SBI, PNB ও Canara ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের জন্য রেড অ্যালার্ট জারি! এক ক্লিকেই খালি হবে অ্যাকাউন্ট

By :  techgup
Update: 2022-09-28 13:06 GMT

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বিশেষ করে কোভিড-১৯ ভাইরাসের আগমনের পর থেকে নগদ লেনদেনের পরিবর্তে গোটা দেশে ডিজিটাল ওয়ালেট এবং ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের ব্যবহার অধিক মাত্রায় বেড়ে গিয়েছে, যার ফলে এখন ব্যাংকিং স্ক্যাম এবং সাইবার ক্রাইমও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিত্যনতুন পদ্ধতি ব্যবহার করে সহজসরল সাধারণ মানুষকে প্রায়ই অনলাইন জালিয়াতির ফাঁদে ফেলছে স্ক্যামাররা, যার জেরে আমজনতাকে হামেশাই সাইবার জালিয়াতির শিকার হওয়ার পাশাপাশি কখনো কখনো কার্যত সর্বস্বান্তও হতে হচ্ছে। সবচেয়ে অস্বস্তির বিষয়টি হল, অসৎ কার্যকলাপ করা থেকে হ্যাকারদের আটকানো ক্রমশই কঠিন হয়ে যাচ্ছে; আর এর দরুন বিভিন্ন সংস্থাই বারংবার গ্রাহকদেরকে এই ধরনের প্রতারণার ফাঁদ থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য একাধিক সতর্কবার্তা জারি করছে। সেক্ষেত্রে সম্প্রতি আবারও সরকারের পাশাপাশি একাধিক ব্যাংক উপভোক্তাদেরকে সতর্ক করে একটি নির্দেশিকা জারি করেছে।

ফিরে এসেছে SOVA ম্যালওয়্যার, একটু অসতর্ক হলেই খালি হবে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট

সম্প্রতি জানা গিয়েছে যে, সোভা (SOVA) ম্যালওয়্যার আবারও ফিরে এসেছে। যদিও গত মাসেই এই ভাইরাসটির আগমনের খবর মিলেছিল, তবে এখন অ্যান্ড্রয়েড (Android) গ্রাহকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করতে উক্ত ম্যালওয়্যারটি বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করছে বলে চলতি সময়ে ভারত সরকারের পাশাপাশি এসবিআই (SBI), পিএনবি (PNB) এবং কানারা ব্যাংক (Canara Bank)-ও ইউজারদেরকে সোভা ম্যালওয়্যার সম্পর্কে সতর্ক করেছে। এর মধ্যে স্টেট ব্যাংক, গ্রাহকদের মেসেজ পাঠানোর পাশাপাশি একটি টুইটও করেছে। উল্লেখ্য যে, কয়েকদিন আগেই এই ভাইরাসটির সম্পর্কে একটি অ্যাডভাইজরি জারি করেছিল ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের অধীনস্থ সংস্থা ইন্ডিয়ান কম্পিউটার এমার্জেন্সি রেসপন্স টিম বা সিইআরটি-ইন (CERT-In)। ওই সময় রিপোর্টে বলা হয়েছিল যে, ভারতের আগে আমেরিকা, রাশিয়া ও স্পেনের মতো দেশগুলি এই ম্যালওয়্যার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেক্ষেত্রে এবার এই নতুন ধরনের মোবাইল ব্যাংকিং ম্যালওয়্যার ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ইউজারদেরকে ঠিক কীভাবে নিশানায় আনছে আততায়ীরা? চলুন জেনে নিই।

https://twitter.com/TheOfficialSBI/status/1572968823325880324

SOVA ম্যালওয়্যার কীভাবে কাজ করে?

