Laptop-Tablet আমদানি ব্যান করায় ভারতের ওপর ক্ষুব্ধ আমেরিকা, তবে কি শুরু নতুন ঝামেলা?
এই মাসের শুরুতে (পড়ুন গত ৪ঠা আগস্ট) ভারত সরকার একটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে – কেন্দ্রের তরফে বিদেশ থেকে ল্যাপটপ ও ট্যাবলেট আমদানিতে জারি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। এক্ষেত্রে আগামী ১লা নভেম্বর, ২০২৩ থেকে এই নতুন নিয়ম কার্যকর হবে। আর একবার নিয়ম লাগু হলে চীন, জাপান, কোরিয়া, মার্কিন প্রদেশ ইত্যাদি বাজার থেকে কোম্পানিগুলি এদেশে এই জাতীয় ডিভাইস ইম্পোর্ট করতে পারবেনা। স্বাভাবিকভাবেই মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তে বহু জনপ্রিয় কোম্পানি অস্বস্তিতে পড়েছে, তবে একইসাথে এমন সিদ্ধান্তে পুরোপুরি বিরক্ত হয়ে গেছে আমেরিকাও। মার্কিন বিজনেস হেড ক্যাথরিন সম্প্রতি ল্যাপটপ এবং ট্যাবলেট আমদানিতে ভারতের লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এখন প্রশ্ন উঠছে যে, ভারত সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে চিন্তিত কেন আমেরিকা?
ভারতের নতুন লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া ও কিছু কথা
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে পড়শি দেশ চীনের বিভিন্ন প্রোডাক্ট এবং পরিষেবাকে বারবার নিষেধাজ্ঞার ঘেরাটোপের মধ্যে এনেছে ভারত সরকার। তবে কয়েকদিন আগে সরকারের তরফে আরেকটি নতুন নিয়ম জারি করা হয়েছে এবং সেখানে বলা হয়েছে যে, কোনো কোম্পানি যদি বিদেশ (শুধু চীন নয়) থেকে ভারতে ল্যাপটপ জাতীয় ডিভাইস আমদানি করতে চায়, তাহলে তাকে ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফরেন ট্রেড (DGFT)-এর কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। ডিজিএফটি কর্তৃক আমদানির অনুমোদন না পেলে ল্যাপটপ বা ট্যাবলেট এদেশে আমদানি করা যাবেনা।
ভারত সরকারের নতুন নিয়মে আমেরিকার সমস্যা কী?
এক্ষেত্রে আমদানি সংক্রান্ত সরকারের এই নতুন নিয়মে আমেরিকা বেশ লোকসানের মুখে পড়তে পারে। কারণ ভারতের বাজারে আমেরিকান কোম্পানিগুলির বিশাল আধিপত্য রয়েছে – বিশেষ করে ল্যাপটপ এবং ট্যাবলেট ক্যাটেগরিতে। যেমন, Apple থেকে শুরু করে Dell-এর মতো কোম্পানিগুলির ইন্ডিয়ান মার্কেটে মোটা অঙ্কের শেয়ার আছে৷ কিন্তু এই সমস্ত সংস্থাগুলি ভারতে ল্যাপটপ এবং ট্যাবলেট তৈরি করে না, বরং এগুলি বিদেশ থেকে আমদানি করে। এমতাবস্থায় রয়টার্সের সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, লাইসেন্সিং প্রক্রিয়াটি কার্যকর হলে জনপ্রিয় বৈদেশিক সংস্থাগুলির শিপমেন্টে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। আর তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের ব্যবসায়িক ক্ষতির বিষয়ে উদ্বিগ্ন।
কেন ল্যাপটপ, ট্যাবলেট আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা ভারতের?
অনেকেই বলছেন যে, যেহেতু কোম্পানিগুলি ল্যাপটপ, কম্পিউটার, ট্যাবলেট ইত্যাদি ভারতে তৈরি না করে সেগুলি তাদের নিজস্ব দেশীয় বাজার থেকে আমদানি করে, তাই হয়তো মেড ইন ইন্ডিয়া কর্মসূচির ওপর জোর দিয়ে ভারতের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে সরকার এই নিষেধাজ্ঞা জারি করতে চায়। ইতিমধ্যে সরকার পিএলআই (PLI) স্কিমের অঙ্ক বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে এই বিষয়ে সরকার প্রকাশ্যে কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি। বরঞ্চ কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলছেন, দেশের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই device আমদানির ক্ষেত্রে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ সরকার বিশ্বাস করে যে এরকম ল্যাপটপের হার্ডওয়্যারে নিরাপত্তা সমস্যা থাকতে পারে এবং নাগরিকদের সংবেদনশীল বা ব্যক্তিগত ডেটার সাথে আপস করা হতে পারে।