প্রকাশ্যে আসতে না আসতেই অ্যান্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্মের জন্য একরাশ লজ্জা নিয়ে হাজির অ্যাপলের (Apple) নতুন আইফোন ১৩ (iPhone 13) সিরিজ! ঠিকই পড়ছেন। লজ্জাই বটে। প্রতিবছর নতুন ডিভাইস লঞ্চের ক্ষেত্রে কিভাবে তার গুণগত মান আরো বাড়িয়ে তোলা যায় অ্যাপলের কাছে সেটা রীতিমতো শিক্ষনীয়। অন্তত অ্যান্ড্রয়েড নির্মাতারা যে এদিক দিয়ে আমেরিকা-ভিত্তিক সংস্থাটির থেকে অনেক অনেক পিছিয়ে আছেন সেটা আরো একবার স্পষ্ট হয়ে গেলো। আসলে সম্প্রতি ডিএইচএইচ (DHH) তাদের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করেছে। সেখানে এই সময়ের অন্যতম সেরা অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের তুলনায় iPhone 13 সম্পূর্ণ তিন গুণ বা ২০০ শতাংশ দ্রুততর পারফরম্যান্স নজির তৈরী করেছে! পরিসংখ্যানটি সামনে আসতেই অ্যান্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্মের সদস্যেরা মাথা নত করতে বাধ্য হয়েছেন।
গতির পরীক্ষায় অবতীর্ণ iPhone 13 এবং Samsung S21
উপরে অ্যান্ড্রয়েড ঘরানার যে ডিভাইসের কথা আমরা বলতে চেয়েছি তা স্যামসাংয়ের অন্যতম সেরা ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোন স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২১ (Samsung Galaxy S21)। পারফরম্যান্সের বিচারে এই ফোনটিকে iPhone 13 সদ্য একাধিক গোল দিয়েছে! একটি ওয়েব ব্রাউজারের মাধ্যমে চালানো গতির পরীক্ষায় উঠে আসা তথ্য থেকে জানা গিয়েছে যে Samsung Galaxy S21 ডিভাইসের তুলনায় Apple iPhone 13 তিন গুণ বেশী দ্রুত কাজ করতে সক্ষম। এক্ষেত্রে অ্যাপলের স্মার্টফোনে উপস্থিত এ১৫ বায়োনিক চিপসেট (A15 Bionic Chipset) এটিকে অপর ডিভাইসের তুলনায় অনেকটা এগিয়ে দিয়েছে।
মূলত ইন্টারনেট ব্রাউজিং এবং জাভাস্ক্রিপ্ট রেন্ডারিংয়ের ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে দেখা গেছে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮৮৮ (Qualcomm Snapdragon 888) প্রসেসর দ্বারা Samsung Galaxy S21 ডিভাইসের তুলনায় Apple iPhone 13 উন্নত পারফরম্যান্স প্রদানে সমর্থ। তাই গতির পরীক্ষায় iPhone 13 মোট ২৩৮ পয়েন্ট পেয়ে অনেক এগিয়ে থাকলেও, Samsung Galaxy S21 ডিভাইসের প্রাপ্ত পয়েন্ট মাত্র ৮৪, যা অ্যাপলের তুলনায় প্রায় তিন গুণ কম!
উল্লেখ্য, ভারতে প্রাপ্ত Samsung Galaxy S21 এক্সিনোস (Exynos) প্রসেসরের সাথে এসেছে। স্ন্যাপড্রাগন ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় এটি আরও পিছিয়ে। তাই অ্যাপলের সদ্য আগত ডিভাইসের সঙ্গে পরীক্ষায় অবতীর্ণ হলে এর ফলাফল যে আরো লজ্জাজনক হতো, তা বলে দেওয়ার অপেক্ষা রাখেনা!
অর্থাৎ উপরের পরিসংখ্যান থেকে এটা খুব ভালোভাবেই বোঝা যাচ্ছে যে প্রতিবছর নতুন স্মার্টফোন উৎপাদনের সময় অ্যাপল পণ্যের কোয়ালিটি বা গুণগত মানের সঙ্গে কোনো আপস করে না। কিন্তু অ্যান্ড্রয়েড নির্মাতারা বোধহয় তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে নতুন করে শিখতে আগ্রহী নন! তাই পারফরম্যান্সের বিচারে আবার তাদের এমনভাবে নাকাল হতে হলো।