Smartwatch: মোবাইল চোর ধরে দিল স্মার্ট ঘড়ি, মহিলার বুদ্ধিকে কুর্নিশ পুলিশের
প্রযুক্তি যদি বুদ্ধিমত্তা এবং সতর্কতার সাথে ব্যবহার করা হয় তবে বিপদজনক পরিস্থিতিতে তা বর হয়ে উঠতে পারে। সম্প্রতি এরকমই একটি ঘটনার সাক্ষী হয়েছে দিল্লির গুরুগ্রাম। স্মার্টওয়াচের মতো গ্যাজেটগুলি ইদানিংকালে যথেষ্ট প্রচলিত হয়ে উঠেছে। এগুলি যেমন ব্যবহারকারীর পদক্ষেপ গণনা করা বা হৃদস্পন্দন পর্যবেক্ষণ করার মতো ফিচারগুলি প্রদান করে থাকে, তেমনই এর সাহায্যে গ্রাহক তার মোবাইল ফোনের অবস্থানও ট্রেস করতে পারেন। গুরুগ্রামে মুদিখানার দোকানে কেনাকাটা করার সময় এক মহিলার হাত থেকে তার মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে পালায় এক ব্যক্তি। আর স্মার্টওয়াচে সেই ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করে ওই মহিলা পৌঁছে যান ছিনতাইকারীর কাছে এবং তার থেকে ফোনটি আদায় করতেও সক্ষম হন তিনি। ওই তরুণীর এমন সাহসিকতা ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পেয়ে মুগ্ধ গুরুগ্রামবাসী।
তরুণীর ঘুষিতে কুপোকাত মোবাইল ছিনতাইকারী
গুরুগ্রামের সেক্টর ২৩-এর পালাম বিহারের বাসিন্দা ২৩ বছর বয়সী পল্লবী কৌশিক গত ২৮ আগস্ট সন্ধ্যা ৬ টার দিকে কাছের হুদা বাজারে মুদিখানার দোকানে গিয়েছিলেন প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে। দোকানে ভিড়ের চাপে এক ব্যক্তি সুযোগ বুঝে তার মোবাইলটি তুলে নিয়ে চম্পট দেয়। তবে পল্লবী তার হাতের স্মার্টওয়াচটিতে তার মোবাইলের অবস্থান খুঁজে সেই ছিনতাইকারীর কাছে পৌঁছান এবং মাথায় ঘুষি মেরে তার কাছ থেকে ফোনটি ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। পরে থানায় এফআইআর নথিভুক্ত করেন ওই তরুণী। তবে, অভিযুক্তকে এখনও গ্রেপ্তার করা যায়নি।
দিল্লির একটি ফার্মের সিনিয়র মার্চেন্ডাইজার, পল্লবী কৌশিকের দায়ের করা এফআইআর অনুসারে, দোকানে দাঁড়িয়ে ইউপিআই (UPI)-এর মাধ্যমে বিল পরিশোধ করার সময় এক ব্যক্তি তার কাঁধের ওপর দিয়ে উঁকি মারছিলেন। তারপর মুহূর্তের মধ্যেই তার ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় সে। তরুণী তাকে কিছুদূর ধাওয়া করলেও ছিনতাইকারী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
পুলিশ জানিয়েছে যে, তারপরে পল্লবী তার স্মার্টওয়াচের মাধ্যমে মোবাইল ফোনের অবস্থান ট্র্যাক করার সিদ্ধান্ত নেয়। ফোনটি কাছাকাছি ছিল তা নির্দেশ করার জন্য তার ঘড়িটি সংকেত দিতে থাকে। তিনি প্রায় তিন ঘন্টা সেক্টর ২৩-এর রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে প্রায় রাত ৯ টার দিকে তার মোবাইল ফোনের সঠিক অবস্থান ট্র্যাক করতে সক্ষম হন। লোকটিকে একটি পার্ক করা মোটরসাইকেলে বসে তার মোবাইলটিই ঘাঁটাঘাটি করতে দেখেন পল্লবী। তিনি পিছন থেকে লোকটির কাছে এসে তার মাথায় সজোরে ঘুষি মারেন। ওই ব্যক্তি মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করলে তার হাত থেকে ফোন পড়ে যায়। ফোন ফেলেই চম্পট দেয় ওই ব্যক্তি। পল্লবী তখন তার মোবাইলটি তুলে নিয়ে বাড়ি ফিরে যান। পরের দিন তিনি পালাম বিহার থানায় বিস্তারিত জানিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ছিনতাইকারী ফোনটি নিয়েই ক্ষান্ত হননি, ওই সময়ের মধ্যেই পল্লবীর ইউপিআই পিন ব্যবহার করে তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য একটি অ্যাকাউন্টে ৫০,৮৬৫ টাকা ট্রান্সফার করে। তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৯ (চুরি), ৩৭৯এ (ছিনতাই) এবং ৪২০ (প্রতারণা) ধারার অধীনে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে।