স্মার্টফোনের মাধ্যমেই চেক করা যাবে হার্ট এবং চোখের কন্ডিশন, শীঘ্রই Google আনছে চমকপ্রদ ফিচার
বর্তমান সময়ে অ্যাক্সেসরিজগুলিতে একাধিক হেল্থ ট্র্যাকিং ফিচার দেওয়া হচ্ছে। তবে ইউজাররা যাতে স্মার্টফোন ব্যবহার করেই নিজেদের হার্ট এবং চোখের কন্ডিশন চেক করতে পারেন, তার জন্য এবার একটি নতুন ফিচার আনার পরিকল্পনা করছে টেক জায়ান্ট Google (গুগল)। হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন! Google-এর নয়া ফিচারের সুবাদে কোটি কোটি অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী বাড়িতে বসেই নিজেদের শরীরের হালহকিকতের ওপর নজর রাখতে পারবেন। ফলে সামান্য কোনো কারণে তাদের আর চিকিৎসকদের কাছে ছুটতে হবে না। এক্ষেত্রে সংস্থাটি জানিয়েছে যে, নিখুঁতভাবে হৃদস্পন্দনের হার মাপার জন্য নতুন এই পদ্ধতিটিকে ব্যবহার করা যেতে পারে। এমনকি হৃদপিণ্ডের শব্দ রেকর্ড করার জন্য স্মার্টফোনের বিল্ট-ইন মাইক্রোফোন ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে গুগলের।
একটি ব্লগ পোস্টে গুগল ব্যাখ্যা করেছে যে, কারোর হৃদপিণ্ড এবং ফুসফুসের সঠিক অবস্থা সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয় জানার জন্য ডাক্তারদের ব্যবহৃত একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হল স্টেথোস্কোপ। এটি অ্যাওর্টিক স্টেনোসিসের মতো হার্ট ভালভের রোগ সনাক্ত করতে চিকিৎসকদের সহায়তা করে। অ্যাওর্টিক স্টেনোসিসের স্ক্রিনিংয়ের জন্য স্টেথোস্কোপ বা অত্যাধুনিক প্রযুক্তির আল্ট্রাসাউন্ডের মতো বিশেষ সরঞ্জামের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এবার এরকম সরঞ্জাম ব্যবহার না করে কেবলমাত্র একটি স্মার্টফোন, আরও ভালোভাবে বলতে গেলে স্মার্টফোনের মাইক্রোফোন ব্যবহার করেই এই ধরনের অবস্থা সনাক্ত করার পদ্ধতি আবিষ্কার করতে চলেছে গুগল। সংস্থাটি জানিয়েছে যে, বর্তমানে তারা এই টেস্টের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে তারা দৃঢ়ভাবে আশা করে যে, ভবিষ্যতে স্টেথোস্কোপ বা ডাক্তারের সাহায্য ছাড়াই ইউজাররা নিজস্ব স্মার্টফোন ব্যবহার করেই নিজেদের শারীরিক অবস্থার মূল্যায়ন যথাযথভাবে করতে সক্ষম হবেন।
এছাড়াও, ডায়াবেটিস এবং নন-ডায়াবেটিসের সাথে সম্পর্কিত চোখের রোগ সনাক্ত করার জন্য গুগল স্মার্টফোন ক্যামেরার মাধ্যমে ক্যাপচার করা ফটোগুলি ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে যে, তারা আইপ্যাকস (EyePACS) এবং চ্যাং গুং মেমোরিয়াল হসপিটালের (CGMH) মতো অংশীদারদের সাথে হাত মিলিয়ে একটি ক্লিনিক্যাল রিসার্চ করার পরিকল্পনা করছে। স্মার্টফোনের ক্যামেরা দিয়ে তোলা বাহ্যিক চোখের ফটোগুলি ডায়াবেটিস এবং নন-ডায়াবেটিস রোগ সনাক্ত করতে সহায়তা করতে পারে কি না, সে বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখার জন্যই এই গবেষণাটি করা হবে।
এক্ষেত্রে সংস্থাটি জানিয়েছে যে, যদিও এই গবেষণা এবং তার উন্নয়নের কাজ একদমই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, তবে ভবিষ্যতে প্রতিটি পদক্ষেপে ডাক্তারদের সহায়তা ছাড়াই ব্যবহারকারীরা যাতে বাড়িতে থেকেই নিজেদের শারীরিক অবস্থা ভালোভাবে বুঝতে এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে যথাযথভাবে সক্ষম হতে পারেন, তার জন্য গুগলের প্রকৌশলী এবং বিজ্ঞানীরা জোরকদমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। উল্লেখ্য যে, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির লক্ষণগুলিকে পর্যবেক্ষণ করে করা এই গবেষণাটি কোম্পানির এআই (AI)-ভিত্তিক এআরডিএ (ARDA) অ্যালগরিদমের উপর ভিত্তি করে সম্পাদন করা হচ্ছে। ফলে আশা করা যায় যে, গুগলের সহায়তায় ডাক্তারির খুচরো কাজ ব্যবহারকারীরা খুব শীঘ্রই বাড়িতে বসেই সেরে ফেলতে পারবেন!