6G বাজারে এলে স্মার্টফোন চলে যাবে বাতিলের খাতায়! ভবিষ্যদ্বাণী করলেন Nokia-র সিইও পেক্কা লুন্ডমার্ক
6G Technology: বর্তমানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির যুগে পরিবর্তন আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে গিয়েছে। আজ যা নতুন, কিছুদিন বাদেই তা হয়ে যাচ্ছে ব্যাকডেটেড; আর নিত্যনতুন উদ্ভূত বিভিন্ন টেকনোলজিকে হাতিয়ার করে গোটা বিশ্ব তথা মানুষের জীবনে ক্রমাগত ঘটে চলেছে আমূল পরিবর্তন। যেমন বছরখানেক আগে দুনিয়ায় আগমন ঘটেছিল 4G (৪জি)-র, আর বর্তমানে টেলিকম সংস্থাগুলি 5G (৫জি) রোলআউটের কাজে ব্যস্ত রয়েছে। পরবর্তী প্রজন্মের নেটওয়ার্ক এখনও বিশ্বব্যাপী উপলব্ধ না হলেও জোরকদমে চলছে প্রস্তুতি। চলতি বছর থেকে ভারতেও এই পরিষেবা শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে এরই মধ্যে একটি বড়োসড়ো ঘোষণা করলেন জনপ্রিয় স্মার্টফোন নির্মাতা Nokia (নোকিয়া)-র সিইও পেক্কা লুন্ডমার্ক (Pekka Lundmark)। সম্প্রতি দাভোসে অনুষ্ঠিত 'World Economic Forum' (ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম)-এ লুন্ডমার্ক জানান যে, ২০৩০ সালের মধ্যে 6G (৬জি) প্রযুক্তি চালু হয়ে যাবে বলে তিনি আশা করছেন। অর্থাৎ একথা স্পষ্ট যে, 6G সেলুলার নেটওয়ার্কের হাত ধরে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বিশ্ব প্রযুক্তির দুনিয়ায় ফের একবার ধামাকাদার বিপ্লব আসতে চলেছে!
তবে এই ঘোষণার পাশাপাশি স্মার্টফোন সম্পর্কিত নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোকপাত করেন পেক্কা লুন্ডমার্ক, আর এই প্রসঙ্গে তিনি এমন কিছু কথা জানিয়েছেন যা শুনলে সবাই চমকে যেতে বাধ্য হবেন। সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে নোকিয়ার শীর্ষ প্রধান বলেছেন যে, একবার ৬জি মোবাইল নেটওয়ার্ক চালু হলে অচিরেই ইতিহাস হয়ে যাবে স্মার্টফোন। সোজা কথায় বললে, ৬জি নেটওয়ার্কের আগমন ঘটলে স্মার্টফোন বাতিলের খাতায় চলে যেতে পারে, অর্থাৎ আজকের দিনে ব্যবহৃত এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ডিভাইসটি তখন আর কোনো কাজেই লাগবে না! খুব স্বাভাবিকভাবেই নোকিয়ার সিইও-র এই চাঞ্চল্যকর বিবৃতিতে টেক দুনিয়ায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে৷
লুন্ডমার্কের মতে, ৬জি আসার আগেই মানুষ স্মার্টফোনের তুলনায় স্মার্ট গ্লাস সহ অন্যান্য অত্যাধুনিক ডিভাইস অনেক বেশি পরিমাণে ব্যবহার করা শুরু করবে। তাই এখনকার দিনে স্মার্টফোন সকলের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ তথা অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হলেও ২০৩০ সাল নাগাদ ৬জি-র আগমন ঘটলে তখন স্মার্টফোন আর এতটা বেশি পরিমাণে ব্যবহৃত হবে না। তবে সাধারণ ইন্টারফেস হিসেবে স্মার্টফোনের বদলে কোন ডিভাইসটি আসবে, সে সম্পর্কে খোলসা করে কিছু না বললেও নোকিয়ার সিইও জানিয়েছেন যে, স্মার্টফোন খুব একটা ব্যবহার না হলেও আগামী দিনে এমন ডিভাইস চালু করা হবে যা সরাসরি মানবদেহের সঙ্গে আবদ্ধ থাকবে।
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, লুন্ডমার্কের এই বক্তব্য যে আগামী দিনে ঘোর বাস্তব হতে চলেছে, তার কিছু ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই পাওয়া গেছে। কারণ ইলন মাস্কের Neuralink (নিউরালিঙ্ক)-এর মতো বেশ কয়েকটি কোম্পানি শরীরে এম্বেড করা যেতে পারে, এমন চিপ তৈরি এবং ডেভেলপের জন্য ইতিমধ্যেই কাজ করা শুরু করে দিয়েছে। গত বছরের এপ্রিলে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন কোম্পানিটি তাদের এই কর্মযজ্ঞের ঝলক জনসাধারণের সামনে তুলে ধরতে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিল। সেখানে দেখা গেছে যে, একটি পুরুষ ম্যাকাকের (আফ্রিকান ল্যাঙ্গুর) ব্রেইনে একটি চিপ লাগানো হয়েছে, যার সহায়তায় সে মাইন্ড পং খেলছে। তবে এই সকল কর্মকাণ্ড এবং 6G রোলআউটের কাজ বর্তমানে একদম প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। সেক্ষেত্রে Nokia-র সিইও-র এই ভবিষ্যদ্বাণী প্রকৃতপক্ষেই আগামী দিনে সত্যি বলে প্রমাণিত হবে কি না, তার উত্তর একমাত্র সময়ের কাছেই রয়েছে।