Bike Comparison: ইয়েজদি নাকি কেটিএম? অচেনা লম্বা রাস্তা পাড়ি দেওয়ার উপযুক্ত বাইক কোনটা
বিগত বছর দুয়েক ধরে করোনা অতিমারি পর্বের ধাক্কায় মানুষজনের জীবনে পরিবর্তন এসেছে অনেক। অনলাইন এডুকেশনের পাশাপাশি "ওয়ার্ক ফ্রম হোম" কালচার এখন সকলেরই জানা। অর্থাৎ দিনের পর দিন ঘন্টার পর ঘন্টা এক জায়গায় বসে নিজের কাজে ডুব দেওয়া। এই সিস্টেমে বাইরের খোলামেলা জগতের সঙ্গে ভাব বিনিময়ের সুযোগ যেন আরই কমেছে। আর তাই সুযোগ পেলেই সবাই ছুটছেন নিজের পছন্দের গন্তব্যে। কিন্তু সপ্তাহ শেষে কিংবা আচমকা পাওয়া ছুটিতে অ্যাডভেঞ্চারের জন্য ঝঞ্ঝাটহীন ভাবে কম খরচে ঘুরতে গেলে দুই চাকার বিকল্প প্রায় নেই বললেই চলে। আর দীর্ঘ রাস্তা পাড়ি দিতে গেলে প্রয়োজন বাইকের। সেই কারণেই বর্তমানে অ্যাডভেঞ্চার বাইক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
ভারতের বাজারে বেশ কয়েকটি সংস্থার হাতেই রয়েছে নানা রেঞ্জের বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চারট্যুরিং বাইক। লম্বা হুইলবেস, আরামদায়ক সিট, চওড়া হ্যান্ডেল বার ও কমফোর্টেবল রাইডিং এর জন্য নাম রয়েছে এদের। এমনই দুটি জনপ্রিয় বাইক হল KTM 250 Adventure ও Yezdi Adventure। অনেকেই এই দুটি বাইকের মধ্যে একটি নির্বাচন করতে প্রবল দ্বিধায় ভোগেন। তাদের সাহায্যার্থেই এই দুয়ের তুলনামূলক আলোচনা রইল এই প্রতিবেদনে।
KTM 250 Adventure vs Yezdi Adventure: ইঞ্জিন স্পেসিফিকেশন
শুরুতেই দুটি বাইকের প্রাণভোমরা অর্থাৎ ইঞ্জিনের প্রসঙ্গে আসা যাক। ইয়েজদি এডভেঞ্চারে ৩৩৪ সিসির লিকুইড কুল্ড ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। এই ইঞ্জিনটির সর্বোচ্চ পাওয়ার ও টর্ক আউটপুট যথাক্রমে ২৯.৭৮ বিএইচপি ও ২৯.৯ এনএম। এই একই ইঞ্জিন Yezdi ও Jawa তেও দেওয়া হয়েছে। যদিও এক্ষেত্রে অ্যাডভেঞ্চার বাইকের মত ইঞ্জিনটি টিউন করা রয়েছে। সাথে রয়েছে ৬-স্পিড গিয়ার বক্স। অন্যদিকে কেটিএম অ্যাডভেঞ্চার বাইকটির ক্ষেত্রে ২৫০ ডিউকের মতোই একই ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। একে চালিকাশক্তি যোগায় ২৪৮ সিসির লিকুইড কুল্ড ইঞ্জিন। ৯,০০০ আরপিএম গতিতে সর্বোচ্চ ২৯.৫ বিএইচপি শক্তি এবং ৭,৫০০ আর পিএম গতিতে সর্বাধিক ২৪ এনএম টর্ক উৎপাদন করার ক্ষমতার রয়েছে এর। এই ইঞ্জিনটিতেও সিক্স স্পিড ট্রান্সমিশন উপলব্ধ।
KTM 250 Adventure vs Yezdi Adventure: লুকস
ইয়েজদির বাইকটি খানিকটা আপনাকে পুরনো দিনের কথা স্মরণ করাবে। তবে সাবেকিআনায় মোড়ানো হলেও এতে রয়েছে আধুনিকতার ছোঁয়া। যেমন বাইকটির সামনে রেট্রো স্টাইলের গোলাকার হেডলাইট থাকলেও তাতে রয়েছে এলইডি বাল্ব। ফুয়েল ট্যাংক ও ইঞ্জিনের গড়ন সবটাই যেন ইয়েজদির পুরনো দিনের মডেলের অনুরূপ। পেছনের দিকেও এলইডি টেলল্যাম্প রয়েছে।
অপরদিকে, কেটিএম ২৫০ অ্যাডভেঞ্চার বাইকটি তার বৃহৎ সংস্করণ ৩৯০ অ্যাডভেঞ্চার থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি। এখানেও একই ধরনের ফ্ল্যাট হেডলাইট থাকলেও এক্ষেত্রে এলইডি লাইটের পরিবর্তে হ্যালোজেন বাল্ব দেওয়া হয়েছে। যদিও বাইকটির ট্যাংকের দু'পাশের বর্ধিত অংশ বেশ অ্যাগ্রেসিভ লুক প্রদান করে। তবে এর সামনে থাকা চাকা খানিকটা ছোট বলে রাস্তার সাথে ভালো গ্রিপ করতে সক্ষম।
KTM 250 Adventure vs Yezdi Adventure: ফিচার
কেটিএম এর বাইকটিতে ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার দেওয়া হয়েছে যেখানে বাইকটি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলী দেখা যায়। এর পাশাপাশি বিভিন্ন রকম ডিভাইস চার্জ করার জন্য এখানে একটি ১২ ভোল্টের চার্জিং পোর্ট বিদ্যমান। অন্যদিকে ইয়েজদি অ্যাডভেঞ্চারে সর্বক্ষেত্রেই এলইডি লাইটের ব্যবহারের পাশাপাশি অ্যাডজাস্টেবল ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার, ব্লুটুথ সংযোজন, টার্ন বাই টার্ন নেভিগেশন ও ইউএসবি চার্জার রয়েছে।
KTM 250 Adventure vs Yezdi Adventure: দাম
দামের দিক থেকে বেশ সস্তা ইয়েজদি। এর এক্স শোরুম মূল্য ২.১৩ লাখ টাকা থেকে শুরু করে ২.১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত গিয়েছে। অন্যদিকে, কেটিএম ২৫০ অ্যাডভেঞ্চার বাইকটির এক্স শোরুম মূল্য ২.৪৪ লাখ টাকা। ফলে একটু কম বাজেটে ইয়েজদি অ্যাডভেঞ্চার উপযুক্ত বিকল্প।