Yezdi Adventure: ইয়েজদি-র নবজন্ম, ফিরল আধুনিক হয়ে, লঞ্চ করল অ্যাডভেঞ্চার বাইক, Royal Enfield Himalayan-এর সঙ্গে টক্কর

৭০ থেকে ৯০-এর দশকের পুরনো স্মৃতি ফিরে এল তরতাজা হয়ে। মাহিন্দ্রা’র শাখা সংস্থা ক্ল্যাসিক লেজেন্ডস (Classic Legends)-এর হাত ধরে আজ নবজন্ম হল ইয়েজদি (Yezdi)-র। ২৫০ সিসি টু-স্ট্রোক, ৩৫০ সিসি টুইন, এবং ১৭৫ সিসি সিঙ্গেল সিলিন্ডার ইঞ্জিনের সৌজন্যে একদা ইয়েজদির স্থান পাকা ছিল বাইকপ্রেমীদের হৃদয়ে। সংস্থার সবচেয়ে জনপ্রিয় মোটরসাইকেলটি বলতে গেলে সেটি ছিল ২৫০ সিসি ইঞ্জিনের। ৯০-এর দশকের মাঝ পর্যন্ত যার বিক্রি জারি রাখা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পেরে বাজার থেকে বিদায় নেয় তারা। তবে সময়ের কালচক্র ফের একবার নির্ধারণ করল ইয়েজদির ভাগ্য। প্রায় ২৬ বছর পর আজ (১৩ জানুয়ারি) নতুনরূপে ভারতে প্রত্যাবর্তন করল সংস্থাটি। এবার আরও আধুনিক হয়ে।

তিনটি নতুন মোটরসাইকেল নিয়ে ফিরেছে ইয়েজদি৷ মজার বিষয় হল, স্টাইল ও ব্যবহারিক দিক থেকে মডেলগুলি বাইকের যে শ্রেণীতে পড়ছে, সেই হিসেবেই তাদের নামকরণ হয়েছে — ইয়েজদি অ্যাডভেঞ্চার (Yezdi Adventure), ইয়েজদি স্ক্র্যাম্বলার (Yezdi Scrambler) এবং ইয়েজদি রোডস্টার (Yezdi Roadster)। এই প্রতিবেদনে ইয়েজদির ফ্ল্যাগশিপ মডেল অ্যাডভেঞ্চার সম্পর্কে খুঁটিনাটি রইল। ইয়েজদি স্ক্র্যাম্বলার এবং ইয়েজদি রোডস্টারের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য টেকগাপের একটি পৃথক প্রতিবেদনে আলোচনা করা হয়েছে।

ইয়েজদি অ্যাডভেঞ্চার দাম (Yezdi Adventure Price)

হালে অর্গানাইজইড বা সোলো বাইক ট্রিপের রমরমা বেড়েছে। লাদাখ, ভুটান, শিলঙের পার্বত্য রাস্তা জয়ের নেশা চেপেছে অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী বাইকারদের মধ্যে। মোটরসাইকেলে লম্বা পথ পাড়ি দেওয়ার পছন্দ থেকেই সাম্প্রতিক সময়ে এই সেগমেন্টে বেস্ট সেলারে পরিণত হয়েছে Royal Enfield Himalayan। একে টেক্কা দিতেই দুর্গম পথ পেরোতে সক্ষম অফ-রোডার Yezdi Adventure-এর বাজারে আসা। আবার দাম প্রধান প্রতিপক্ষ Royal Enfield Himalayan-এর থেকে কম।

ইয়েজদি অ্যাডভেঞ্চার তিনটি রঙে পাওয়া যাবে। রঙ অনুযায়ী মূল্য আলাদা৷ যেমন স্লিক সিলভার (Slick Silver) কালার অপশনের জন্য খরচ হবে ২.০৯ লক্ষ টাকা। আবার ম্যাম্বো ব্ল্যাক (Mambo Black) এবং রেঞ্জার ক্যামো (Ranger Camo) পেইন্ট অপশনের দাম রাখা হয়েছে যথাক্রমে ২.১১ লক্ষ ও ২.১৮ লক্ষ টাকা (এক্স-শোরুম)।

ইয়েজদি অ্যাডভেঞ্চার ডিজাইন (Yezdi Adventure Design)

