WhatsApp Scam: ফের মেসেজিং মাধ্যমকে হাতিয়ার করে জালিয়াতির চেষ্টা! ইউজারদের সতর্ক করল CID
বর্তমানে স্মার্টফোনে অন্য কোনো অ্যাপ্লিকেশন থাক বা না থাক, WhatsApp (হোয়াটসঅ্যাপ) ইনস্টল থাকবেই। কারণ এই ইন্টারনেট নির্ভর যুগে প্রায় প্রত্যেকের জীবনেরই এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মটি। এই মুহূর্তে এর প্রায় ২.৫ বিলিয়নের কাছাকাছি অ্যাক্টিভ ইউজারও রয়েছে। কিন্তু এই বহুল ব্যবহারের জেরে প্রায়শই সাইবার অপরাধীরা WhatsApp-কে হাতিয়ার করে ইউজারদের ক্ষতি করার চেষ্টা করে চলেছে। যতদিন যাচ্ছে, ততই এটি সাইবার আক্রমণের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠছে। এই কারণে, হ্যাকারদের মস্তিষ্কপ্রসূত নানান ধরনের কৌশলের সৌজন্যে ঘটা WhatsApp স্ক্যামের ফলে ইউজারদের গুরুত্বপূর্ণ ডেটা এবং কষ্টার্জিত অর্থ চুরি হওয়ার খবর আকছার টেক দুনিয়ায় ঘোরাফেরা করছে। সেক্ষেত্রে অস্বস্তির ব্যাপার হল যে, সম্প্রতি আবারও এরকম একটি বিপজ্জনক WhatsApp স্ক্যামের খবর প্রকাশ্যে এসেছে। অসমের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট বা CID (সিআইডি) সমস্ত ব্যবহারকারীদেরকে এই ব্যাপারে সতর্ক করেছে। এদিকে সব দেখে শুনে মনে হচ্ছে, কার্যত পুরনো ধাঁচেই ইউজারদের বোকা বানাতে চাইছে স্ক্যামাররা।
WhatsApp-কে হাতিয়ার করে ফের প্রতারণার চেষ্টা
অসম সিআইডি, অতিসম্প্রতি উক্ত স্ক্যামটির বিষয়ে একটি পাবলিক অ্যাডভাইজরি জারি করেছে। সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, চলতি স্ক্যামে হ্যাকাররা ব্যাংকিং কিংবা সরকারী বিভাগের পক্ষ থেকে ইউজারদেরকে ভুয়ো মেসেজ পাঠিয়ে তাদেরকে সাইবার জালিয়াতির ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছে। গ্রাহকদের প্রতারিত করে তাদের গোপনীয় ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করা এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খালি করাই হল সাইবার আক্রমণকারীদের মূল উদ্দেশ্য। আর সাধারণ মানুষের মনে যাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহের উদ্রেক না হয়, সেজন্য জালিয়াতরা প্রখ্যাত সরকারী কর্মকর্তাদের প্রোফাইল ফটো ও নাম ব্যবহার করছে; এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা মুখ্যমন্ত্রীর ছবিও ব্যবহার করেছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে।
এখন প্রশ্ন হল, স্ক্যামাররা এতসব কারসাজি মানে ইউজারদের সাথে যোগাযোগ করছে কীকরে? এই প্রসঙ্গে অসম সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, প্রতারকরা সর্বপ্রথম সরকারি দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কন্ট্যাক্ট লিস্টের অননুমোদিত অ্যাক্সেস হাসিল করে। এর পর সরকারি ওয়েবসাইট থেকে কোনো একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে তারা। ব্যস শুরু হয় তাদের খেল! বিভিন্ন ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেইল বা মেসেঞ্জার থেকে সিনিয়র অফিসার বা নেতাদের নামসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও স্ক্যামাররা নিজেদের হাতের মুঠোর মধ্যে নিয়ে আসে। আর তারপর তাদের নাম ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে ভুয়ো মেসেজ করে, সহজসরল ইউজারদের সাইবার জালিয়াতির ফাঁদে ফেলে তাদের থেকে গিফ্ট কার্ডের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করার প্রয়াস করে হ্যাকাররা।
সেক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ডেটার পাশাপাশি নিজেদের কষ্টার্জিত ধনরাশিকে সুরক্ষিত রাখতে চাইলে এই ধরনের ভুয়ো মেসেজের রিপ্লাই না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অসমের সিআইডির কর্মকর্তারা। সেইসাথে তারা একথাও জানিয়েছেন যে, বারংবার যদি এই ধরনের মেসেজ আসতে থাকে, তাহলে ইউজাররা যেন অবিলম্বে সাইবার সেলে অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি WhatsApp কর্তৃপক্ষের কাছেও নিজেদের অভিযোগ দায়ের করেন। আসলে, নিত্যনতুন ফন্দিফিকিরের সাহায্যে WhatsApp-কে হাতিয়ার করে হ্যাকারদের ক্রমবর্ধমান জালিয়াতি আটকাতে, চোখকান খোলা রাখার পাশাপাশি যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করাই হল এক এবং একমাত্র উপায়!