BSNL এবং MTNL কে বন্ধ করার ইচ্ছা নেই সরকারের : টেলিকম প্রতিমন্ত্রী সঞ্জয় ধোত্রে
বিগত কয়েক বছর ধরেই আর্থিক অনটনে ভুগছে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থা BSNL (ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেড) এবং MTNL (মহানগর টেলিফোন নিগম)। পরিষেবার নিরিখেও ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে এই দুই টেলিকম অপারেটরই, কমছে গ্রাহকবেসও। সেক্ষেত্রে গত ২০১৯ সাল থেকে শোনা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক আর এই দুই সংস্থাকে আর্থিক সাহায্য দিতে চাইছেনা, এমনকি দুটি সংস্থাকেই নাকি বন্ধ করে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। তবে বেশ খানিকটা সময় কেটে গেলেও BSNL বা MTNL-এর বিরুদ্ধে কোনো নেতিবাচক পদক্ষেপ নেয়নি ভারত সরকার। সেক্ষেত্রে আজ বুধবার, টেলিকম প্রতিমন্ত্রী সঞ্জয় ধোত্রে লোকসভায় স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, লোকসানের ওপর চলা এই পাবলিক সেক্টরদুটিকে বন্ধ করে দেওয়ার মত সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই। ফলে গতানুগতিক ছন্দেই চালু থাকবে BSNL এবং MTNL।
ধোত্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ সালে বিএসএনএল (BSNL) এবং MTNL (এমটিএনএল)-এর যথাক্রমে ১৪,৯০৪ কোটি টাকা এবং ৩,৮১১ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। অন্যদিকে, ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে বিএসএনএলের ক্ষতি বেড়ে হয়েছে ১৫,৫০০ কোটি টাকা, যেখানে এমটিএনএলের ক্ষতির পরিমান ৩,৯৯৮ কোটি টাকা। এরপরও সরকার, এই দুটি সংস্থাকে বন্ধ করার কথা ভাবছে না। বরঞ্চ দুটি সংস্থার জন্যই সোভেরিয়ান গ্যারান্টি বাবদ ৮,৫০০ কোটি টাকা (বিএসএনএলের ক্ষেত্রে) এবং ৬,৫০০ কোটি টাকা (এমটিএনএলের জন্য) বরাদ্দ করছে সরকার।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের অক্টোবরে কেন্দ্র এই দুই সংস্থার জন্য ৬৯,০০০ কোটি টাকার 'রিভাইভাল প্যাকেজ' ঘোষণা করেছিল। এই প্রকল্পের আওতায়, ৫০ বছর বা তার বেশি বয়সের কর্মীদের ভলেন্টারি রিটায়ারমেন্ট প্ল্যান (VRS)-এর মাধ্যমে কর্মচারীদের জন্য খরচ কমানো, 4G পরিষেবা চালু করার জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো পুনর্গঠনের করার বাজেট বরাদ্দ ইত্যাদি সুবিধা দেওয়া হয়। তাছাড়াও এই রিভাইভাল প্যাকেজের মাধ্যমে উক্ত দুই সংস্থার কর্মীদের জন্য রিটায়ারিং ডেবিট, ক্যাপিটাল এক্সপেন্ডেচার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয়তা মেটায় সরকার।
এই প্রসঙ্গে একটি প্রশ্নের জবাবে ধোত্রে বলেছেন যে, ইতিমধ্যে বিএসএনএলের ৭৮,৫৬৯ জন এবং এমটিএনএলের ১৪,৩৮৭ কর্মচারী ভিআরএস সুবিধাটি বেছে নিয়েছেন, যার ফলে বিএসএনএল এবং এমটিএনএলের বেতন ব্যয় যথাক্রমে ৫০ শতাংশ এবং ৭৫ শতাংশের কাছাকাছি হ্রাস পেয়েছে। সেক্ষেত্রে সরকার, ভিআরএস তহবিলের প্রয়োজন মেটাতে ১৬,২০৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে, যার মধ্যে বিএসএনএল ও এমটিএনএলকে ১৪,৮৯০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, ২০২০ সালের ২১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত সংস্থাদুটির কর্মচারীদের ইনক্রিমেন্টাল পেনশনের জন্য সরকার ১,৯৫২ কোটি টাকা ব্যয় করেছে বলেও জানান ধোত্রে।