চমক কোথায়? iPhone 14 Pro এর এই বিশেষ পাঁচটি ফিচার আগে থেকেই আছে Android ফোনে

Avatar

Published on:

Top 5 iPhone 14 series features are not latest

গত সপ্তাহে টেক জায়েন্ট Apple (অ্যাপল) তাদের ‘ফার আউট’ ইভেন্টে আনুষ্ঠানিকভাবে বহুল প্রত্যাশিত iPhone 14 সিরিজটির ওপর থেকে পর্দা সরিয়েছে, যার ফলে মোট চারটি ফোন বাজারে এসেছে – iPhone 14 (আইফোন ১৪), iPhone 14 Plus (আইফোন ১৪ প্লাস), iPhone 14 Pro (আইফোন ১৪ প্রো), ও iPhone 14 Pro Max (আইফোন ১৪ প্রো ম্যাক্স)। মার্কিনি প্রযুক্তি সংস্থাটির দাবি, এই নেক্সট জেন iPhone সিরিজটিতে অনেক নতুন পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিশেষত নতুন iPhone 14 Pro এবং iPhone 14 Pro Max-এ একাধিক নতুন ফিচারের আগমন ঘটেছে, যার মধ্যে রয়েছে অলওয়েজ-অন ডিসপ্লে বা AoD (এওডি) অপশন, অ্যাকশন মোড এবং ক্র্যাশ ডিটেকশনসহ আরও অনেক কিছু। তবে, এইসব দেখেশুনে আইফোনপ্রেমীরা অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠলেও আজকের প্রতিবেদনে আমরা আপনাদেরকে এমন কিছু কথা জানাতে চলেছি, যা শুনে Apple লাভাররা কিঞ্চিৎ হতাশ হবেন বৈকি!

আসলে ব্যাপারটা হল, অ্যাপল যে সকল চমকপ্রদ ফিচার এই প্রিমিয়াম মডেলগুলিতে এনে সেগুলিকে লেটেস্ট তথা অতি উন্নত মানের ফিচারসমৃদ্ধ হ্যান্ডসেট বলে দাবি করছে, আশ্চর্যজনকভাবে সেগুলি বহুদিন আগেইঅনেক বাজেট রেঞ্জের অ্যান্ড্রয়েড (Android) ফোনেই লক্ষ্য করা গিয়েছে। কি, বিশ্বাস হচ্ছে না নিশ্চয়ই? ভাবছেন স্বল্প কয়েক হাজার টাকা দামের ফোনের সাথে লাখ টাকার আইফোনের তুলনা কেন করছি? তাহলে চলুন, অ্যাপলের লেটেস্ট বলে দাবি করা ফিচারগুলি এর আগে কোন কোন ফোনে ইতিমধ্যেই এসে গিয়েছে, সে সম্পর্কে একটু বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

Always-on display (অলওয়েজ-অন ডিসপ্লে)

এই বছর অ্যাপল আইফোন ১৪ প্রো এবং ১৪ প্রো ম্যাক্সের সাথে আইফোনে প্রথম এওডি চালু করেছে। এই ফিচারটির দৌলতে ফোনের ডিসপ্লে লাইট সর্বদা অন থাকে, যাতে ইউজাররা অতি অনায়াসেই টাইম বা নোটিফিকেশন দেখতে পান। তবে অ্যাপল তাদের স্মার্টফোনে এই প্রথম এওডির আগমন ঘটালেও দীর্ঘদিন ধরেই বহু অ্যান্ড্রয়েড ফোনে এই ফিচারটি উপলব্ধ রয়েছে। ম্যাশেবল (Mashable)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৬ সালে Galaxy S7 Edge (গ্যালাক্সি এস৭ এজ)-এর সৌজন্যে এই ফিচারটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তদুপরি অ্যান্ড্রয়েড ওএস ছাড়াও, Nokia 6303 (নোকিয়া ৬৩০৩) মডেলে ২০০৮ সালে এই ফিচারটিকে দেখা গিয়েছিল। অন্যদিকে, অ্যাপল তাদের আইফোনে হাই রিফ্রেশ রেট নিয়ে আসতেও বেশ খানিকটা দেরি করে ফেলেছে। সংস্থাটি আইফোন ১৩ প্রো (iPhone 13 Pro) এবং আইফোন ১৪ প্রো সিরিজে ১২০ হার্টজ রিফ্রেশ রেট দিয়েছে এবং এই ফোনগুলির দাম ১ লাখ টাকারও বেশি। কিন্তু অ্যান্ড্রয়েডের ক্ষেত্রে, এখন ১৫,০০০ টাকার কমদামি অনেক স্মার্টফোনও ১২০ হার্টজ ডিসপ্লেসহ আসে।

