সমুদ্রে পড়ে যাওয়া Apple Watch খুঁজে পাওয়ার পরও সচল, আবার নেটিজেনরা

Avatar

Published on:

Apple Watch drop sea find later in working condition

আজকাল বেশিরভাগ ব্র্যান্ডই তাদের স্মার্টওয়াচগুলি ‘ওয়াটার-রেসিস্ট্যান্ট’ বা জল-প্রতিরোধী হওয়ার দাবি করে। এমনকি দীর্ঘ ৩০ মিনিট পর্যন্ত জলের নীচে ডুবে থাকলেও, এগুলি সক্রিয় থাকবে বলেও প্রচার করা হয়। কিন্তু দেখা যায়, জলে ডুবে থাকা তো দূরের কথা সামান্য জলের ছিঁটে লেগেই বেশিরভাগ স্মার্ট ঘড়ি কাজ করা বন্ধ করে দেয়। টিম কুক পরিচালিত টেক জায়ান্ট অ্যাপল (Apple) -ও তাদের ওয়্যারেবলগুলির সম্পর্কে এই একই দাবি করে এসেছে দীর্ঘ সময় ধরে। যদিও এক্ষেত্রে অন্যান্য ব্যান্ডের ওয়্যারেবলের ন্যায় অ্যাপল ওয়াচ (Apple Watch) আমাদের একদমই নিরাশ করেনি। সাম্প্রতিক একটি ঘটনা এর প্রমাণ। ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিও (Rio de Janeiro) সমুদ্রে ভ্রমণকারী এক ব্যক্তির Apple Watch হাত থেকে খুলে জলে তলিয়ে যায়। যারপর সেই ব্যক্তি তন্নতন্ন করে খুঁজেও তার ওয়্যারেবলটির সন্ধান না পাওয়ায়, ফিরে পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন। কিন্তু মজার বিষয় হল, এই ভ্রমণকারী ‘ফাইন্ড মাই অ্যাপ’ (Find My App) ব্যবহার করে কিছুদিন পর তার অ্যাপল ওয়াচটি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হন, তাও সম্পূর্ণ সচল অবস্থায়।

রোচা (Rocha) নামক এক ব্যক্তির সাথে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক এই ঘটনা আবারো প্রমাণিত করলো যে, অ্যাপলের ওয়াচগুলি হেলথ ট্র্যাকিং ইক্যুইপমেন্ট হিসাবে যেমন দুর্দান্ত তেমনই জলের নিচে দীর্ঘদিন যাবৎ বহাল তবিয়তে সচল থাকতেও সক্ষম – এই দাবি ১০০% সঠিক। আসুন সম্পূর্ণ ঘটনাটি জেনে নেওয়া যাক।

রোচা নামের এক ব্যক্তি ব্রাজিলের বুজিওসে (Buzios) সফর করাকালীন ‘রিও ডি জেনেরিও’ (Rio de Janeiro) সমুদ্রে সাঁতার কাটতে গিয়েছিলেন। আর যেহেতু তার অ্যাপল ওয়াচটি জল-প্রতিরোধে সক্ষম, সেহেতু ঘড়ি পরেই তিনি জলে নেমে যান। কিন্তু ঘড়ির স্ট্র্যাপ ঢিলে থাকায়, সাঁতার কাটতে গিয়ে তার হাতের কব্জি থেকে বেরিয়ে সমুদ্রে তলিয়ে যায়। এরপর রোচা তার ওয়্যারেবলটি আপ্রাণ খোঁজার চেষ্টা করেন, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। ওয়াচটির মালিকের বিবৃতি অনুসারে, ঘড়িটি “ফিরে পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়ে” দিয়েছিলেন তিনি।

কিন্তু এরপরই ঘটে সেই আশ্চর্যজনক ঘটনা। রোচা তার অ্যাপল ওয়াচের লোকেশন সনাক্ত করার জন্য ‘ফাইন্ড মাই অ্যাপ’ ব্যবহার করেছিলেন। কিন্তু ডিভাইসটি ‘ডেড’ বা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কিছুতেই কানেক্ট করা সম্ভব হচ্ছিলো না। কিন্তু তাও তিনি ‘লস্ট মোড’ অন করে নিজের ও ডিভাইস সম্পর্কিত কিছু তথ্য এন্টার করে রাখেন। কিছু সময় পর রোচা ‘ফাইন্ড মাই অ্যাপ’ থেকে নোটিফিকেশন পান যে, তার ওয়্যারেবলটি অ্যাক্টিভ হয়েছে। মজার বিষয় হল, ঘড়িটি ফেরৎ পাওয়ার সময় তিনি জানতে পারেন যে বেশ কয়েক দিন ধরে সেটি জলের নিচে পড়েছিল কিন্তু তা সত্ত্বেও খারাপ হয়ে যায়নি। এই বিষয়ে রোচা জানায় যে – “অ্যাপল ওয়াচে জিপিএস (GPS) রয়েছে এবং এটি জল-প্রতিরোধী তা তো আমি জানতাম। কিন্তু আমার ধারণা ছিল না যে, এর জল প্রতিরোধের ক্ষমতা এতটাই বেশি।”

প্রসঙ্গত রোচার অ্যাপল ওয়াচের উদ্ধারকর্তা ছিলেন ৫০ বছর বয়সী ফিহো (Fiho) নামের এক ব্যক্তি, যিনি পেশায় একজন ডুবুরি এবং একটি কোরাল পার্কের পরিচর্যাকারী। ফিহো সর্বদা হারিয়ে যাওয়া জিনিসপত্র সংগ্রহ করেন এবং যথাঅবস্থায় সেগুলিকে তাদের মালিকদের কাছে ফেরত দিয়ে থাকেন। রোচার হারিয়ে যাওয়া ওয়াচটি পেয়ে এই ডুবুরি তার ১৬ বছর বয়সী মেয়েকে জানান এবং মেয়েটি রোচকে ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে তার অ্যাপল ওয়াচটি খুঁজে পাওয়ার কথা জানায়।

রোচার বিবৃতি অনুসারে – “যে লোকটি অ্যাপল ওয়াচটি খুঁজে পেয়েছে তার মেয়ে আমাকে ইনস্টাগ্রামে টেক্সট করে এবং জিজ্ঞাসা করে যে আমি এই মুহূর্তে বাজিওসে আছি কিনা। কেননা তারা ঘড়িটি খুঁজে পেয়েছে এবং তার বাবা এটি ফেরৎ দিতে চান।”

অন্যদিকে ডুবুরি ফিহো জানান, সমুদ্রের নিচ থেকে যখন অ্যাপল ওয়াচটি খুঁজে পান তিনি আশা করেননি যে সেটি কাজ করবে। কেননা তখন সেটি বন্ধ ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি ওয়্যারেবলটিকে চার্জিংয়ে বসান এবং মালিকের হদিশ পেতে সেটির অ্যাক্টিভ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। অবাক করার বিষয়, “কিছুক্ষন পর অ্যাপল ওয়াচটি চালু হয় এবং ফাইন্ড মাই অ্যাপের মাধ্যমে ডিভাইস মালিকের পাঠানো মেসেজ প্রদর্শিত হয়” বলে জানান ফিহো। তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, “আমি আমার মেয়েকে রিটার্ন প্রক্রিয়াটি পরিচালনা করতে বলেছিলাম, যাতে সেও জীবনে সৎ হওয়ার মাহাত্ম বুঝতে ও শিখতে পারে।”

সঙ্গে থাকুন ➥