টাওয়ার বসানো নিয়ে চলছে জালিয়াতি, BSNL, Jio, Airtel ও Vi গ্রাহকদের সতর্ক করলো ট্রাই
দিন দিন ভারতে সাইবার জালিয়াতির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। আর তাই সরকারি এবং বেসরকারি উভয় টেলিকম সংস্থাগুলিই স্প্যাম কলের মাধ্যমে বেড়ে যাওয়া আর্থিক জালিয়াতি রোধ করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। এরপরও প্রতারকেরা মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ চুরি করার জন্য নিত্য নতুন উপায় খুঁজে বের করে ঠকাচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
সম্প্রতি শাহগঞ্জ আলবাতিআয় এমনই একটি ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। আর এই ঘটনায় জড়িতের নাম মালতি বর্মা, যিনি আগ্রার একটি স্কুলের শিক্ষিকা। জানা গেছে প্রথমে ঐ শিক্ষিকার কাছে হোয়াটসঅ্যাপে একটি কল আসে। যেখানে এক অপরিচিত ব্যক্তি নিজেকে পুলিশ বলে পরিচয় দেয় এবং জানায় যে তার মেয়ে একটি গুরুতর অপরাধের সাথে জড়িত। এরপর ওই ব্যক্তি মালতি বর্মার মেয়ের মুক্তির জন্য ১ লক্ষ টাকা দাবিও করে। আর দীর্ঘ সময় ধরে চলা এই ডিজিটাল প্রতারণার কারণে শেষমেষ প্রাণ হারাতে হয় মালতি বর্মাকে।
মালতি বর্মা একজন স্কুল শিক্ষিকা হয়েও প্রতারকদের প্রতারণা শিকার হয়েছিলেন। তাই এই ধরনের প্রতারণা থেকে বাঁচতে সাধারন মানুষদের আরো বেশি সতর্ক হওয়া দরকার। আর সেই কারণেই টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (TRAI) সম্প্রতি আরেকটি নতুন সতর্কতা জারি করেছে।
TRAI জানিয়েছে যে, বর্তমানে টেলিকম ব্যবহারকারীদের মোবাইল টাওয়ার ইনস্টলেশনের অফার দিয়ে নতুন ধরনের একটি জালিয়াতি শুরু হয়েছে। কিন্তু টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (TRAI) অথবা ডিপার্টমেন্ট অফ টেলিকমিউনিকেশন (DoT) মোবাইল টাওয়ার বসানোর জন্য বা ভাড়া দেওয়ার জন্য এই মুহূর্তে কোনো রকম ঘোষণা করেনি। তাই সাধারণ মানুষ যেন কোনো ভাবেই এই ধরনের তথ্যের উপর বিশ্বাস করে কাউকে কোনো অর্থ প্রদান না করে।
TRAI আরো উল্লেখ করেছে যে, একটি মোবাইল টাওয়ার কেবলমাত্র টেলিকম পরিষেবা প্রদানকারী (TSP) অথবা ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রোভাইডার (IP-1) দ্বারা লাইসেন্সিং এবং রেজিস্ট্রেশন শর্তাবলী অনুযায়ী ইনস্টল করা হয়। তাই কারোর কোনো অফারে বিশ্বাস করার আগে, ব্যবহারকারীরা যেন টেলিযোগাযোগ বিভাগের ওয়েবসাইট থেকে এর সত্যতা যাচাই করে নেয়।
কিভাবে এই জালিয়াতি করা হচ্ছে?
* স্ক্যামাররা প্রথমে সরকারি কর্মচারী, ইঞ্জিনিয়ার বা সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়ে প্রিন্ট সংবাদ মাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। অথবা তারা সরাসরি এসএমএস বা ফোন করেও এই অফার সম্পর্কে জানাচ্ছে।
* এরপর সাধারণ মানুষ বিজ্ঞাপন, এসএমএস বা কলগুলিতে বিশ্বাস করে এই জালিয়াতিতে নিজেদের সামিল করছে।
* আর একবার তারা কোনো রকম প্রতিক্রিয়া জানালে প্রতারকেরা ঘন ঘন তাদের সাথে যোগাযোগ করছে।
* এরপর তারা প্রতারিতদের বিশ্বাস অর্জনের জন্য তাদের বিভিন্ন ধরনের জাল নথিও পাঠাচ্ছে।
* তারপর প্রতারকরা রেজিস্ট্রেশন ফি বা সিকিউরিটি ডিপোজিটের জন্যছে অর্থ দাবি করছে।
* আর একবার প্রতারিত প্রতারকদের অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করলে, তারা সঙ্গে সঙ্গে সেই অর্থ তুলে নিচ্ছে এবং সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দিচ্ছে।