Spyware: মোটা টাকা খরচ করলেই কারো ডিভাইস হ্যাক করার সুবিধা দিচ্ছে এই কোম্পানি
ইদানীংকালে হ্যাকিং শব্দটির সঙ্গে কমবেশি সকলেই পরিচিত। বর্তমান সময়ে যারা কম্পিউটার বা মোবাইলে Facebook (ফেসবুক), Twitter (টুইটার), Gmail (জিমেইল), Gmail (ইন্সটাগ্রাম)-এর মতো সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপগুলি ব্যবহার করেন, উক্ত শব্দটির নাম শুনলেই তাদের মন চঞ্চল হয়ে পড়ে। আর যারা ইতিমধ্যেই হ্যাকিংয়ের কবলে পড়েছেন, তাদের মনে এই দুর্বিষহ ঘটনার যে কী ভীষণ কুপ্রভাব পড়ে, তা আর আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। বলতে গেলে, প্রতিনিয়তই নিত্যনতুন কলাকৌশলে সহজসরল ইউজারদেরকে প্রতারিত করার জন্য হ্যাকাররা নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আর এই হ্যাকিংয়ের জন্যই স্মার্টফোন, ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটারে ইউজারদের স্টোর করা ব্যক্তিগত তথ্য এখন আর নিরাপদ নয়, যেকোনো মুহূর্তেই তা বেহাত হয়ে যেতে পারে। তবে আপনারা শুনলে অবাক হবেন যে, কেবল হ্যাকাররাই যে শুধু ইচ্ছের বশে আপনাদের ডিভাইস হ্যাক করতে পারে তা নয়, এখন অন্য কেউ চাইলেও মোটা টাকা খরচ করে কাউকে দিয়ে আপনাদের ডিভাইস হ্যাক করাতে বা নজরদারি চালাতে পারে! আজ্ঞে হ্যাঁ, চলতি সময়ে মার্কেটে এমন এক স্পাইওয়্যার কোম্পানির আবির্ভাব ঘটেছে, যারা মোটা টাকার বিনিময়ে সাধারণ মানুষের অ্যান্ড্রয়েড (Android) এবং আইওএস (iOS) ডিভাইস হ্যাক করে!
অস্বস্তির নাম Intellexa
কি, শুনে চোখ কপালে উঠে গেল নাকি? তবে অবিশ্বাস্য বলে মনে হলেও কথাটা কিন্তু একেবারে খাঁটি সত্যি। আজ আমরা এই প্রতিবেদনে আপনাদেরকে এমনই একটি কোম্পানির কথা জানাতে চলেছি, যার নাম ইনটেলেক্সা (Intellexa)। এই প্রতিষ্ঠানটির কাজই হল মোটা টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস ডিভাইস হ্যাক করা। তবে কোম্পানিটি এতটাই গোপনে এই কাজটি করে যে পুলিশ কিংবা সাইবার ডিপার্টমেন্টের ঘূণাক্ষরেও এ সম্পর্কে টের পাওয়া একরকম দুঃসাধ্য বললেই চলে। আর চমকে দেওয়ার মতো বিষয়টি হল, যেকোনো ব্যক্তিই মোটা টাকা ব্যয় করে সংস্থাটিকে দিয়ে এই কাজ করিয়ে নিতে পারে। অর্থাৎ মোদ্দা কথা হল, আপনার কাছে যদি বিপুল পরিমাণ টাকা থাকে, তাহলে চাইলেই এই সংস্থাটিকে দিয়ে আপনি যে কারোর ডিভাইস হ্যাক করিয়ে নিতে পারবেন। তাহলে চলুন, ইনটেলেক্সার এই চাঞ্চল্যকর কর্মকাণ্ড সম্পর্কে একটু বিশদে জেনে নেওয়া যাক।
ডিভাইস হ্যাক করার জন্য Intellexa নেয় প্রায় ৬৪ কোটি টাকা!
আপনাদের জানিয়ে রাখি যে, ইনটেলেক্সা হল একটি ইউরোপীয় সংস্থা। সিকিউরিটি উইক (Security Week)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, সংস্থাটি মোটা টাকার বিনিময়ে অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস ডিভাইস উভয়ই হ্যাক করে। আর এই অসামান্য কুকর্মের জন্য সংস্থাটি মানুষের কাছ থেকে এতটাই বেশি টাকা নেয় যে অর্থের সঠিক পরিমাণটি জানতে পারলে অনেকেরই চোখ রীতিমতো কপালে উঠবে, এমনকি অনেকে বাকরুদ্ধও হয়ে যেতে পারেন! প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইনটেলেক্সা হ্যাকিংয়ের জন্য ৮০ লাখ ডলার (প্রায় ৬৪ কোটি টাকা) পারিশ্রমিক নেয়!
কীভাবে হ্যাকিংয়ের ব্যবসা চালায় Intellexa?
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, দূর থেকে ইউজারদের ডিভাইস হ্যাক করার জন্য সংস্থাটি মূলত জিরো-ডে ভালনারেবিলিটিকে হাতিয়ার করে। এক্ষেত্রে কোম্পানিটি ব্যবহারকারীদের অ্যান্ড্রয়েড বা আইওএস মোবাইলে পেলোড ইনজেক্ট করে তাদের যাবতীয় ব্যক্তিগত ডেটা হাতিয়ে নিতে সক্ষম হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি একবার এই সংস্থাটিকে মোটা টাকা প্রদান করলেই তারা হ্যাক করতে পারে ১০টি অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস ডিভাইস। অর্থাৎ সোজা ভাষায় বললে, সংস্থাটির অফার হল – "একবার টাকা খসাও, আর হ্যাক করো যে কারোর অ্যান্ড্রয়েড কিংবা আইওএস ডিভাইস"!
যে কাউকে যখন-তখন বিপদে ফেলতে পারে Intellexa
সবচেয়ে বিপজ্জনক ব্যাপার হল, Intellexa, খুব সহজেই আইওএস ১৫.৪.১ (iOS 15.4.1) এবং লেটেস্ট অ্যান্ড্রয়েড ১২ (Android 12) অপারেটিং সিস্টেমকে টার্গেট করতে পারে বলে জানা গিয়েছে। ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই এই চাঞ্চল্যকর খবরটি প্রকাশ্যে আসায় রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছে টেকপাড়া। যদিও সংস্থাটির তরফে এখনও এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি, তবে নিরাপদে এবং সুরক্ষিত থাকতে চাইলে চোখকান খোলা রাখার পাশাপাশি যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করে চলাই শ্রেয়।