ভারতের বাজারে যাত্রীবাহী গাড়ির বৃহত্তম সংস্থা মারুতি সুজুকি (Maruti Suzuki)। সস্তায় গ্রাহকদের হাতে মডেল তুলে দেওয়ার জন্য সংস্থাটির জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু সুখ্যাতির পাশাপাশি ইন্দো-জাপানি সংস্থার গাড়িগুলির বদনামও নেহাত কম নেই। যার প্রধান কারণ অনুন্নত উপাদানের ব্যবহার। প্রায় সময়ই সুজুকির গাড়িগুলিকে অনেকেই মজার ছলে ‘টিনের বাক্স’ আখ্যা দিয়ে থাকেন। অর্থাৎ যেকোনো সংঘর্ষে এই মডেলগুলির টিনের বাক্সের মতোই দুমরে মুছড়ে এক শোচনীয় অবস্থা হয় বলে বাজারে দীর্ঘদিনের দুর্নাম রয়েছে। কিন্তু এতদিনেও মারুতি সুজুকি নিজেদের সেই বদনাম ঘোচাতে কার্যত ব্যর্থ। এবারে গ্লোবাল এনক্যাপ (Global NCAP) এর নতুন টেস্টে তাদের এন্ট্রি লেভেল হ্যাচব্যাক মডেল WagonR-এর চিলেচ্যাপ্টা অবস্থার সাক্ষী থাকলো গোটা বিশ্ব।
Maruti Suzuki WagonR গ্লোবাল এনক্যাপ টেস্টে ডাহা ফেল
গ্লোবাল এনক্যাপের ক্র্যাশ টেস্টে মারুতি সুজুকি ওয়াগনআর প্রাপ্তবয়স্ক যাত্রীদের জন্য মাত্র ১ তারার মানপত্র পেয়ে ডাহা ফেল করেছে। আবার শিশু যাত্রীদের ক্ষেত্রে গাড়িটি একেবারে মাঝমাঠে মুখ থুবড়ে পড়েছে। এক্ষেত্রে একটি তারাও সংগ্রহ করতে ব্যর্থ গাড়িটি। অন্যদিকে গত বছর নতুন প্রজন্মে লঞ্চ হওয়া Alto K10-ও শিশু যাত্রীদের জন্য রেটিংয়ের খাতাই খুলতে পারে না। তবে প্রাপ্তবয়স্ক যাত্রীদের জন্য এর সংগ্রহে রয়েছে দুই তারার মানপত্র।
অথচ নতুন কড়া বিধি জারি হওয়ার পর Volkswagen Virtus ও Skoda Slavia গ্লোবাল এনক্যাপের ক্র্যাশ টেস্ট সসম্মানের সাথে পূর্ণ নম্বর নিয়ে পাশ করেছে। প্রাপ্ত বয়স্ক এবং শিশু উভয় যাত্রীদের সুরক্ষার জন্যই এদের প্রাপ্ত রেটিংয় ৫। ক্র্যাশ টেস্টের নয়াবিধি অনুযায়ী সমস্ত গাড়ির সম্মুখ এবং দুই পাশের সুরক্ষার ক্ষমতা যাচাই করা হয়। একই সাথে ইলেকট্রনিক স্টেবিলটি কন্ট্রোল এবং যাত্রীদের পায়ের নিরাপত্তার বিষয়টিও খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে।
GNCAP কী জানালো
অল্টো কে১০-এর বিষয়ে জিএনক্যাপ (GNCAP) জানিয়েছে, ফ্রন্টাল ইমপ্যাক্ট টেস্টে এটি প্রাপ্তবয়স্ক যাত্রীদের বুক এবং মাথার সুরক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে আশানুরূপ ফল দেখিয়েছে। যদিও পার্শ্ববর্তী সংঘর্ষে নিরাপত্তা বজায় রাখার ক্ষেত্রে মুক্ত উপড়ে পড়েছে গাড়িটি। এদিকে WagonR-এর নতুন ভার্সনে আপডেট দেওয়ার পরও যাত্রীদের বুকের সুরক্ষা বজায় রাখার ক্ষেত্রে হতাশ করেছে এটি।
জিএনক্যাপ-এর কথানুযায়ী, সুরক্ষার পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও মারুতি সুজুকি শিশু যাত্রীদের জন্য তাদের গাড়িতে চাইল্ড রিস্ট্রেইন্ট সিস্টেম বা সিআরএস দিতে অস্বীকার করেছে। আবার প্রত্যেক সিটে থ্রি পয়েন্ট বেল্ট এবং স্ট্যান্ডার্ড এয়ার ব্যাগের অনুপস্থিতির জন্যও শিশু যাত্রীদের সুরক্ষায় WagonR ও Alto K10 গাড়ি দুটি পাশ করতে পারেনি বলে দাবি করা হয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি আশা করছে, মারুতি সুজুকি ভবিষ্যতে তাদের এই সুরক্ষার ফাঁকফোকর সারিয়ে তুলবে।