আধার কার্ডের অপব্যবহার করলে দিতে হতে পারে ১ কোটি পর্যন্ত জরিমানা, নয়া নিয়ম জারি করল UIDAI
বর্তমানে ভারতের সর্বত্র প্রযোজ্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট হিসেবে আধার কার্ডের (Aadhaar Card) সাথে আমরা সকলেই পরিচিত। ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (UIDAI) কর্তৃক জারি করা এই ১২ সংখ্যার কার্ডে নাগরিকদের নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ, মোবাইল নম্বরের মতো একাধিক ব্যক্তিগত বিবরণের পাশাপাশি বায়োমেট্রিক তথ্যাদিও (আঙুলের ছাপ, আইরিশ স্ক্যান অর্থাৎ চোখের মণির স্ক্যান করা প্রতিচ্ছবি, এবং মুখমণ্ডলের ছবি) মজুত থাকে। বর্তমানে নাবালক ও নবজাতক সহ ভারতের যে-কোনো বাসিন্দাই আধার কার্ডের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন। সোজা ভাষায় বললে বয়স ১ হোক বা ৮০, প্রতিটি ভারতীয় নাগরিকের কাছে পরিচয় এবং ঠিকানার প্রমাণপত্র হিসেবে এই কার্ডটি থাকা একান্ত আবশ্যক।
তবে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার যুগে আধার কার্ড এখন আর কেবল একটি পরিচয়পত্র নয়। আজকের দিনে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা থেকে শুরু করে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নেওয়া, ফোনের সিম কার্ড বা রেশন তোলা, কিংবা গ্যাস সিলিন্ডারে ভর্তুকি - সবেতেই লাগে এই গুরুত্বপূর্ণ নথি। কার্ডধারীর পরিচিতির পাশাপাশি এখন আর্থিক সঞ্চয়ের সঙ্গেও যুক্ত এই কার্ড। আর তাই গ্রাহকদেরকে প্রতারিত করার জন্য এই আধার কার্ডকে অপব্যবহার করার লক্ষ্যে ইদানিংকালে ব্যাপকভাবে জাল বিস্তার করেছে হ্যাকাররা।
আসলে দেশে এখন উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে ডিজিটানাইজেশনের গ্রাফ। তবে দুর্ভাগ্যবশত গত কয়েক বছরে এই ডিজিটানাইজেশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অতি দ্রুত হারে সাইবার অপরাধের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। আর এই জাতীয় অপরাধে আধার কার্ডের অপব্যবহারও বহুবার করা হয়েছে। তাই এমত পরিস্থিতিতে আধার কার্ডকে সুরক্ষিত রাখতে এবং এর অপব্যবহার রুখতে আধার সংক্রান্ত কিছু নিয়মে পরিবর্তন করেছে UIDAI।
এক্ষেত্রে আধার কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে যে, কোনোভাবে আধার কার্ডের অপব্যবহার করলে কিংবা আধার কার্ডের ব্যবহার সংক্রান্ত বিধিনিষেধ ও নিয়মাবলী লঙ্ঘন করলে অপরাধীকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হতে পারে। ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে নোটিশ জারি করা হয়েছে এবং এই জরিমানার টাকা UIDAI-এর তহবিলে জমা হবে বলেও সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, আধার কার্ডের গোপনীয়তা সম্পূর্ণভাবে রক্ষা করার জন্য সরকার গত ২ নভেম্বর আধার কার্ডের নিয়মাবলী সংক্রান্ত UIDAI বিধিমালা, ২০২১ চালু করেছে, যার অধীনে সংস্থাটি আধার কার্ডের কোনোরকম অননুমোদিত অ্যাক্সেস, কিংবা আইন বা UIDAI-এর নির্দেশাবলী লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে এই জরিমানা আরোপ করতে পারে। সংস্থা কর্তৃক নিযুক্ত অ্যাডজাস্টিকেটিং অফিসার এই জাতীয় মামলাগুলির নিষ্পত্তি করবেন। শুধু তাই নয়, UIDAI, ভুয়ো ডেমোগ্রাফিক বা বায়োমেট্রিক তথ্যের অপব্যবহার বা এর জাল অনুলিপি তৈরি করার জন্য ১০,০০০ টাকা জরিমানা এবং তিন বছর কারাদন্ডে দন্ডিত করবে বলেও জানিয়েছে।