10 মাসের পরিশ্রম সফল, ভারতীয় ছাত্রদের হাতে তৈরি ইলেকট্রিক গাড়ি আর্ন্তজাতিক পুরস্কার জিতল
এই মুহূর্তে ভারত তথা বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়গুলির মধ্যে অন্যতম ইলেকট্রিক ভেহিকেল। আন্তর্জাতিক স্তরের পাশাপাশি দেশীয় স্তরেও চলছে এই ধরনের যানবাহন উন্নত করা নিয়ে গবেষণা। উঠে আসছে একের পর এক নতুন ব্রেকথ্রু। আবিষ্কার হচ্ছে নতুন নতুন প্রযুক্তি। এবার তেমনই এক বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করে তাক লাগলো কেরলের ১৯ জন কলেজ পড়ুয়ার একটি দল। তাদের তৈরি ইলেকট্রিক গাড়ি ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃতি পেয়েছে, জিতে নিয়েছে নানা পুরস্কার। গাড়িটির পোশাকি নাম ভ্যান্ডি (Vandy)।
সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়াতে অনুষ্ঠিত হওয়া ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এফিশিয়েন্সি কম্পিটিশন, Shell Eco Marathan 2022 এ পুরস্কার পেয়ে ভারতের মুখ উজ্জ্বল করেছে পড়ুয়ার দলটি। প্রসঙ্গত, Shell Eco-Marathan আদতে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা ক্ষেত্র যেখানে সমগ্র বিশ্ব থেকে আগত ছাত্রছাত্রীরা তাদের তৈরি ও ডিজাইন করা নানা ধরনের ইলেকট্রিক এবং পেট্রোল/ডিজেল চালিত গাড়ির প্রদর্শনী করে থাকে। কেরলের তিরুবন্তপুরমে অবস্থিত এক সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের মেকানিক্যাল বিভাগের ছাত্ররা এই গাড়িটির প্রধান কারিগর। তাদের পথপ্রদর্শকের কাজ করেছে অ্যাকসিয়া টেকনোলজিস।
আর্ন্তজাতিক প্রতিযোগিতায় ভারত থেকে অংশগ্রহণ করা পাঁচটি দলের মধ্যে অন্যতম ছিল কেরালার দলটি। তাদের তৈরি ইলেকট্রিক গাড়িটির ওজন প্রায় ৮০ কেজি। এতে রয়েছে একটি মাত্র বসার আসন। গাড়িটি সর্বোচ্চ ২৭ কিমি/ঘন্টা গতিবেগ নিয়ে চলতে সক্ষম। প্রোটোটাইপ মডেল তৈরি করতে সময় লেগেছে ১০ মাস। টাইগার শার্কের চেহারা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ভ্যান্ডির ডিজাইন করা হয়েছে।
তিন চাকার বৈদ্যুতিক গাড়িটি দেখতে অনেকটা ক্যাপসুলে মত। সামনে দুটি চাকা থাকলেও পিছনে রয়েছে একটি চাকা। গাড়ির মধ্যে থাকা ইলেকট্রিক ড্রাইভারট্রেন এক উদ্ভাবনী ব্যাটারি থার্মাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সমন্বিত। সুরক্ষার দিকে বিশেষ নজর রেখে ভ্যান্ডির উন্নয়ন দল। গাড়ির চালক যদি কোনো কারণে চলন্ত গাড়িতে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন সে ক্ষেত্রে তাকে জানান দেবে এর মধ্যে থাকা স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম। এছাড়াও গাড়িটিতে ব্যবহৃত আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সমৃদ্ধ সেন্সর প্রতিমুহূর্তে তার চালকের শারীরিক সক্ষমতার বিষয়টি নজরে রাখবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করতে প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান ও সরকারি সাহায্যের বিষয়টি সামলেছেন কেরলের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী। পড়ুয়াদের টিম লিডার কল্যাণী এস কুমার জানান,"এটি আমাদের কাছে সত্যিই একটি গর্বের বিষয়। আমাদের কারিগরি দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে পরিবেশবান্ধব কিছু তৈরি করার সুযোগ এনে দিয়েছে এই প্রকল্প।"