অ্যাডভেঞ্চার বাইকের সিগনেচার ডিজাইন রয়েছে ইয়েজদির এই নতুন মডেলে। স্টাইলিংয়ে কিছুটা সাবেকি আবার কিছুটা আধুনিকতার ছাপ। বড় উইন্ডস্ক্রিন, ফ্রন্ট বিক, স্প্লিট স্টাইলের সিট, প্রোটেক্টিভ কেসিংযুক্ত গোলাকার হেডল্যাম্প, ফর্ক গেইটার, ২১/১৭ ইঞ্চি ওয়্যার স্পোকড হুইল, ট্যাঙ্ক ব্রেস, এবং লাগেজ র‌্যাক, ও টল সেট হ্যান্ডেলবার রয়েছে ইয়েজদি অ্যাডভেঞ্চার বাইকে। উল্লেখ্য, ইয়েজদি স্ক্র্যাম্বলার এবং ইয়েজদি রোডস্টারে টুইন এগজস্ট থাকলেও অ্যাডভেঞ্চারে সিঙ্গেল এগজস্ট সিস্টেম দেওয়া হয়েছে।

আবার লং ট্রিপে যেতে চাইলে একঝাঁক অ্যাক্সেসরিজের বিকল্প থাকছে৷ যার মধ্যে রয়েছে স্যাডেলব্যাগ, প্যানিয়ার (হার্ড লাগেজ) বক্স, জেরি ক্যান, এবং হ্যান্ডগার্ড।

ইয়েজদি অ্যাডভেঞ্চার মেকানিক্যাল স্পেসিফিকেশনস (Yezdi Adventure Mechanical Specifications)

ইয়েজদি অ্যাডভেঞ্চার বাইক ৩৩৪ সিসির লিকুইড কুল্ড সিঙ্গেল সিলিন্ডার ইঞ্জিনে দৌড়বে, যা ৮,০০০ আরপিএম গতিতে ৩০.২ পিএস পাওয়ার এবং ৬,৫০০ আরপিএম গতিতে ২৯.৯ এমএম টর্ক উৎপন্ন করতে পারে। গিয়ারবক্সের সংখ্যা ছয়।

ইয়েজদির বাকি দুই মডেলের মতো অ্যাডভেঞ্চার বাইকটি ডাবল ক্র্যাডল ফ্রেমের উপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছে। তবে অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিং বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে তাতে কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। সাসপেশনের দায়িত্বভার সামনের টেলিস্কোপিক ফর্ক ও পিছনের প্রিলোড অ্যাডজাস্টেবল মনোশকের উপর।

কন্টিনেন্টালের ডুয়েল চ্যানেল এবিএস-সহ Yezdi Adventure বাইকের দু’দিকেই রয়েছে ডিস্ক ব্রেক। ক্যালিপারগুলি ByBre-এর। বাইকটির গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ২২০ মিমি এবং সিটের উচ্চতা ৮১৫ মিমি। এছাড়া ওজন (কার্ব) ১৮৮ কেজি এবং ফুয়েল ট্যাঙ্কের ক্যাপাসিটি ১৫.৫ লিটার।

ইয়েজদি অ্যাডভেঞ্চার ফিচার্স (Yezdi Adventure Features)

ফিচারগুলির দিক থেকে ইয়েজদি অ্যাডভেঞ্চার বাইকে সেগমেন্ট ফার্স্ট ১৫ ডিগ্রি পর্যন্ত অ্যাডজাস্টেবল ডিজিটাল এলসিডি ইন্সট্রুমেন্ট ডিসপ্লে রয়েছে। যা ব্লুটুথের মাধ্যমে স্মার্টফোনের সঙ্গে কানেক্ট করা যাবে। তারপর বাইকের ডিসপ্লের মধ্যেই দেখা যাবে আপকামিং কল, মিসড কল এলার্ট, ব্যাটারি স্টেটাস, এসএমএস, ফোনের সিগন্যাল, টার্ন বাই টার্ন নেভিগেশন-সহ বিভিন্ন তথ্য। এছাড়া অন্যান্য বিশেষ ফিচারগুলির মধ্যে ফুল-এলইডি লাইটিং, ইউএসবি পোর্ট ও টাইপ সি চার্জিং পোর্ট রয়েছে।