শোরুমে Honda-র নতুন বাইক, ইঞ্জিন-ফিচার্স কেমন, কিনতে চাইলে বিস্তারিত জেনে রাখুন
ভারতের মতো মধ্যবিত্ত প্রধান দেশে এমনিতেই কম ডিসপ্লেসমেন্টের ইঞ্জিন যুক্ত কমিউটার বাইকের রমরমা অনেক বেশি। এর প্রধান কারণ এদেশের বহু মানুষ তাদের জীবিকার সন্ধানে প্রতিদিনের ব্যবহারযোগ্য তেলসাশ্রয়ী এবং কম রক্ষণাবেক্ষণ খরচ সমৃদ্ধ দুই চাকার উপরেই ভরসা রাখেন। ১০০ সিসি থেকে শুরু করে ১২৫ সিসির বাইকগুলি রয়েছে এই তালিকায়। এই সেগমেন্টে হিরো, টিভিএস, বাজাজ এইসবের মতো দেশীয় নির্মাতাদের পাশাপাশি জাপানের সংস্থা হোন্ডাও (Honda) রয়েছে তার ডালি সাজিয়ে। ১২৫ সিসির কমিউটার বাইকের দুনিয়ায় অন্যতম সেরা মোটরসাইকেল Honda SP 125। সম্প্রতি এই বাইকের নতুন মডেল লঞ্চ করেছে তারা।
পাঠকরা নিশ্চয়ই অবগত যে গত ১লা এপ্রিল থেকে সারা ভারতবর্ষ জুড়ে চালু হয়েছে বিএস ৬ এর দ্বিতীয় দফার রুলস এন্ড রেগুলেশন্স। এটিকে অন বোর্ড ডায়াগনস্টিক অর্থাৎ ওবিডি-২ বলেও আখ্যায়িত করা হয়। একের পর এক দুই চাকা কিংবা চার চাকার মডেল এই নিয়ম অনুসরণ করেই নতুন ইঞ্জিন যুক্ত করছে। তেমনভাবেই আপডেটেড SP 125 মডেলটিতে থাকবে এই নতুন ইঞ্জিন। চলুন দেখে নেওয়া যাক নতুন কী কী পরিবর্তন হলো এতে।
কালার স্কিম এবং টায়ার
এমনিতেই এযাবৎ কাল পর্যন্ত হোন্ডা এসপি ১২৫ বাইকটিতে একাধিক কালার অপশন ছিল। এবার সেই মুকুটে যুক্ত হল নতুন একটি পালক- ম্যাট মার্বেল ব্লু মেটালিক। সব মিলিয়ে কালার অপশন গিয়ে দাঁড়ালো পাঁচ- ব্ল্যাক, ম্যাট অ্যাক্সিস গ্রে, মেটালিক ইম্পেরিয়াল রেড মেটালিক এবং পার্ল সাইরেন ব্লু। বাইকটির সারা শরীরের প্যানেল এবং অন্যান্য ডিজাইন সম্পূর্ণভাবেই অপরিবর্তিত থাকছে। যদিও এর গ্রাফিক্স এবং অন্যান্য ডিজাইন যথেষ্ট স্পোর্টি লুকের অধিকারী।
হোন্ডা এসপি ১২৫ এর যন্ত্রাংশে কোনো পরিবর্তন না করা হলেও বদলেছে এর টায়ার সেকশন। পিছনের চাকাটি পূর্বের তুলনায় খানিকটা বড় রয়েছে এবারে। এর ফলে রাস্তার সঙ্গে উন্নত গ্রিপ এবং কর্নারিং স্টেবিলিটি যথেষ্ট বৃদ্ধি পাবে। সাসপেনশনের দায়িত্ব সামলাতে আগের মতই সামনের দিকে টেলিস্কোপিক ফর্ক এবং পিছনে টুইন স্প্রিং অ্যাবজর্ভার লাগানো রয়েছে। এমনকি ব্রেকিং সিস্টেমেও পূর্বের ন্যায় ডিস্ক ও ড্রাম ব্রেক উপলব্ধ থাকছে। কম দামের মডেলটির উভয় চাকাতেই ড্রাম ব্রেক দেওয়া হয়েছে।
ইঞ্জিন স্পেসিফিকেশন
বাইকটিতে ব্যবহৃত ১২৪ সিসির এয়ারকুল্ড সিঙ্গেল সিলিন্ডার ইঞ্জিনটি আগের মতোই সমপরিমাণ পাওয়ার ও টর্ক আউটপুট প্রদান করতে পারে। এটি থেকে ১০.৭২ এইচপি শক্তি এবং সর্বোচ্চ ১০.৯ এনএম টর্ক উৎপন্ন হয়। সাথে রয়েছে পাঁচ ধাপযুক্ত গিয়ার বক্স। তবে এবারের ইঞ্জিনটি ভারতে চালু হওয়া নতুন বিএস ৬ এর দ্বিতীয় পর্যায়ের নিয়মকে সম্পূর্ণভাবে অনুসরণ করেই তৈরি।
মূল্য
প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে আকর্ষণীয় মূল্যকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকে হোন্ডার মত সংস্থা। এবারেও সেই একই নিদর্শন রাখল তারা। হোন্ডা এসপি ১২৫ এর নতুন আপডেটেড ভার্সনে জন্য অতিরিক্ত মাত্র ১ হাজার টাকায় খরচ করতে হবে আপনাদের। মোট দুটি ভার্সনে উপলব্ধ এটি। একটি অ্যালয় হুইল এর সঙ্গে সামনের দিকে ডিস্ক ব্রেক ও অন্যটি অ্যালয় হুইলের সঙ্গে উভয়দিকে এই ড্রাম ব্রেক। এই দুটি মডেলের বর্তমানে এক্স শোরুম মূল্য যথাক্রমে ৮৯,১৩১ টাকা এবং ৮৫,১৩১ টাকা।
বাইকটির এই নতুন মডেলের লঞ্চ প্রসঙ্গে হোন্ডা মোটরসাইকেল এন্ড স্কুটার ইন্ডিয়ার অধিকর্তা আতসুসি অগাটা এক বিবৃতি জারি করে বলেন, "ওবিডি-২ নিয়মের অনুসারী ২০২৩ এসপি ১২৫ বাইকটি লঞ্চ করতে পেরে আমরা যথেষ্ট গর্বিত। এটি কেবলমাত্র একটি স্টাইলিশ এবং আকর্ষণীয় ডিজাইনের বাইক নয় বরং যথেষ্ট তেল সাশ্রয়ের ক্ষমতা রয়েছে এর। ভারতবর্ষের জনগণের প্রতি আমাদের যে দায়বদ্ধতা এবং তাদের চাহিদা পূরণ করার যে অঙ্গীকার নিয়েছি আমরা তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে এস পি ১২৫ এর মাধ্যমে।"
এই মুহূর্তে ভারতের বাজারে ১২৫ সিসি সেগমেন্টে হোন্ডা এসপি ১২৫ এর প্রধান প্রতিপক্ষরা হলো- Hero Glamour, Hero Super Splendor, Honda Shine ও TVS Raider।