টাটার হাত ধরে বদলে যাবে ভারত! দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি প্রথম চিপ আসছে এই বছর
ভারত সরকার বর্তমানে এদেশের মাটিতে একটা শক্তিশালী সেমিকন্ডাক্টর ইকো-সিস্টেম গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় আছে। যেকারণে বিগত দু-তিন বছরের মধ্যে একাধিক স্কিম চালু করা হয়েছে। ফলস্বরূপ, বহু নামি সেমিকন্ডাক্টর ব্র্যান্ড এদেশে বিনিয়োগের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং তাদের আবেদন ইতিমধ্যেই গৃহীতও হয়েছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রির ভবিষ্যত যে খুবই উজ্জ্বল তা অনুমানসাপেক্ষ।
সম্প্রতি আবার এখন এমন একটা খবর সামনে এসেছে যা, ভারতের সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রির অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেই মনে হচ্ছে। আসলে গুজরাটের আহমেদাবাদ জেলার ধলেরা নামের একটি শহরে টাটা গ্রুপ (Tata Group) -এর একটি ম্যানুফাকচারিং প্ল্যান্ট আছে। দাবি করা হচ্ছে, এই প্ল্যান্টে ২০২৬ সালের মধ্যে প্রথম 'মেড-ইন-ইন্ডিয়া' সেমিকন্ডাক্টর চিপ প্রস্তুত করার কাজ সম্পন্ন করা হবে। ধলেরার ৯১,০০০ কোটি টাকার সেমিকন্ডাক্টর ফ্যাব্রিকেশন ইউনিটের মালিক সংস্থা টাটা ইলেক্ট্রনিক্স (Tata Electronics)-এর পার্টনার তাইওয়ানের 'পাওয়ারচিপ সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কর্পোরেশন' (PSMC) -এর এক কর্ণধার নিশ্চিত করেছে এই খবর।
প্রসঙ্গত, ধলেরার প্ল্যান্টে বর্তমানে প্রতি মাসে ৫০,০০০টি পর্যন্ত ওয়েফার (wafer) নির্মিত হয়। এক্ষেত্রে ওয়েফার হল একটি সেমিকন্ডাক্টর উপাদান, যা খুবই পাতলা এবং সিলিকন নির্মিত হয়। এটি সেমিকন্ডাক্টর এবং ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়।
এদিকে PSMC সংস্থার চেয়ারম্যান ফ্রাঙ্ক হুয়াং (Frank Huang) হালফিলে একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে, ধলেরা প্ল্যান্টে প্রথমে ২৮ ন্যানোমিটার চিপসেট তৈরীর কাজ করা হবে। তবে ভবিষ্যতে ২২ ন্যানোমিটার পর্যন্ত সাইজের এসওসি নির্মাণ করা হতে পারে। যদি সত্যি এমনটা বাস্তবায়িত করা যায়, তবে ভারতের সেমিকন্ডাক্টর ইকো-সিস্টেমের অগ্রগতি কেউ আটকাতে পারবে না।
এই ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিটে উচ্চ-পারফরম্যান্স সম্পন্ন কম্পিউট চিপ উৎপাদনের পাশাপাশি বৈদ্যুতিক যানবাহন (EV), টেলিকম, ডিফেন্স, অটোমোটিভ, কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স, ডিসপ্লে এবং পাওয়ার ইলেকট্রনিক্সের মতো বিভিন্ন ধরণের প্রোডাক্টে ব্যবহারের জন্য পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট চিপও তৈরি করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে টাটা ইলেট্রনিক্স এবং PSMC সংস্থা দুটির এই যৌথ প্রয়াস ভারতীয় সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রিতে প্রচুর নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি করতে পারে।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকার সেমিকন্ডাক্টর প্রোডাক্ট উৎপাদনের কাজ আরো ব্যাপকভাবে করার জন্য হালফিলে গুজরাটে দুটি এবং আসামে একটি সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান্ট নির্মাণের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। এর জন্য আনুমানিক ১.২৬ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে।