Spy Camera: কোনো জায়গায় গোপন ক্যামেরা আছে বলে সন্দেহ হচ্ছে? যাচাই করুন এই সহজ পদ্ধতিগুলিতে
বর্তমান ডিজিটাল যুগে প্রযুক্তি একদিকে যেমন আশীর্বাদ, তেমনি অপরদিকে বেশ কিছু ক্ষেত্রে এটিই আবার মানুষের জীবনে অভিশাপ তথা ভয়ঙ্কর ফাঁদ হয়েও দাঁড়ায়। উদাহরণস্বরূপ হিডন ক্যামেরার কথাই ধরা যাক। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করে কীভাবে অসাধু কাজ করা যায়, তারই এক জ্বলন্ত নিদর্শন হল হিডন বা স্পাই বা গোপন ক্যামেরা (Spy Camera)। এই ইলেকট্রনিক ডিভাইসটির সৌজন্যে অনেক সময়ই মানুষকে, বিশেষত মহিলাদের ভয়ঙ্কর বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। ট্রায়াল রুম, হোটেলের রুম, হোস্টেল বা বাথরুমে সাধারণত এই ধরনের গোপন ক্যামেরা সেটআপ করে সমাজের বিকৃত মস্তিষ্কের কিছু মানুষ মহিলাদের গোপন ভিডিও রেকর্ড করে রাখে এবং পরবর্তীকালে সেই ভিডিওকে হাতিয়ার করে তাদেরকে নানাভাবে ব্ল্যাকমেইল করে। তবে একটু বুদ্ধি খাটালেই কিন্তু কোথাও গোপন ক্যামেরা লাগানো আছে কিনা, তা অতি অনায়াসেই বুঝতে পারা যায়। ভাবছেন কীভাবে? সেই উপায়গুলির কথাই আমরা আপনাদেরকে এই প্রতিবেদনে জানাতে চলেছি।
মূলত এইসব জায়গাতে গোপন ক্যামেরা লাগানো থাকে
হোটেল কিংবা হোস্টেলের ঘরে এই সমস্ত ক্যামেরাগুলি মূলত এমন জায়গায় লাগানো হয়, যেখানে মানুষের সচরাচর নজর পড়বে না৷ উদাহরণস্বরূপ, স্মোক ডিটেক্টর, এয়ার ফিল্টার ইক্যুইপমেন্ট, বই, দেওয়ালে লাগানো কোনো জিনিস, টেবিলে রাখা ছোটো গাছ, টিস্যু বক্স, স্টাফড টেডি, ডিজিটাল টিভি বক্স, হেয়ার ড্রায়ার, দেওয়াল ঘড়ি, এমনকি পেনের মধ্যেও একটি ক্যামেরা লুকানো থাকতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাথরুম শাওয়ার, দরজার খাঁজ কিংবা আলমারি জাতীয় আসবাবপত্রে এই ধরনের ক্যামেরাগুলিকে ইন্সটল করা হয়। তাই হোটেলে কিংবা হোস্টেলে থাকতে গেলে এই সমস্ত জায়গাগুলি অবশ্যই চেক করে নিন৷
নাইট ভিশন ক্যামেরার হদিশ কীভাবে পাবেন?
আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি যে, নাইট ভিশন সিকিউরিটি ক্যামেরা অ্যাক্টিভ থাকলে সেগুলিতে সবুজ কিংবা লাল এলইডি লাইট জ্বলতে থাকে। ফলে ঘরে এই ধরনের ক্যামেরা লাগানো আছে কি না, তা জানার জন্য প্রথমে সমস্ত লাইট অফ করে দিন। তাহলেই অন্ধকার ঘরে কোথাও সবুজ কিংবা লাল এলইডি লাইট জ্বলছে কি না, তা আপনি অতি অনায়াসেই দেখতে পাবেন। আর এর ফলস্বরূপ ঘরের কোন জায়গায় হিডন ক্যামেরা লাগানো রয়েছে, সেটাও আপনি খুব সহজেই জানতে পারবেন।
মোবাইল ফোনটিকেও কাজে লাগাতে পারেন
মোবাইলের সাহায্যে গোপন ক্যামেরার সন্ধান পাওয়া যায় কি না, এই নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন রয়েছে। যদিও এর বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত কোনো ফর্মুলা নেই, তবে ছোটোখাটো কিছু কৌশল অবলম্বন করে কিন্তু মোবাইলের সাহায্যেও ঘরে কিংবা অন্য কোনো জায়গায় লুকানো এই ধরনের ইলেকট্রিক গ্যাজেটের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে। আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি যে, হিডন ক্যামেরা থেকে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি জেনারেট হয়, আর এই কারণেই মোবাইল ফোনের সাহায্যে এই ধরনের ক্যামেরা খুঁজে পাওয়া সম্ভব।
কোনো জায়গায় হিডন ক্যামেরা লাগানো আছে বলে যদি আপনার মনে সন্দেহ দেখা দেয়, তাহলে সেখানে দাঁড়িয়ে আপনি আপনার পরিচিত কোনো নম্বরে ফোন করুন। এক্ষেত্রে স্পাই ক্যামেরা লাগানো থাকলে কিন্তু খুব সহজে আপনার কলটি কানেক্ট হবে না, কারণ হিডন ক্যামেরা থেকে নির্গত রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির কারণে আপনার কলটি বাধাপ্রাপ্ত হবে। এর ফলস্বরূপ হয় কলটি কানেক্ট হবে না, আর যদিও বা কানেক্ট হয় তাহলেও আপনি অপরপ্রান্তের মানুষটির আওয়াজ খুব পরিস্কারভাবে শুনতে পাবেন না। এভাবে এই ছোট্ট পদ্ধতিটি অবলম্বন করে আপনি যে-কোনো জায়গায় লাগানো হিডন ক্যামেরার হদিস খুব সহজেই পেতে সক্ষম হবেন।
এই সব অ্যাপ থেকে দূর হবে সন্দেহ
আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি যে, গুগল প্লে স্টোর (Google Play Store) কিংবা অ্যাপল অ্যাপ স্টোর (Apple App Store)-এ এমন অনেক অ্যাপ মজুত রয়েছে যেগুলির সাহায্যে ঘরে লুকানো যে-কোনো স্পাই ক্যামেরার সন্ধান পাওয়া যাবে। সেক্ষেত্রে 'ডিটেক্ট হিডেন ক্যামেরা' ক্যাটাগরির কোনো অ্যাপ আপনি আপনার ফোনে ইন্সটল করে রাখতে পারেন। এর সুবাদে যদি কোনো জায়গায় এই ধরনের গোপন ক্যামেরার অস্তিত্ব মেলে, তাহলে আপনার ফোনে তৎক্ষণাৎ একটি লাল আলো জ্বলে উঠবে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অ্যাপগুলি যে সবসময় সঠিকভাবে কাজ করবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই৷