ব্যাংকিং সংস্থাগুলির মতে, সোভা একটি ব্যাংকিং ম্যালওয়্যার (ভাইরাস) যা কোনো প্রমাণ ছাড়াই সম্পূর্ণভাবে ইউজারদের অজান্তে তাদের ফোনে মজুত থাকা ব্যাংকিং অ্যাপ্লিকেশনগুলিকে টার্গেট করে। চেনাপরিচিত কয়েকটি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপের মধ্যে নিজেকে লুকিয়ে রাখায় ইউজাররা খুব সহজেই এই ভাইরাসটিকে নিজেদের ডিভাইসে ইন্সটল করে ফেলেন। আর ডিভাইসে প্রবেশ করা মাত্রই উক্ত ক্ষতিকারক ম্য্যালওয়্যারটি তৎক্ষণাৎ সক্রিয় হয়ে ওঠে। এরপরে এটি কমান্ড এবং কন্ট্রোল সার্ভারে ব্যবহারকারীদের ফোনে বিদ্যমান সমস্ত অ্যাপ্লিকেশনের তালিকা প্রেরণ করে, আর তারপরে বিন্দুমাত্র দেরি না করে এই সুযোগটির সদ্ব্যবহার করে ফেলে স্ক্যামাররা। অ্যাপ্লিকেশনের তালিকা সেন্ড করা মাত্রই কমান্ড এবং কন্ট্রোল সার্ভার থেকে টার্গেটেড অ্যাপগুলির জন্য অ্যাড্রেস সেন্ড করা হয়। এর ফলে হ্যাকাররা ইউজারদের ফোনে মজুত থাকা অ্যাপগুলিকে দূষিত ম্যালওয়্যার ও কমান্ড এবং কন্ট্রোল সার্ভারের মাধ্যমে অতি অনায়াসে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

এর দরুন ইউজাররা যখনই নেট ব্যাংকিং অ্যাপ ব্যবহার করে নিজেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অ্যাক্সেস করার জন্য লগ-ইন করেন, তখন এই ম্যালওয়্যারটি চুপিসাড়ে ব্যবহারকারীদের লগ-ইন ডিটেইলস চুরি করে। শুধু তাই নয়, এই ক্ষতিকারক ভাইরাসটি ইউজারদের ফোনে থাকা প্রতিটি মেসেজ, ওটিপি এবং ইমেইলের ওপর কড়া নজর রাখে। আর এর ফলটা যে কী হয়, সেটা নিশ্চয়ই আর আলাদা করে বলে দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। সোভা ম্যালওয়্যার এতটাই বিপজ্জনক যে, এটি টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশনকেও সম্পূর্ণভাবে পরাস্ত করতে সক্ষম। আর সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হল, চাইলেও কিন্তু সহজে এই ধরনের দূষিত ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত অ্যাপকে ডিভাইস থেকে আনইনস্টল করা যায় না।

SOVA ভাইরাসের হাত থেকে সুরক্ষিত থাকার উপায়

এতক্ষণ পর্যন্ত যা বললাম, তা পড়ে আলোচ্য ম্যালওয়্যারটি যে কতটা ভয়ঙ্কর তথা ক্ষতিকারক সেটা নিশ্চয়ই এতক্ষণে সকলেই আঁচ করতে পেরেছেন। ফলে সকল গ্রাহকদের এটির সম্পর্কে সতর্ক থাকা একান্ত আবশ্যক। কিন্তু ঠিক কী পন্থা অবলম্বন করলে এই ভাইরাসের হাত থেকে রেহাই মিলবে? সেক্ষেত্রে বলি, SOVA-র হাত থেকে নিস্তার পেতে হলে Android ইউজারদেরকে শুধুমাত্র অফিসিয়াল অ্যাপ স্টোর থেকে সমস্ত অ্যাপ ডাউনলোড করার পরামর্শ দিয়েছে CERT-In। এছাড়া, কোনো অ্যাপ ডাউনলোড করার পূর্বে তার সম্পূর্ণ তথ্য, সেটি এর আগে কতবার ডাউনলোড করা হয়েছে এবং তার রিভিউ ভালোভাবে পড়ে নেওয়াও খুবই জরুরি। তদুপরি, নিজেদের হ্যান্ডসেট লেটেস্ট ভার্সনে আপডেট করা আছে কি না, তাও ইউজারদের অবশ্যই চেক করে দেখতে হবে। সেক্ষেত্রে যদি ফোন আপডেট না করা থাকে, তাহলে অবিলম্বে গ্রাহকদেরকে তা করে ফেলতে হবে। আবার যদি প্রয়োজন পড়ে, তাহলে মোবাইল ব্যবহারকারীরা নিজেদের ফোন ফরম্যাটও করতে পারেন।

Tags:    

Similar News