গাড়ি অথবা বাইক-স্কুটার চালানোর সময় পালন করুন এই পাঁচ অভ্যাস, সুস্থ থাকবে পৃথিবী

Avatar

Published on:

5 Tips to adopt Eco Friendly Driving practices

দিল্লি কিংবা মুম্বাই, অথবা কলকাতা ও চেন্নাই, পরিবেশ দূষণে সবচেয়ে এগিয়ে ভারতের এই চার মেট্রো শহর। একদিকে যেমন জনঘনত্বের চাপ তেমনিই মাত্রাতিরিক্ত যানবাহনের সংখ্যায় জর্জরিত এইসব শহরগুলি। শরতের শেষে ও শীতের শুরুতে পরিবেশ দূষণের ফাঁসে কন্ঠ রুদ্ধ হয় ভারতের রাজধানীর। পরিস্থিতি সামাল দিতে আজও কেজরিওয়াল সরকার যানবাহন নিয়ন্ত্রণে জোড়-বিজোড় নীতি বজায় রেখেছে। এমনকি সম্প্রতিক প্রকাশ পাওয়ার রিপোর্টে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পরিবেশ দূষণে আক্রান্ত শহর গুলির মধ্যে একটি হল দিল্লি। এবার সময় এসেছে আমাদের কিছু করার। সরকারের উপর সব দায়িত্ব না চাপিয়ে দিয়ে বেশ কিছু দায়িত্ব আমরা নিজেরাও নিতে পারি। গাড়ির মালিক হিসাবে এই পাঁচটি অভ্যাস আজ থেকে শুরু করুন। শুদ্ধ হবে আপনার চারপাশ। বাঁচবে এই প্রাণের পৃথিবী।

নিয়মিতভাবে গাড়ির যত্ন নেওয়া

আমাদের সাধের গাড়িটিকে প্রতিনিয়ত কিছু রুটিন চেকআপের মাধ্যমে দীর্ঘদিন পর্যন্ত পরিবেশবান্ধব করে রাখতে পারি। নির্দিষ্ট সময় অন্তর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন, ইঞ্জিন টিউনিং করা এবং গাড়ির চাকা ও অন্যান্য পার্টস এর দেখভাল করলে শুধুমাত্র যে গাড়িটি দীর্ঘদিন পর্যন্ত ভালো পারফরমেন্স নিয়ে চলবে তাই নয়, সাথে বাড়বে আপনার গাড়ির মাইলেজও।

আসলে সময় মত সার্ভিসিংয়ের ফলে গাড়ির ইঞ্জিনের মধ্যে থাকা অংশগুলি খুব ভালোভাবে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত চলতে পারে। নতুন ইঞ্জিন অয়েল এই সমস্ত অংশগুলির মধ্যে প্রতিবন্ধকতা কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময় অন্তর ইঞ্জিনের স্পার্ক প্লাগটি পরিষ্কার ও পরিবর্তন, প্রয়োজনমতো অক্সিজেন সেন্সর ও রেডিয়েটরের কুলান্ট বদলের ফলে ইঞ্জিনের মধ্যে জ্বালানির যথাযথ দহন হয়। এর ফলে যেমন মাইলেজ বাড়বে তেমনিই পরিবেশ দূষণ কমবে।

ব্যবহৃত ইঞ্জিন অয়েলকে যথাযথভাবে রিসাইক্লিং করা

বর্তমানে এই সমস্যাটি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। প্রচুর সংখ্যক মোটরসাইকেল কিংবা গাড়ির নিয়মিত সার্ভিসিং এর ফলে ব্যবহৃত ইঞ্জিন অয়েল বা মোবিল প্রচুর পরিমাণে জড়ো হয়। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা কোনরকম সতর্কতা ছাড়াই পরিবেশের মধ্যে ফেলে রাখা হয়। দূষিত হয় জল ও জলজ প্রাণীরা। বেশিরভাগ তেলের সংস্থার কাছে এই ধরনের ব্যবহৃত ইঞ্জিন অয়েলকে রিসাইক্লিং এর মাধ্যমে নষ্ট করার প্রক্রিয়া থাকে। তাই প্রয়োজন মতো তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নেওয়াই শ্রেয়।

ফুয়েল ট্যাংকের মুখ পর্যন্ত ভর্তি না করা

টু-হুইলার ও ফোর-হুইলার ব্যবহারকারীদের এক বড় অংশের প্রবণতা হল গাড়ির মধ্যে থাকা ফুয়েল ট্যাংকের একদম মুখ পর্যন্ত তেল ভরা। এটি পরিবেশ ও আপনার গাড়ির পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক। মনে রাখবেন পেট্রোল কিংবা ডিজেল অত্যন্ত উদ্বায়ী। তাই প্রতিমুহূর্তে এটি ফুয়েল ট্যাংক এর মধ্যে এক ধরনের বাষ্পের জন্ম দেয়। আর তার জন্যই ট্যাংকের মধ্যে খানিকটা অতিরিক্ত ফাঁকা জায়গা থাকা প্রয়োজন। এই কারণেই নির্মাতার উল্লিখিত ফুয়েল ট্যাংকের আয়তনের তুলনায় বাস্তবিক ক্ষেত্রে আয়তন খানিকটা বেশি রাখা হয়।

ফুয়েল ক্যাপের অবস্থা দেখে নেওয়া

পুরনো যানবাহনের ক্ষেত্রেই মূলত এই সমস্যাটি দেখা যায়। ফুয়েল ট্যাংক এর উপরে থাকা ঢাকনার চারপাশে এক ধরনের রবারের গ্যাসকিড লাগানো থাকে যা ট্যাঙ্কটিকে সম্পূর্ণ এয়ার টাইট রাখে। এবার দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে এই রাবারের অংশটি ক্ষয় পেয়ে নষ্ট হয়ে যায়, বা অনেক সময় দেখা যায় এই সম্পূর্ণ ঢাকনাটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে ট্যাংকের মধ্যে থাকা ফুয়েল এর ক্ষতিকর বাষ্প পরিবেশে মিশতে থাকে। তাই এইরূপ নষ্ট হওয়া ফুয়েল ক্যাপ পরিবর্তন করে নেওয়াই ভালো।

গাড়ির লোড কমানো

অনেক মানুষেরই প্রবণতা থাকে যে গাড়ির বুট স্পেসে অপ্রয়োজনীয় জিনিস ভরে রাখা। অনেক সময় বিভিন্ন জিনিস রাখতে রাখতে আমাদের অজান্তেই ভরে যায় গাড়ির নির্দিষ্ট বুট অঞ্চলটি। এর ফলে বৃদ্ধি পায় গাড়ির ওজন। ইঞ্জিনকে সেই অতিরিক্ত ওজন বহন করার জন্য বেশি পরিমাণ ফুয়েল খরচ করতে হয়। আর এতেই বাড়ে পরিবেশ দূষণ। তাই আজই এই অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলুন। এতে গাড়ির মাইলেজ ৬%-১০% বৃদ্ধি পাবে। উপরন্তু উন্নত হবে ইঞ্জিনের পারফরমেন্স।

সঙ্গে থাকুন ➥