি পরিষেবা উপলব্ধ করবে এবং পরবর্তীতে অন্যান্য সার্কেলেও কভারেজ পাওয়া যাবে। এই বিষয়ে টেলিকমিউনিকেশন বিভাগ বা DoT-এর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই গোটা দেশজুড়ে মোট ১.১২ লক্ষ টাওয়ার স্থাপন করেছে বিএসএনএল। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে এদেশে ৪জি পরিষেবা নিয়ে আসবে সংস্থাটি। টিসিএস (TCS), তেজস (Tejas), সি-ডট (C-DoT)-এর মতো কোম্পানিগুলি টেলিকম অপারেটরটির ৪জি পরিষেবা বন্টনের দায়িত্বে থাকতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। ফলে একথা স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে যে, ভারতে খুব শীঘ্রই ৪জি রোলআউট করার জন্য রীতিমতো বদ্ধপরিকর রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম কোম্পানিটি, কিন্তু প্রতিবারই কোনো-না-কোনো সমস্যার কারণে ক্রমাগত লঞ্চের টাইমলাইন পিছিয়ে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে ছবিটা ঠিক কী দাঁড়ায়, এখন সেটাই দেখার।
অবিলম্বে 4G সার্ভিস রোলআউট না করলে বেসরকারি টেলিকম কোম্পানিগুলির চাইতে অনেকটাই পিছিয়ে পড়বে BSNL
উল্লেখ্য যে, বর্তমানে গোটা ভারত জুড়ে দুর্বার গতিতে বয়ে চলেছে ৫জি (5G)-র হাওয়া। এদেশের একের পর এক শহরে ক্রমাগত পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক সার্ভিস চালু করে চলেছে ভারতের অন্যতম প্রধান দুই বেসরকারি টেলিকম কোম্পানি রিলায়েন্স জিও (Reliance Jio) এবং এয়ারটেল (Airtel)। সেক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত ৪জি রোলআউট করতে না পারায় এদের তুলনায় বিএসএনএল বেশ অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে, যার জেরে হামেশাই সংস্থাটিকে নানারকম ব্যঙ্গবিদ্রুপের সম্মুখীন হতে হয়। তাই বেসরকারি কোম্পানিগুলির সাথে পাল্লা দিয়ে বাজারে টিকে থাকতে হলে খুব শীঘ্রই সংস্থাটিকে গোটা দেশে ৪জি সার্ভিস রোলআউট করতেই হবে। কিন্তু বারংবার যাবতীয় পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ায় বিএসএনএল যে ক্রমশ বেসরকারি টেলিকম অপারেটরগুলির তুলনায় আরও বহুগুণে পিছিয়ে পড়ছে, সেকথা আর আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। সেক্ষেত্রে সত্যি সত্যিই চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে ৪জি সার্ভিস লঞ্চ করে সংস্থাটি আপামর দেশবাসীর আশা পূরণ করতে পারবে কি না, তা জানার জন্য আমাদের এখনও বেশ খানিকটা সময় অপেক্ষা করতে হবে।
চারপাশ থেকে যথেষ্ট পরিমাণে সাহায্য মেলা সত্ত্বেও যাবতীয় পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে পারছে না BSNL
সাম্প্রতিক একটি রিপোর্ট অনুসারে, ইতিমধ্যেই ভারত সরকার BSNL-এর জন্য ১.৬৪ লক্ষ কোটি টাকার রিভাইভাল প্যাকেজ অনুমোদন করেছে। আবার, সম্প্রতি একটি ইন্ডাস্ট্রি ইভেন্টে টেলিকম সচিব কে রাজারামন (K Rajaraman) জানিয়েছেন যে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সরকারি টেলিকম কোম্পানিটির 4G সার্ভিস চালু হলে প্রতিটি গ্রামে হাই-স্পিড ব্রডব্যান্ড কানেকশন ব্যবহার করতে সক্ষম হবেন ইউজাররা। অর্থাৎ, BSNL-এর 4G-র আগমন ঘটলে প্রত্যন্ত গ্রামে বসবাসকারী মানুষদেরকেও আর নেটওয়ার্ক সংক্রান্ত কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না। এছাড়া, DoT এই সরকারি সংস্থাটির জন্য 5G স্পেকট্রাম সংরক্ষিত করে রেখেছে। অনুমান করা হচ্ছে যে, আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে এদেশে 5G সার্ভিস নিয়ে হাজির হবে BSNL (যদিও এর আগে চলতি বছরের আগস্ট মাসেই এই পরিষেবা ভারতে উপলব্ধ হবে বলে জানা গিয়েছিল)। এবার সবকিছু এই পরিকল্পনামাফিক চলবে নাকি আগামী দিনে আবারও সমস্ত প্ল্যান ভেস্তে যাবে, এখন সেটাই দেখার।