Crash detection (ক্র্যাশ ডিটেকশন)

অ্যাপলের ‘ফার আউট’ লঞ্চ ইভেন্টে সবচেয়ে বেশি আলোচিত সেফটি ফিচারগুলির মধ্যে অন্যতম একটি ছিল ক্র্যাশ ডিটেকশন। সংস্থার এই বহুচর্চিত ফিচারটি কোনো সাপোর্টেড আইফোন বা অ্যাপল ওয়াচ (Apple Watch)-এ অ্যাক্সিলেরোমিটার এবং জাইরোস্কোপের মতো সেন্সরগুলি ব্যবহার করে। তবে এক্ষেত্রে বলে রাখি, ২০১৯ সালে পিক্সেল (Pixel) স্মার্টফোনে এই ফিচারটি আগেই চালু করেছে গুগল (Google)। এক্ষেত্রে ফিচারটি এনাবেল করার জন্য ইউজারদেরকে সেফটি (Safety) অ্যাপ ওপেন করতে হবে> সেটিংস (Settings)-এ যেতে হবে> এরপর ডিটেকশন অ্যান্ড অ্যালার্টস (Detections and alerts)-এ যেতে হবে> সবশেষে কার ক্র্যাশ ডিটেকশন (Car crash detection) অপশনটি টার্ন অন করতে হবে। উল্লেখ্য যে, এই ফিচারটি ব্যবহার করার জন্য লোকেশন এবং মাইক্রোফোনের অ্যাক্সেস প্রদান করা ইউজারদের জন্য বাধ্যতামূলক।

Action Mode (অ্যাকশন মোড)

ক্যামেরা ফিচারের ক্ষেত্রে, অ্যাপল অ্যাকশন মোড নামক একটি নতুন টুল চালু করেছে। এটি ইউজারদেরকে স্টেবল ভিডিও রেকর্ড করতে সাহায্য করবে। তবে অ্যান্ড্রয়েডে বহুদিন আগেই এর সাদৃশ্যপূর্ণ একটি ফিচারের আগমন ঘটেছিল। জানিয়ে রাখি, স্যামসাং (Samsung) তাদের নির্বাচিত কয়েকটি ফোনে ‘সুপার স্টেডি মোড’ (Super Steady mode) নামক এই একইরকম একটি ফিচার অফার করে। আবার, গুগল পিক্সেল ফোনেও স্টেবিলাইজেশন মোড (stabilisation mode) নামে প্রায় একইরকম একটি ফিচার উপলব্ধ রয়েছে।

Auto-focus for selfies (সেলফির জন্য অটো-ফোকাস)

অ্যাপল তাদের নবাগত আইফোনে ফ্রন্ট ক্যামেরার জন্য একটি অটো-ফোকাস ফিচার অ্যাড করেছে। তবে এই অপশনটি ইতিমধ্যেই Samsung Galaxy S22 (স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২২)-এর মতো অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে বিদ্যমান।

Pill-shaped notch (পিল-আকৃতির নচ)

অ্যাপল তাদের স্মার্টফোনে সম্প্রতি একটি পিল-আকৃতির নচ যুক্ত করেছে। সংস্থার তরফে এটির নাম দেওয়া হয়েছে ডায়নামিক আইল্যান্ড (Dynamic Island)। আবার, আইফোন ১৪ প্রো-এর আকৃতি এবং আকারের ওপর ভিত্তি করে কীভাবে প্রযুক্তিগতভাবে এই নচটিকে অ্যাড করা হচ্ছে, লঞ্চের আগে সেই বিষয়টির ওপর সংস্থাটি বিশেষভাবে আলোকপাত করেছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে অ্যাপল যে জিনিসটিকে নিয়ে এত মাতামাতি করছে, সেটি একাধিক অ্যান্ড্রয়েড ফোনে (এমনকি বাজেট রেঞ্জের হ্যান্ডসেটে) ইতিমধ্যেই উপলব্ধ রয়েছে।

সঙ্গে থাকুন ➥