সদ্য অনুষ্ঠিত স্প্রিং লোডেড ইভেন্টে Apple তাদের ডেস্কটপ কম্পিউটার iMac এর নতুন ভার্সন লঞ্চ করল। কমপ্যাক্ট, তুলনামূলক পাতলা ডিজাইন ও M1 চিপের সহযোগে আপগ্রেড করা এই মডেলটি ইউজাররা এখন পেয়ে যাচ্ছেন তাদের পছন্দসই সাতটি রঙে। অ্যাপল জানিয়েছে, শক্তিশালী কর্মক্ষমযুক্ত এই নতুন আইম্যাকটি মাত্র ১১.৫ মিমি পুরু, অর্থাৎ, দুটি iPhone 12 mini পাশাপাশি রাখলে তাদের থেকেও পাতলা হবে এর মনিটার। ২৪-ইঞ্চির এই আইম্যাকটি 4.5K রেটিনা ডিসপ্লে সহ এসেছে, যা ১১.৩ মিলিয়ন পিক্সেল, ৫০০ নিট অব্দি স্ক্রিন ব্রাইটনেস এবং ১ বিলিয়নেরও বেশি কালার সমর্থন করে। পাশাপাশি নতুন iMac-এ থাকছে ট্রু টোন টেকনোলজি, যা আপনার পারিপার্শ্বিক পরিবেশের ওপর নির্ভর করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্ক্রিনের ব্রাইটনেস ও কালার টেম্পারেচার এডজাস্ট করবে। ফলে এই অল-ইন-ওয়ান ডেস্কটপ কম্পিউটারটি স্ক্রিনে উন্নত এবং নিখুঁত মানের রং প্রদর্শন করার সাথে আপনার আইসাইটেরও খেয়াল রাখবে।
নতুন Apple iMac এসেছে দুটি ভ্যারিয়েন্টে
M1 চিপ যুক্ত এই নতুন আগত আইম্যাকটি ২টি ভ্যারিয়েন্টে উপলব্ধ। যার মধ্যে একটি মডেল ৮-কোর সিপিইউ এবং ৭-কোর জিপিইউ সহযোগে এসেছে। এই মডেলটিতে স্টোরেজ আপগ্রেড করার বিকল্প দেওয়া হয়েছে, যেখান থেকে ইউজাররা ৫১২ জিবি বা ১ টিবি অব্দি স্টোরেজ বাড়াতে পারবে। অন্যদিকে, আরেকটি শক্তিশালী মডেলে থাকছে- ৮-কোর সিপিইউ এবং ৮-কোর জিপিইউ সহ। এটিতে ইউজাররা ১৬ জিবি র্যাম এবং ২ টিবি পর্যন্ত স্টোরেজ আপগ্রেড করতে সক্ষম হবেন। এছাড়া, এই ২টি মডেলে ডিফল্ট হিসাবে ৮ জিবি র্যাম এবং ২৫৬ জিবির ইন্টারনাল স্টোরেজ তো থাকছেই।
আইম্যাকটির কানেক্টিভিটির ও পোর্টের কথা বললে এতে পাওয়া যাবে, ২টি থান্ডারবোল্ট বা ইউএসবি ৪ পোর্ট, তবে শক্তিশালী ভ্যারিয়েন্টটিতে থাকছে অতিরিক্ত আরো ২টি ইউএসবি ৩ পোর্ট। এছাড়া দুটো মডেলেই রয়েছে ওয়াই-ফাই ৬, পাওয়ার ব্রিকের মধ্যে ইন-বিল্ড একটি ইথারনেট পোর্ট। ক্রেতারা তাদের নির্বাচিত আইম্যাকের রঙের সাথে মানানসই একটি বিদ্যুৎ সংযোগকারী কেবল পাবেন, যা চুম্বকের দ্বারা মনিটরের পেছনে যুক্ত থাকে। নতুন আইম্যাকটিতে একটি ১০৮০পি ফেসটাইম এইচডি ক্যামেরা, স্টুডিও-মানের মাইক, ছয়টি স্পিকারযুক্ত সাউন্ড সিস্টেম ও ফ্রেমের বাঁ দিকে একটি অডিও জ্যাক রয়েছে - এক কথায় বলতে গেলে সর্বকালের সেরা ক্যামেরা এবং অডিও প্রযুক্তি নিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে এই আইম্যাকটি।
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, iMac এর সাথে যদি ইউজারদের কাছে আইফোনও থাকে তবে সেক্ষেত্রে তারা বিশেষ সুবিধে ভোগ করবেন। কারণ এই ডেস্কটপ কম্পিউটারে থাকা প্রযুক্তির সাহায্যে আইফোনে আসা সমস্ত ফোন কল ও এসএমএস -এর উত্তর সরাসরি আইম্যাক থেকেই দেওয়া যাবে। এই মডেলে একটি ইউনিভার্সাল ক্লিপবোর্ডও রয়েছে যা দুটি ডিভাইসের মধ্যে ফাইল কপি করতে সাহায্য করে।
Apple এক্ষেত্রে একটি নতুন ওয়্যারলেস ম্যাজিক কী-বোর্ড আনার কথাও ঘোষণা করেছে। যার মধ্যে দু প্রকারের কী-বোর্ড পাওয়া যাবে- একটি নিউমারিক কী-প্যাড যুক্ত ও আরেকটি নিউমারিক হীন কী-প্যাড। দুটিতেই স্পটলাইট, ডিক্টেশন, ডু নট ডিস্টার্ব এবং ইমোজির মতো ফিচার থাকবে। পাওয়া যাবে একটি বিল্ড-ইন টাচ আইডি প্রোগ্রাম। এই ফিচারের দ্বারা ইউজাররা তাদের কম্পিউটারে লগ-ইন করা, অ্যাপল পে অ্যাপ দিয়ে কেনাকাটা করা বা কোনো অ্যাপ ডাউনলোড করা, সবই করে ফেলতে পারবেন শুধুমাত্র আঙুলের ছোঁয়াতে। শুধু তাই নয়, আইম্যাকের সাথে ম্যাজিক মাইস এবং ম্যাজিক ট্র্যাকপ্যাডও দিচ্ছে অ্যাপল।
Apple iMac দাম ও লভ্যতা :
আইম্যাকের ৭-কোর জিপিইউ সহযোগে আসা মডেলটির প্রারম্ভিক মূল্য ১,২৯৯ ডলার (প্রায় ৯৭,৫০০ টাকা)। এতে ইথারনেট পোর্ট ও ম্যাজিক কী-বোর্ডে টাচ আইডি নেই। ৮-কোর জিপিইউ, ইথারনেট পোর্ট ও ম্যাজিক কী-বোর্ডে টাচ আইডি যুক্ত আরেকটি মডেলের দাম শুরু হচ্ছে ১,৪৯৯ ডলার ( প্রায় ১,১২,৫০০ টাকা) থেকে।
সর্বাধিক শক্তিশালী এই আইম্যাকের মডেল দুটিকে গ্রাহকেরা এই শুক্রবার, অর্থাৎ ৩০শে এপ্রিল থেকে অগ্রিম অর্ডার করতে পারবেন এবং জানা যাচ্ছে, মে মাসের দ্বিতীয়ার্ধে এই ডিভাইসটিকে বাজারে উপলব্ধ করা হবে।