Royal Enfield Hunter 350 নাকি Jawa 42, দুই রেট্রো বাইকের প্রতিযোগিতায় কে এগিয়ে? রইল তুলনা
কথায় বলে "পুরনো চাল ভাতে বাড়ে"। এই কথাটি মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রেও খুব প্রযোজ্য। আসলে Royal Enfield ও Jawa দুই সংস্থাই রেট্রো বাইকের জগতে খুবই পরিচিত নাম। প্রথমজনকে নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে ক্লাসিকে ডিজাইনের বাইক বলতে আজ প্রত্যেকে একবাক্যে রয়্যাল এনফিল্ডকেই চেনেন। আর দ্বিতীয়জন কয়েক দশক আগে বাজার থেকে হারিয়ে গিয়ে নতুন পার্টনারের হাত ধরে পুনরায় জীবিত হয়েছে। পুনরুজ্জীবনের সাথে সাথেই নিয়ে এসেছে একের পর এক সাবেকি ঘরানার বাইক।
সম্প্রতি বাজারে এসেছে রয়্যাল এনফিল্ডের সবচেয়ে সস্তা বাইক Hunter 350। অন্য দিকে, আগেভাগেই এই জায়গা দখল করে বসেছিল Jawa 42। যার লেটেস্ট ভার্সন লঞ্চ হয়েছে গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। Hunter 350 এর আত্মপ্রকাশ আর ব্যাস প্রতিযোগিতা সেখান থেকেই শুরু। চলুন দেখে নেওয়া যাক ধারে-ভারে কে কোন দিক থেকে কতটা এগিয়ে। দুই বাইকের লড়াইয়ে কার অ্যাডভান্টেজ বেশি।
Royal Enfield Hunter 350 vs Jawa 42: মূল্য
১.৪৯ লাখ থেকে শুরু হয়েছে হান্টার ৩৫০ এর এক্স শোরুম মূল্য। যদিও এর টপ মডেল মেট্রো রেবেল সংস্করণটির দাম ১.৬৮ লাখ টাকা। আর জাওয়া ৪২ এর দাম ১.৭২ লাখ থেকে ১.৯৪ লাখের মধ্যে। অর্থাৎ দামের দিক থেকে হান্টার ৩৫০ এর বেস মডেল জাওয়া ৪২ এর থেকে অন্তত ২২ হাজার টাকা কম। আবার হান্টার ৩৫০ এর টপ মডেলটিও ৪ হাজার টাকা সস্তা।
Royal Enfield Hunter 350 vs Jawa 42: ডিজাইন
হান্টার ৩৫০ বাইকে গোল হেডলাইট, অফসেট স্পিডোমিটার, এক সাইডে থাকা ছোট এগজস্ট পাইপ, অ্যালয় হুইল, ছোট ফিল্ডার ও সম্পূর্ণ কালো রংয়ের ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ দেখতে পাওয়া যায়। অন্য দিকে, জাওয়া ৪২ তে রয়েছে বড় ফিল্ডার, গোলাকার হেডলাইট, স্পোক যুক্ত চাকা ও চকচকে ইঞ্জিন কম্পোনেন্ট। তবে এর টপ মডেলে হান্টার ৩৫০ এর মতো ব্ল্যাকড আউট ইঞ্জিন লক্ষ্য করা যায়।
সিট হাইট হান্টারে খানিকটা বেশি, ৮০০ মিমি। জাওয়া ৪২ তে যা ৭৬৫ মিমি। ডাইমেনশন মোটামুটি ভাবে একই হলেও হান্টারের ওজন ১৮১ কেজি। কিন্তু জাওয়া ৪২ এর ওজন খানিকটা কম, ১৭২ কেজি। তবে গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্সের দিক থেকে অন্তত ১৫ মিমি বেশি স্পেস পাওয়া যাবে জাওয়াতে।
Royal Enfield Hunter 350 vs Jawa 42: ইকুইপমেন্ট ও বৈশিষ্ট্য
রয়্যাল এনফিল্ড হান্টার ৩৫০ এ রয়েছে সেমি ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার, উভয়দিকেই এবিএস সহ ডিস্ক ব্রেক, ১৭ ইঞ্চির টিউবলেস চাকা, সামনের টেলিস্কোপিক ফর্ক ও পিছনে ডুয়েল শক অ্যাবজর্বার, হ্যালোজেন বাল্ব যুক্ত গোলাকার হেডলাইট এবং এলইডি টেল লাইট। আর Jawa 42 এর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে রয়েছে সামনে ১৮ ইঞ্চির চাকা সহ টেলিস্কোপিক ফর্ক, পিছনে ১৭ ইঞ্চি চাকা সহ ডুয়েল শক অ্যাবজর্ভার, এবিএস সহ দু'প্রান্তে ডিস্ক ব্রেক, হ্যালোজেন হেডলাইট ও সেমি ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার।
দুটি বাইকের ক্ষেত্রেই প্রচুর ধরনের আধুনিক বৈশিষ্ট্য থাকলেও, স্মার্টফোন কানেক্টিভিটি ফিচার্স এতে দেখা যায় না। যদিও হান্টার ৩৫০ এর ক্ষেত্রে জিপিএস নেভিগেশন সিস্টেম সহ অনেক ধরনের পছন্দ মত অ্যাক্সেসরিজ লাগানোর সুযোগ রয়েছে।
Royal Enfield Hunter 350 vs Jawa 42: ইঞ্জিন
পারফরম্যান্স নিয়ে বলতে গেলে উভয় মোটরসাইকেলেই সিঙ্গেল সিলিন্ডার ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। হান্টারে ৩৫০ সিসির ও Jawa তে ৩০০ সিসির ইঞ্জিন দেওয়া। রয়্যাল এনফিল্ড হান্টারে এয়ার ও অয়েল কুল্ড ইঞ্জিন থাকলেও Jawa তে আরও উন্নত লিকুইড কুল্ড সিস্টেম আছে। কাগজে-কলমে Jawa তে হান্টার ৩৫০ এর তুলনায় কম শক্তিশালী ইঞ্জিন ব্যবহার করা হলেও দুটি বাইকেই সমান টর্ক (২৭ এনএম) উৎপন্ন হয়। তবে পাওয়ারে অনেক এগিয়ে জাওয়া৷ হান্টারের চেয়ে এর ইঞ্জিন ৭ হর্সপাওয়ার বেশি উৎপন্ন করে। আবার লিকুইড কুলিং সিস্টেম থাকায় এর ইঞ্জিনের তাপমাত্রা যথেষ্ট নিয়ন্ত্রিত থাকে। এছাড়া অতিরিক্ত গিয়ার আরেকটা অ্যাডভান্টেজ।