গাড়ি বিক্রি তলানিতে, এপ্রিলে ভয়াবহ অবস্থা, পাকিস্তানে অর্থনৈতিক সঙ্কটের করুণ ছবি
সময়ের সাথে সাথে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সঙ্কট তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম লাফিয়ে বাড়ছে। প্রতিদিনের খাইখরচ শামাল দিতে নাভিশ্বাস উঠছে আমজনতার। প্রত্যহ খাদ্য পণ্যের দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বৃদ্ধি পাওয়ায় না খেয়েই দিনপাত করতে হচ্ছে অসংখ্য মানুষকে। এমতাবস্থায় দেশের সরকারও হাত তুলে নিয়েছে। যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে দেশের অটোমোবাইল শিল্পে। পাকিস্তান অটোমোটিভ ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বা পামা (PAMA) সূত্রে দাবি করা হয়েছে, গত মাস অর্থাৎ এপ্রিলে সে দেশে মাত্র ২,৮৪৪টি যাত্রীবাহী গাড়ি বিক্রি হয়েছে। যেখানে আগের বছর ওইসময়ে বেচাকেনার পরিমাণ ছিল ১৮,৬২৬ ইউনিট।
পাকিস্তানের মুদ্রাস্ফীতিতে গাড়ি বিক্রিতে ধস
আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দেশজুড়ে বিক্রিতে ৮৪ শতাংশ পতন বুঝিয়ে দিচাছে, এক ধাক্কায় গাড়ির চাহিদা কতটা তলানিতে এসে ঠেকেছে। বলাই বাহুল্য, অটোমোবাইল শিল্পে এই ধসের পেছনেও রয়েছে পাকিস্তানের মুদ্রাস্ফীতি। প্রসঙ্গত, বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম গাড়ি বাজার ভারতে এপ্রিলে মোট ৩.৩১ লক্ষ ইউনিট প্যাসেঞ্জার ভেহিকেল বিক্রি হয়েছে।
ভারতের গাড়ি বিক্রির সাথে পাকিস্তানের বেচাকেনার তুলনা যে একদমই বেমানান, তা আর বলে দেওয়ার অপেক্ষা রাখে না। গাড়ি শিল্পে এই ধস, দেশের অর্থনীতির জন্য অবশ্যই বিপদ সঙ্কেত। মুদ্রাস্ফীতি এতটাই মাথা চারা দিয়ে উঠেছে, যে মধ্যবিত্ত মানুষের গাড়ি কেনার মত বিলাসিতার কথা মাথাতেই আর আসছে না। গেল মাসে যে কটি গাড়ি বিক্রি হয়েছে, তা উচ্চবিত্ত সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
পাকিস্তানে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের পাশাপাশি জ্বালানি তেলের মূল্যও ছ্যাঁকা ধরাচ্ছে। অনেকেই তাই গাড়ি চালানো বন্ধ করে দিয়েছেন। ১,০০০ সিসি বা তার কম ক্ষমতার এন্ট্রি-লেভেল সেগমেন্টের উপর ব্যাপক প্রভাব দেখা গেছে। ১,০০০ সিসি সেগমেন্টে গত মাসে মাত্র ২৭৬ ইউনিট বিক্রির কথা জানিয়েছে পামা। যার মধ্যে রয়েছে Suzuki Alto, WagonR এবং Cultus (ভারতে যেটি Celerio নামে পরিচিত)। আবার ১,৩০০ সিসির সেগমেন্টে বিক্রি কিছুটা বৃদ্ধি পেতে দেখা গেছে, যা ১,৫৮৫ ইউনিট। আগের বছর ওই সময় বিক্রির পরিমাণ ছিল ৯,১৮৯ ইউনিট।